ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইএসের টার্গেট এবার শিলিগুড়ি

ঢাকার গুলশানের পরে ইসলামিক স্টেট তথা আইএসের আক্রমণের লক্ষ্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিংয়ের একটি শহর শিলিগুড়ি৷ ভারতীয় সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুর (আইবি) এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকার এবং শিলিগুড়ি কমিশনারেটকে৷ শিলিগুড়িতে হামলার ছক কষা এই জঙ্গিরা ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে তাদের ডেরা বেঁধে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে আইবি৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার পরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে শিলিগুড়ি জুড়ে৷ খবর এই সময়ের।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গুলশানের হোলে আর্টিজান রেস্তোরাঁয় নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানো নিহত নিব্রাস ইসলাম, রোহন ইমতিয়াজদের মত আইএস জঙ্গিদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের মধ্যে অন্তত ৪ জন জঙ্গি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে৷ সরাসরি আইবি’র পক্ষ থেকে দেওয়া ‘অ্যালার্ট’-এর কথা স্বীকার না করলেও, শহর জুড়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের কথা স্বীকার করেছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি এস লেপচা৷ জানিয়েছেন, ‘সারা বছরই আমরা সতর্ক থাকি৷ ঢাকার ঘটনার পরে আমরা সতর্কতা দ্বিগুণ করেছি৷ সেই মত তল্লাশি অভিযানও চলছে৷

‘রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, শিলিগুড়িতে ঢোকা এবং বেরোনোর সব কটি পথে দিনরাত নজর রাখা হচ্ছে৷ এছাড়াও নজরে রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, হোটেল, সিনেমা হল, শপিং কমপ্লেক্সসহ সব কয়টি জনবহুল এলাকা৷ সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে শহরে নতুন আসা বিদেশিদের উপর৷ এর পাশাপাশি শহরের সব কটি পাড়ায় নতুন আসা ভাড়াটেদের উপরে নজর রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে৷ শিলিগুড়ি কমিশনারেটের অন্তর্গত পাঁচটি থানা এলাকায় যে সমস্ত ভাড়াটে দীর্ঘদিন তাঁদের ভাড়া বাড়িতে থাকেন না, অথচ নিয়মিত বাড়িওয়ালাকে বকেয়া ভাড়ার টাকা গুণে দেন সময় মত, তাদের রেকর্ডও খতিয়ে দেখবে পুলিশ৷

আইবি সূত্রে জানা যাচ্ছে, গুলশনের ঘটনার পরে ঢাকা থেকে পালাতে মরিয়া ছিল বেশ কয়েকজন জঙ্গি৷ তারা যে কোন উপায়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকার উপায় খুঁজছিল৷ ভারত-বাংলাদেশ সংলগ্ন অাসাম সীমান্ত দিয়ে তাদের ৪ জন ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে, অাসাম পুলিশের কাছ থেকে এমন খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা৷ ওই জঙ্গিরা এখন পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে, গত কয়েকদিন ধরে এমন আশঙ্কা করছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা৷ বাংলাদেশের এই পলাতক জঙ্গিদের মাতৃভাষা যেহেতু বাংলা, স্বভাবতই তারা অাসামের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকতে অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে, এমনটাই মনে করছেন তারা৷ রাজ্য পুলিশকে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে৷ এদের সন্ধানে ইতিমধ্যেই জোর তল্লাশিও শুরু হয়েছে৷

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থেই যে জঙ্গিরা ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করবে, তা জানেন তুখোড় গোয়েন্দারা৷ কিন্তু তাদের সনাক্ত করার মত কোন নির্দিষ্ট সূত্র এই মুহূর্তে গোয়েন্দাদের হাতে নেই৷ যে চার জন জঙ্গি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে তারা গুলশানের জঙ্গিদের ‘সাপ্লাই লাইন’ হিসেবে কাজ করে থাকতে পারেন বলে অনুমান করছেন ভারতের গোয়েন্দারা৷ গুলশানের মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নয় বাংলাদেশ সরকার৷ এর আগে বাংলাদেশে আইএস -এর আস্তানার কথা মানতে চায়নি বর্তমান সরকার৷ পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার অবশ্য সুর পাল্টেছে৷ আইএস তত্ত্বকে সরাসরি প্রত্যাখ্যানের রাস্তা থেকে সরে এসেছে৷ এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গে নাশকতার সম্ভাবনা জাগানো সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সন্ধানে দিন রাত এক করে ফেলছেন ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷

সূত্র: এই সময়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

আইএসের টার্গেট এবার শিলিগুড়ি

আপডেট টাইম : ১২:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জুলাই ২০১৬

ঢাকার গুলশানের পরে ইসলামিক স্টেট তথা আইএসের আক্রমণের লক্ষ্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিংয়ের একটি শহর শিলিগুড়ি৷ ভারতীয় সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুর (আইবি) এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকার এবং শিলিগুড়ি কমিশনারেটকে৷ শিলিগুড়িতে হামলার ছক কষা এই জঙ্গিরা ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে তাদের ডেরা বেঁধে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে আইবি৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার পরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে শিলিগুড়ি জুড়ে৷ খবর এই সময়ের।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গুলশানের হোলে আর্টিজান রেস্তোরাঁয় নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানো নিহত নিব্রাস ইসলাম, রোহন ইমতিয়াজদের মত আইএস জঙ্গিদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের মধ্যে অন্তত ৪ জন জঙ্গি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে৷ সরাসরি আইবি’র পক্ষ থেকে দেওয়া ‘অ্যালার্ট’-এর কথা স্বীকার না করলেও, শহর জুড়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের কথা স্বীকার করেছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি এস লেপচা৷ জানিয়েছেন, ‘সারা বছরই আমরা সতর্ক থাকি৷ ঢাকার ঘটনার পরে আমরা সতর্কতা দ্বিগুণ করেছি৷ সেই মত তল্লাশি অভিযানও চলছে৷

‘রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, শিলিগুড়িতে ঢোকা এবং বেরোনোর সব কটি পথে দিনরাত নজর রাখা হচ্ছে৷ এছাড়াও নজরে রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, হোটেল, সিনেমা হল, শপিং কমপ্লেক্সসহ সব কয়টি জনবহুল এলাকা৷ সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে শহরে নতুন আসা বিদেশিদের উপর৷ এর পাশাপাশি শহরের সব কটি পাড়ায় নতুন আসা ভাড়াটেদের উপরে নজর রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে৷ শিলিগুড়ি কমিশনারেটের অন্তর্গত পাঁচটি থানা এলাকায় যে সমস্ত ভাড়াটে দীর্ঘদিন তাঁদের ভাড়া বাড়িতে থাকেন না, অথচ নিয়মিত বাড়িওয়ালাকে বকেয়া ভাড়ার টাকা গুণে দেন সময় মত, তাদের রেকর্ডও খতিয়ে দেখবে পুলিশ৷

আইবি সূত্রে জানা যাচ্ছে, গুলশনের ঘটনার পরে ঢাকা থেকে পালাতে মরিয়া ছিল বেশ কয়েকজন জঙ্গি৷ তারা যে কোন উপায়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকার উপায় খুঁজছিল৷ ভারত-বাংলাদেশ সংলগ্ন অাসাম সীমান্ত দিয়ে তাদের ৪ জন ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে, অাসাম পুলিশের কাছ থেকে এমন খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা৷ ওই জঙ্গিরা এখন পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে, গত কয়েকদিন ধরে এমন আশঙ্কা করছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা৷ বাংলাদেশের এই পলাতক জঙ্গিদের মাতৃভাষা যেহেতু বাংলা, স্বভাবতই তারা অাসামের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকতে অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে, এমনটাই মনে করছেন তারা৷ রাজ্য পুলিশকে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে৷ এদের সন্ধানে ইতিমধ্যেই জোর তল্লাশিও শুরু হয়েছে৷

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থেই যে জঙ্গিরা ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করবে, তা জানেন তুখোড় গোয়েন্দারা৷ কিন্তু তাদের সনাক্ত করার মত কোন নির্দিষ্ট সূত্র এই মুহূর্তে গোয়েন্দাদের হাতে নেই৷ যে চার জন জঙ্গি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে তারা গুলশানের জঙ্গিদের ‘সাপ্লাই লাইন’ হিসেবে কাজ করে থাকতে পারেন বলে অনুমান করছেন ভারতের গোয়েন্দারা৷ গুলশানের মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নয় বাংলাদেশ সরকার৷ এর আগে বাংলাদেশে আইএস -এর আস্তানার কথা মানতে চায়নি বর্তমান সরকার৷ পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার অবশ্য সুর পাল্টেছে৷ আইএস তত্ত্বকে সরাসরি প্রত্যাখ্যানের রাস্তা থেকে সরে এসেছে৷ এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গে নাশকতার সম্ভাবনা জাগানো সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সন্ধানে দিন রাত এক করে ফেলছেন ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷

সূত্র: এই সময়।