বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ফরিদপুর জেলায় কোনো জলাশয়ে পদ্ম ফুল দেখাটাই ছিলো বড় ভার। সম্প্রতি শহরের সিভিল সার্জনের বাসভবনের একটি পুকুরে ফুটেছে হাজার হাজার পদ্ম। প্রতিদিনই এই পদ্মের সৌন্দর্য্য দেখতে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ। পুকুরটি হয়ে উঠছে বিনোদনের নতুন কেন্দ্র।
ফরিদপুর জেলা শহরের নতুন প্রজন্ম বই পড়ে জেনেছে পদ্ম ফুটা দীঘি, পদ্ম ফুটা বিল বা বাওড় এর গল্প। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই স্ব-চোখে পদ্মের সৌন্দর্য্য দেখার সুযোগ কম মিলেছে।
তবে এখন ফরিদপুরের ফুল প্রেমী সিভিল সার্জনের প্রচেষ্টায় খুব সহজেই পদ্মের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারছেন শহরের মানুষ। শহরের ইট-বালুর মধ্যে এমন দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য দেখতে আসছেন অনেকেই। এ আনন্দ পেতে প্রতিদিনই আসছেন নারী- পুরুষ ও শিশুরা।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. অরুন কান্তি বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, ‘ছোট বেলা থেকেই ফুলকে ভালোবাসি, আমার বাড়ির পাঁশে বিশাল জলাশয়ে পদ্ম ফুল ফুটতো, সেখান থেকেই এই ফুলের প্রতি আমার ভালবাসার জন্ম হয়। আমি ফরিদপুরে আসার পর এই পুকুরে পদ্মের গাছ লাগাই। এখনো পুকুর জুড়ে ফুটছে হাজারো ফুল। মানুষ তা দেখে আনন্দ পায় আমারও ভালো লাগে।”
ফরিদপুরের সাংস্কৃতিক কর্মী ও শিক্ষাবীদ প্রফেসর আলতাফ হোসেন পদ্ম ফুল প্রসঙ্গে বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তিনি যে কাজটি করছেন তা আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে। তার এই উদ্যোগের কারণেই আজ ফুল প্রেমী প্রকৃতি প্রেমীরা এখানে এসে আনন্দ পাচ্ছে।
প্রফেসর আলতাফ আরো বলেন, যে কেউ ভালো চিন্তা থাকলে সমাজের জন্য আরো ভালো কাজ করা যায় তার উদাহরণ এই পদ্ম ফোটা পুকুর।
শহরের ঝিলটুলির এই সরকারি বাস ভবনের পদ্ম দেখতে আসা সাজ্জাদ হুসাইন বাবু, মফিজ শিপন, মো. রুবেল মুন্সি, কানিজ ফাতেমাসহ আরো অনেকেই জানান, পদ্ম ফোটা দীঘি- পদ্ম ফোটা বিল বা হাওর-বাওড় এর গল্প শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে আমাদের এই শহরের ইট-বালুর মধ্যে এমন দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য দেখতে পাবো ভাবতে পারিনি।
তারা জানান, আমাদের মতো অনেকেই এই পদ্মের সৌন্দর্য্য দেখার জন্য সকাল কিংবা বিকালে ছুটে আসছেন পুকুর পাড়ে।
ছড়াকার ও আইনজীবী গাজী শাহিদুজ্জামান লিটন পদ্ম ফোটা পুকুর প্রসঙ্গে বলেন, পদ্ম ফুল আমাদের গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য। কিন্তু বর্তমানে জলাশয় গুলোতে তেমন দেখা যাচ্ছে না এ ফুল। জেলার বোয়ালমারী উপজেলায় পদ্ম ডুবি নামে একটি বিল থাকলেও সেখানে পদ্মের কোনো অস্তিত্ব নেই।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন পদ্ম ফুলকে ফিরিয়ে আনার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সকলকে অত্যন্ত আনন্দিত করেছে। এভাবে দেশের সরকারি কর্মকর্তারা যদি প্রকৃতির দিকে খেয়াল রাখেন তবে আমাদের প্রকৃতি নব-সাজে আসবে বলে আশা করি।