ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইফতারে খেজুর খাবেন যে কারণে

খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। একে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগই পূরণ করে। তাই রোজার সময় ইফতারিতে খেজুর রাখা ভালো।

খেজুর এমন একটি ফল, যা ফ্রুকটোজ ও গ্লাইসেমিক–সমৃদ্ধ। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। এতে বিদ্যমান ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এবার জেনে নিন খেজুরের নানাবিধ উপকারিতা সম্পর্কে-

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়

খেজুরে তো পুষ্টি আছেই, তবে এটা খাওয়ার পাশাপাশি এই ফলের পাতা খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। রাতকানা রোগসহ চোখের সমস্যা প্রশমনেও সহায়তা করে।

শরীরে শক্তি জোগায়

খেজুরের মধ্যে থাকা সুগার শরীরে একটা চনমনে ভাব আনে। এটি মানসিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

হার্ট সবল থাকে

ডায়েটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে খেজুর খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। তাই এতে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়

প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে এটি হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর পাশাপাশি এতে বদহজম, কোলাইটিস এবং হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

হাড় সবল রাখে

খেজুরে সেলেনিয়াম, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপকারী খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে, যা হাড়কে খুবই সবল রাখে। এ ছাড়াও বয়সী ব্যক্তিরা নিয়মিত খেজুর খেলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

যাদের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে যেতে শুরু করেছে তারা খেজুর খেলে ওজন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ব্রেইন ভালো রাখে

খেজুরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ বিশেষ করে পটাশিয়াম নার্ভ ও ব্রেইনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া হৃৎপিণ্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ খেজুর।

রক্তশূন্যতা দূর করে

খেজুর নিয়মিত খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার পাশাপাশি শরীরে রক্ত তৈরিতে সহায়তা করে।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে

প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ খেজুর ক্যানসার প্রতিরোধ করে। তাই যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের বেলায় ক্যানসারের ঝুঁকিটাও অনেক কম থাকে।

অ্যালার্জি থেকে বাঁচায়

খেজুরে থাকা সালফার অ্যালার্জির মতো রোগ থেকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়

খেজুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গ্লুকোজের পাশাপাশি প্রাকৃতিক চিনি পাওয়া যায় খেজুর থেকে যা এনার্জি বাড়ায়। খেজুরে থাকা ভিটামিন সি ও ডি ত্বক ভালো রাখে। এ ছাড়া খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে রাতকানা প্রতিরোধেও সহায়ক।

যারা খেজুর খাবেন না

যাদের মাইগ্রেন বা প্রচণ্ড মাথাব্যথার সমস্যা রয়েছে, তাদের খেজুর না খাওয়াই ভালো। কারণ ছোট মিষ্টি খেজুরে টিরামিন বলে যে পদার্থটি রয়েছে, তা মাথাব্যথা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন, তাদের জন্যও খেজুর খাওয়া ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আবার যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। আর যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে, খেজুর গ্রহণের আগে তারা অবশ্যই নিকটস্থ পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ইফতারে খেজুর খাবেন যে কারণে

আপডেট টাইম : ০৬:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। একে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগই পূরণ করে। তাই রোজার সময় ইফতারিতে খেজুর রাখা ভালো।

খেজুর এমন একটি ফল, যা ফ্রুকটোজ ও গ্লাইসেমিক–সমৃদ্ধ। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। এতে বিদ্যমান ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এবার জেনে নিন খেজুরের নানাবিধ উপকারিতা সম্পর্কে-

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়

খেজুরে তো পুষ্টি আছেই, তবে এটা খাওয়ার পাশাপাশি এই ফলের পাতা খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। রাতকানা রোগসহ চোখের সমস্যা প্রশমনেও সহায়তা করে।

শরীরে শক্তি জোগায়

খেজুরের মধ্যে থাকা সুগার শরীরে একটা চনমনে ভাব আনে। এটি মানসিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

হার্ট সবল থাকে

ডায়েটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে খেজুর খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। তাই এতে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়

প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে এটি হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর পাশাপাশি এতে বদহজম, কোলাইটিস এবং হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

হাড় সবল রাখে

খেজুরে সেলেনিয়াম, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপকারী খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে, যা হাড়কে খুবই সবল রাখে। এ ছাড়াও বয়সী ব্যক্তিরা নিয়মিত খেজুর খেলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

যাদের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে যেতে শুরু করেছে তারা খেজুর খেলে ওজন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ব্রেইন ভালো রাখে

খেজুরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ বিশেষ করে পটাশিয়াম নার্ভ ও ব্রেইনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া হৃৎপিণ্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ খেজুর।

রক্তশূন্যতা দূর করে

খেজুর নিয়মিত খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার পাশাপাশি শরীরে রক্ত তৈরিতে সহায়তা করে।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে

প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ খেজুর ক্যানসার প্রতিরোধ করে। তাই যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের বেলায় ক্যানসারের ঝুঁকিটাও অনেক কম থাকে।

অ্যালার্জি থেকে বাঁচায়

খেজুরে থাকা সালফার অ্যালার্জির মতো রোগ থেকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়

খেজুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গ্লুকোজের পাশাপাশি প্রাকৃতিক চিনি পাওয়া যায় খেজুর থেকে যা এনার্জি বাড়ায়। খেজুরে থাকা ভিটামিন সি ও ডি ত্বক ভালো রাখে। এ ছাড়া খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে রাতকানা প্রতিরোধেও সহায়ক।

যারা খেজুর খাবেন না

যাদের মাইগ্রেন বা প্রচণ্ড মাথাব্যথার সমস্যা রয়েছে, তাদের খেজুর না খাওয়াই ভালো। কারণ ছোট মিষ্টি খেজুরে টিরামিন বলে যে পদার্থটি রয়েছে, তা মাথাব্যথা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন, তাদের জন্যও খেজুর খাওয়া ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আবার যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। আর যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে, খেজুর গ্রহণের আগে তারা অবশ্যই নিকটস্থ পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করুন।