বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মহামারি করোনায় ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা এলে ঘরবন্ধি জীবন শুরু হয় শিক্ষার্থীদের। অনেকে বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন কোর্স, অনলাইন ব্যবসা, অনেকে ঘুরে, আবার কেউ শুয়ে-বসে পার করছে করোনার ছুটি। কিন্তু এই অবসর সময়ে একদিন চার বন্ধু আড্ডায় বসে সিদ্ধান্ত নেয় ক্যাপসিকাম চাষ করবে।
এই বিদেশি সবজিকে কৃষকের মধ্যে পরিচিত করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মোরশেদুল আলম লোটাস তার বন্ধুদের নিয়ে শুরু করেন এর চাষ। পেয়েছেন সফলতাও। মাঠে ফলেছে তাদের কাঙ্ক্ষিত সবজি। লোটাসের সঙ্গে কথা বলে তাদের সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন তানিউল করিম জীম।
কীভাবে ক্যাপসিকাম চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়?
করোনার বন্ধ শুরু হলে আমরা স্কুলের বন্ধু, যারা দেশের বিভিন্ন সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি, সবাই আবার দীর্ঘ সময় পর এক হই। একসঙ্গে আড্ডাবাজি করতাম। পরে যখন বন্ধের সময়টা দীর্ঘায়িত হলো—কেউ টিউশনি, কেউ ফ্রিল্যান্সিং করতে শুরু করে। এ সময় আমার বন্ধু মাহাদী হাসান (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি), মেহেদী হাসান শাকিল (বিবিএ, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি), আমি লোটাস এবং আমার আরেক বন্ধু মাশরাফি ইমরানের (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং, ঢাকা ইউনিভার্সিটি) সামনে এই ক্যাপসিকাম চাষের ব্যাপারটি উপস্থাপন করল। মেহেদী ব্যাপারটি ইউটিউবের মাধ্যমে দেখেছিল। কারণ বহির্বিশ্বে গ্রিনহাউজ ছাড়াও খোলা মাঠে ক্যাপসিকামের বাণিজ্যিক উত্পাদন করা হয়। তারপর আমরা ক্যাপসিকাম চাষ নিয়ে আরো অনুসন্ধান করে মনোবল বাড়ালাম।
বীজ সংগ্রহ ও জমি চাষ :
আমার বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলায়। এখানকার কৃষকেরা যেহেতু এই ফসলের সঙ্গে একদমই পরিচিত ছিলেন না, তাই আমরা প্রথমত বীজের ডিলারদের সঙ্গে বীজ নেওয়ার জন্য কথা বলি। একদম ভালো জাতের বীজ এনে দেওয়ার ব্যাপারে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেন। আমরা তাদের মাধ্যমে ঢাকা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভালো সবুজ ক্যাপসিকামের বীজ সংগ্রহ করি। অতঃপর বীজতলা করে আমরা দীর্ঘ এক মাস পর জমিতে রোপণের উপযোগী চারা পাই। প্রথমত ট্রাক্টর দিয়ে ১৭ শতাংশ জমি চাষ করি। এক বড় ভাইয়ের (বিপ্লব) সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়েছিল। তিনি কৃষি নিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হওয়ায় তার সহায়তায় এই অল্প জমিতে সারের পরিমাণ জানতে পারি।
ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী?
অদূর ভবিষ্যতে আমরা আরো নতুন প্রজেক্ট নিয়ে ফিরব ইনশাআল্লাহ। আমাদের বৈদেশিক আরো অনেকগুলো ফসল নিয়ে চিন্তাভাবনা আছে। সেই সব আধুনিকতার ছোঁয়া আমরা আমাদের লোকাল কৃষির আদলে আনার পরিকল্পনা প্রতিনিয়ত করে চলেছি। এছাড়া দেশীয় অনেক কৃষিবিষয়ক বিজনেস আইডিয়া নিয়ে কাজ করছি।