কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলাস্থল ও আশপাশ এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট সন্দেহভাজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার সকালে হামলার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে অবস্থান নেয়। এদিকে ঘটনাস্থলে নিহত এক হামলাকারীর পরিচয় এখেনা জানা যায়নি।
ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান গতকাল হামলাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হামলাকারী বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। তাঁর পোশাকের মধ্যে চাপাতি–জাতীয় অস্ত্র লুকানোর বিশেষ চেম্বার ছিল। তিনি আরও বলেন, কড়া নিরাপত্তার কারণেই হামলাকারীরা শোলাকিয়ার ঈদের জামাতের মাঠে হামলা চালাতে পারেনি। বাইরেই হামলা চালিয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন সন্দেহভাজন হামলাকারী। ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বিশেষ নিরাপত্তার কারণে হামলাস্থলে এখনো পুলিশ রয়েছে। হামলার সময় গুলিতে নিহত ঝর্ণা রানী ভৌমিকের বাড়িটিও পুলিশ ঘিরে রেখেছে।
বৃহস্পতিবার হামলায় আহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩। তাঁরা হলেন হোসেনপুর উপজেলার হুগলাকান্দি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হৃদয় (১৮), শহরের হারুয়া এলাকায় মাহতাব উদ্দিনের ছেলে মোতাহার (২২), টেংরা বাজারের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আবদুর রহিম (৪০), পুলিশ সদস্য জুয়েল (৩৫), রফিকুল (৩০), নয়ন মিয়া (৩০), তুষার আহম্মদ (৩০), প্রশান্ত (৩২), মতিউর (৩২) ও এমদাদুল হক (২৫)। বাকিদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য ও একজন পথচারী, তবে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঈদের দিন সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে আজিমউদ্দীন স্কুলের কাছে টহলরত পুলিশের ওপর বিস্ফোরণ ও গুলি ছুড়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় কয়েকজনকে চাপাতি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছেন এলাকাবাসী। তারা চাপাতি দিয়ে পুলিশের ওপরও হামলা চালায়। এতে ঈদের জামাতের মাঠে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদের অনুপস্থিতিতে নামাজ-খুতবা ও দোয়া শেষ করেন হাফেজ মাওলানা সোয়াইব আবদুর রউফ। হামলায় দুই পুলিশসহ চারজন নিহত হন।