প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যতটা কঠোর হওয়া দরকার, তার সরকার তাই হবে।
রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ এসব বিভাগের প্রধানরা তাদের চুক্তিপত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
এ সময় শেখ হাসিনা সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
দেশবাসীর মধ্যে জঙ্গিবাদ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারের যা করণীয় তা সরকার করবেই।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের যারা সমালোচনা করছেন, তাদের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ আছে কি না সে বিষয়ে আশংকা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করে একটি গোষ্ঠী দেশ ও ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাচ্ছে। তারা ধর্ম রক্ষা করতে যাচ্ছে মানুষ খুন করে। আর খুন (করছে) একই ধর্মের লোক। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি সেটাকে নষ্ট করার একটা চেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের পত্রিকায় এ ধরনের কিছু উল্টা-পাল্টা (লেখা) পড়ে দেখলাম। তারা কী উদ্দেশ্যে এটা লিখছে? বা তাদের সঙ্গে এদের কোনো, জঙ্গিদের যোগাযোগ আছে কি না। এটাও খুঁজতে হবে যে, এদের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ আছে কি না।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা শুরু করেছি। এগুলো করে কেউ যদি মনে করে এটাও বন্ধ হবে। সেটা কিন্তু বন্ধ হবে না। আমরা বিচারের দিক থেকে অনেক বেশি উদার মনোভাব দেখিয়েছি। যদি এ নিয়ে আরও বেশি বাড়াবাড়ি হয়, তাহলে আমাদের শর্টকাট রাস্তা খুঁজতে হবে। যুদ্ধাপরাধীরা সব চেনা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যেটা দরকার যে প্রত্যেকটা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে কোথায় কোন ছাত্ররা কতদিন অ্যাবসেন্ট (অনুপস্থিত) তার একটা রিপোর্ট বের করা, তালিকা বের করা এবং নাম, ছবি সেগুলো নিয়ে আসা এবং সেটা প্রকাশ করা। শিক্ষকরা যারা তাদের ভেতরেও কারা আছে যারা এদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে-সেগুলো খুঁজে বের করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘অভিভাবকদের প্রতি আমার এটাই অনুরোধ থাকবে- অভিভাবকরা যেন খুঁজে বের করেন যে, তাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় গেল।’
ঢাকার গুলশান এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার হামলা ঠেকাতে সরকারের যেসব বাহিনী কাজ করেছে তাদের ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গিবাদের লাগাম টানতে এখন সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমেরিকাতেও কিছুদিন আগে একই ঘটনা ঘটল। এখন দেখা যাচ্ছে যারা এসব তৈরি করেছিল, তারাই এখন লাগাম টানতে চাইছে।’
শোলাকিয়ার হামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শোলাকিয়া নিয়ে আগেই আমি সতর্ক করেছিলাম- এটা দেশের সব থেকে বড় জামাত। সেখানে হামলা হতে পারে। সেখানেও ২ পুলিশ মারা যায়। কারা এর পেছনে ছিল সেটাও গোয়েন্দা সংস্থা বের করে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি অবাক হলাম, এরা কোন ধরনের মুসলমান যে, এশার নামাজের পর তারাবি না পড়ে গেল মানুষ খুন করতে। ঈদের দিন নামাজ না পড়ে নামাজ যারা পড়ছে তাদের ওপর হামলা করতে গেল।’