বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মহাভারতের দ্রোপদীর কথা মনে আছে? মা কুন্তীর এক কথায় তার পাঁচ ছেলে যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব বিয়ে করেছিলেন দ্রোপদীকে। পাঁচ স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছিলেন দ্রোপদী। কিন্তু শুনলে হয়তো অবাক হবেন মহাভারতের পাতাতেই এক বউয়ের পাঁচ স্বামীর গল্প শেষ হয়ে যায়নি। আজও হিমালয়ের কোলঘেঁষে নেপালের প্রত্যন্ত গ্রামে এক উপজাতির মধ্যে চালু রয়েছে এই প্রথা।
আধুনিক মানুষের কাছে অবাক করা বিষয় হলেও সেটাই ওই গ্রামের ঐহিত্য। মাতৃপ্রধান ওই উপজাতিদের মধ্যে একজন নারীই একাধিক পুরুষের পাণিগ্রহণ করেন।
রাজধানী কাটমান্ডু থেকে প্রায় পাঁচশ’ কিলোমিটার দূরের ওই গ্রামের সহজসরল মানুষগুলোকে টিকে থাকতে হয় প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে।
ওই প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা রজ্জো ভার্মা নামের এক নারী। দুই ছেলে ও ৫ জন স্বামীর সংসারে রজ্জোই সর্বময় কর্মী। গ্রামের পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখেছে রজ্জো। স্বামীরা প্রত্যেকেই ভাই। প্রতি রাতে রজ্জো কার সঙ্গে থাকবেন, তা সম্পূর্ণ তার সিদ্ধান্ত। এটাই ওখানকার রীতি।
পাঁচ স্বামী আর সন্তান নিয়ে সুখে সংসার করছেন মাঝ বয়সী ওই নারী। তাদের মধ্যে কোনো বিবাদ নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অন্যদিকে একইভাবে দুই স্বামী নিয়ে সুখে সংসার করছেন সুনীতা দেবী। তার স্বামীরাও দুই ভাই।
সুনীতা জানিয়েছেন, তিনি খুবই ভাগ্যবতী। কারণ তিনি দুজন স্বামীর স্ত্রী। তিনি আরও জানিয়েছেন, স্বামীদের একজন রান্নাতে তাকে সাহায্য করেন এবং অন্যজন সাহায্য করেন বাচ্চাকে দেখাশোনার কাজে।
একইভাবে ওই গ্রামের বুদ্ধি দেবীও বিয়ে করেছিলেন দুই ভাইকে। বুদ্ধি দেবীর বয়স এখন প্রায় ৮০ ছুঁই ছুঁই। তার এক স্বামী মারা গিয়েছেন এবং অন্যজনের সঙ্গে এখন সংসার করছেন তিনি।
গত শতাব্দীর থেকে তাদের এই ঐতিহ্য চলে আসছে বলে জানিয়েছেন বুদ্ধি দেবী।
বহুস্বামী প্রথাকে সহজ ভাবেই নিয়েছেন সেখানকার মানুষ। এমনকি এই প্রথার কারণে প্রতিকূল পরিবেশে সন্তান পালন এবং সংসারের কাজকর্ম সহজ হয়ে গেছে বলেও মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।