তেলাপোকার বংশ, মাত্র ৩ দিনে করুন ধ্বংস

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমাকে প্রায় সকলেই বলেন- ‘এত কিছু ব্যবহার করলাম, কিন্তু তেলাপোকা আর যায় না!’ কেন যায় না জানেন? কারণ , পণ্যগুলো কেবল ব্যবহার করলেই হবে না। ব্যবহার করুন সঠিক ভাবে। পোকামাকড় দূর করার সমস্ত পণ্যই তৈরি করা হয় সেগুলোকে ধ্বংস করার জন্যই। প্রাথমিক ভাবে পোকামাকড় মরেও বটে, কিন্তু আবারও ফিরে আসে কেবলই আমাদের ভুল প্রয়োগ পদ্ধতির জন্য। চলুন, আজ আমি আপনাদের জানাবো যে কীভাবে আমি নিজে ৩ দিনে আমার বাড়ির সমস্ত তেলাপোকা নির্বংশ করেছি।
তেলাপোকা কোথায় থাকে বা কেন হয়?
উত্তরটি হচ্ছে, তেলাপোকা থাকে ঘরের সমস্ত অন্ধকার স্থানে এবং ময়লা-আবর্জনায় এদের বংশ বিস্তার হয়। কিচেন কেবিনেট, আলমারি, খাটের নিচ, সিলিং স্টোরেজ, পুরানো সুটকেস, রান্নাঘর ইত্যাদি হচ্ছে এদের আবাস স্থল। আর তাই, এসব স্থান পরিষ্কার না করা পর্যন্ত কোনভাবেই আশা করবেন না যে তেলাপোকার বংস ধ্বংস হয়ে যাবে। কিছুদিন ওষুধ দিলে কম থাকবে,তারপর আবারও হবে। আর তাই এই ধংসের কাজটা করতে হবে খুবই পরিকল্পনা মাফিক। ৩ দিন কষ্ট করলে একটা বিরাট যন্ত্রণা থেকে অনেকদিনের জন্য মুক্তি পাবেন।
কী লাগবে?
সত্যি বলতে কি, লাগবে ধৈর্য ধৈর্য এবং ধৈর্য। আর এর সাথে আপনি ব্যবহার করে অভ্যস্ত এমন তেলাপোকা নাশক পণ্য। আমি এক্ষেত্রে ব্যবহার করেছি ফিনিশ পাউডার ও হিট স্প্রে (লালটা)। একই সাথে তেলাপোকা মারার চক ও কিছু ন্যাপথালিন।
আমি যা করেছি
১) প্রথমেই হাত দিয়েছি রান্নাঘরে। খাবারের সোর্স খুব কাছে বলে রান্নাঘর তেলাপোকাদের প্রিয় স্থান। প্রথমেই পরিষ্কার করে ফেলছি কিচেন কেবিনেট। বিশ্বাস করুন, এখানেই তেলাপোকা তাঁদের প্রথম ঘাঁটি বানায়। কিচেন কেবিনেটের সমস্ত পণ্য নামিয়ে ভেতরে ছড়িয়ে দিয়েছি ফিনিশ গুঁড়ো, স্প্রে করেছি হিট স্প্রে। তারপর তাড়াতাড়ি কেবিনেটের দরজা বন্ধ করে সমস্ত ফাঁক ফোকর দ্রুত সিল করে দিয়েছি মোটা স্কচ টেপ দিয়ে। অন্যথায় কোন লাভ হবে না, ভেতরের তেলাপোকা সব বাইরে চলে আসবে ও ঘরের অন্য জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিবে। কেবিনেটের পর সম্পূর্ণ রান্নাঘর পরিষ্কার করে নিয়েছি সমস্ত থালাবাসন ও খাবার বের করে রেখে। এবং রান্না ঘরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিয়েছি ফিনিশ। বিশেষ করে রান্নাঘরে ব্যবহৃত আসবাব গুলোর নিচে ও কিনারায়। বেসিনের পাইপের মাঝে ফিনিশ স্প্রে করে দিয়েছি (এখানে প্রচুর তেলাপোকা থাকে)। সবশেষে বন্ধ করে দিয়েছি রান্নাঘরের দরজা। চারপাশে দিয়ে দিয়েছি চকের দাগ যেন যতটা সম্ভব কম তেলাপোকা বাইরে আসে।
২) এরপর বাড়ির বাকি ঘরে অন্যান্য তেলাপোকার আবাসস্থলগুলো পরিষ্কার করেছি। প্রত্যেকটি স্থানেই প্রয়োজন অনুসারে ফিনিশ গুঁড়ো, স্প্রে, তেলাপোকার চক ইত্যাদি ব্যবহার করেছি। জি, সমস্ত স্থানেই একদিনে অভিযান করা জরুরী। নতুবা তেলাপোকা এক স্থান হতে বিতারিত হয়ে অন্যান্য স্থানে জায়গা নেবে। তাই ব্যবস্থা এমন করতে হবে যে কথাও আশ্রয় না মেলে।
৩) এভাবেই রেখে দিয়েছি পরের দিন পর্যন্ত। পরের দিন সমস্ত স্থান এক এক করে পরিষ্কার করতে গিয়ে হতভম্ব হয়ে যাবেন আপনি। কারণ প্রচুর মরা তেলাপোকা মিলবে। তবে এতে খুশি হবেন না, কারণ আরও অনেক তেলাপোকা আসলে লুকিয়ে আছে আপনার ঘরে এখনও। বিশেষ করে রান্নাঘরে। আর তাই যেসব স্থানে তেলাপোকার উপস্থিতি এখনও সন্দেহ করছেন, সেসব স্থানে আবারও একই পদ্ধতি প্রয়োগ করুন বিগত দিনের মতন। আগের দিন যেসব জায়গা বাদ পড়েছে, সেখানেও। বিশেষ করে রান্নাঘরে অবশ্যই।
৪) তৃতীয়দিন সমস্ত কিছু পরিষ্কার করে নিন ও স্বাভাবিক নিয়মে ব্যবহার্য সবকিছু গুছিয়ে নিন। তবে হ্যাঁ, কিচেন কেবিনেটের চারপাশে ও এমন সকল স্থানে আমি দিয়েছি তেলাপোকার চকের দাগ। যেন কিছুতেই আবার নতুন তেলাপোকা প্রবেশ করে ঘাঁটি করতে না পারে।ভালো করে ঘরদোর পরিষ্কার করুন, হিট স্প্রে করুন সব কামরার আনাচে কানাচে। ৪/৫ ঘণ্টা পর আবারও পরিষ্কার করুন। এবার যদি আর তেলাপোকা না মেলে, জানবেন যে তেলাপোকার বংশ প্রাথমিক ভাবে দূর হয়েছে।
এরপর কী করতে হবে?
হ্যাঁ, সব তেলাপোকা মেরে তো ফেললেন, এখন এটা মেইনটেইনকরাটা সবচাইতে জরুরী।
-নিয়মিত ভাবে চকের দাগ নতুন করে দিতে হবে। আমি রোজ দিচ্ছি।
-রোজ রাতে রান্নাঘরের বেসিনের পাইপের মাঝে হিট স্প্রে করুন (এই স্প্রেতে চিকন একটা নজল থাকে)।
– ঘরের কোন অন্ধকার স্থানে যেন কিচ্ছু জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
– ফিনিশ লিকুইড পানির সাথে মিশিয়ে নিয়মিত ঘর মুছলেও তেলাপোকা হতে অনেক দূর থাকা যাবে। সেক্ষেত্রে ঘর মোছার সময় অবশ্যই গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।
অনেক বড় লেখা হয়ে গেলো, তাই না? কিন্তু কারো যদি কাজে এসে থাকে, তাহলে নিজেদের অভিজ্ঞতা কমেন্ট আকারে আমাদের জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!
আরও টিপস জানতে পড়ুন আজকের প্রিয় টিপস কাপড় হতে ইস্ত্রির পোড়া দাগ মুছে ফেলুন খুব সহজে

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর