ঢাকা , বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রাফিক ব্যবস্থার গোড়ায় গলদ, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে

রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা হয়েছে অনেক। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমও চালানো হয়েছে। কিন্তু এসব কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের অভিজ্ঞতা প্রীতিকর নয়। ডিজিটাইজেশনের এ যুগেও ট্রাফিক ব্যবস্থা রয়ে গেছে অ্যানালগ সিস্টেমেই। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ট্রাফিক পুলিশ ফের দায়িত্ব পালনে ফিরে আসে। কিন্তু রাজপথে শৃঙ্খলা পুরোপুরি ফেরেনি। রাজধানীবাসীর কাছে মহাবিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট। প্রায় প্রতিটি সড়কেই বিশৃঙ্খলার চিত্র দৃশ্যমান। এককথায় তীব্র যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। ভেঙে পড়েছে ট্রাফিক ব্যবস্থা। এর কারণ অনুসন্ধান করে সময়ের আলো মঙ্গলবার ট্রাফিক ব্যবস্থার গোড়ায় গলদ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রাজধানীতে শুরু হয়েছে ট্রাফিক পক্ষ-২০২৪। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কাজ করছে। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগরের সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে পুলিশের সঙ্গে কাজ করতে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার কথাও জানা গেছে।
ট্রাফিক পক্ষ উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ, ট্রাফিক সাইন সম্পর্কে ধারণা প্রদান, সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দর্শনীয় স্থানগুলোয় ব্যানার স্থাপন; ট্রাফিক সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শন, শ্রমিক ও বাস মালিক প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজন, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, বিএনসিসি সদস্য ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোয় এখন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণে যেমন বিনিয়োগ প্রয়োজন তেমনি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ব্যবস্থাপনাও সে রকমভাবেই গড়ে তোলা জরুরি। ট্রাফিক আইন যত কঠোরই হোক না কেন তা যদি প্রতিপালিত না হয়, আইন অমান্যকারীরা যদি শাস্তির আওতার বাইরে থেকে যায়, তা হলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা দুরূহ। ধারণা করা হয়েছিল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, মেট্রোরেল চালুর পর সড়কে এর ইতিবাচক প্রভাব দৃশ্যমান হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শৃঙ্খলার পরিবর্তে বিশৃঙ্খলাই যেন সর্বত্র জেঁকে বসেছে।
আমরা মনে করি, সবার আগে ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানকেও যথাযথভাবে ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। রাজধানীর সড়কে চলা দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা নিরসন করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালাতে হবে। নাগরিকদের মধ্যেও আইন মেনে চলার প্রবণতা বাড়াতে হবে। যানবাহন মালিক, চালক, পথচারী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী সবার মধ্যে আইন মানার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে এর যথাযথ প্রতিফলন ঘটাতে হবে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে যানজট নিরসনের মধ্য দিয়ে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ট্রাফিক ব্যবস্থার গোড়ায় গলদ, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে

আপডেট টাইম : ২০ মিনিট আগে
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা হয়েছে অনেক। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমও চালানো হয়েছে। কিন্তু এসব কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের অভিজ্ঞতা প্রীতিকর নয়। ডিজিটাইজেশনের এ যুগেও ট্রাফিক ব্যবস্থা রয়ে গেছে অ্যানালগ সিস্টেমেই। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ট্রাফিক পুলিশ ফের দায়িত্ব পালনে ফিরে আসে। কিন্তু রাজপথে শৃঙ্খলা পুরোপুরি ফেরেনি। রাজধানীবাসীর কাছে মহাবিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট। প্রায় প্রতিটি সড়কেই বিশৃঙ্খলার চিত্র দৃশ্যমান। এককথায় তীব্র যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। ভেঙে পড়েছে ট্রাফিক ব্যবস্থা। এর কারণ অনুসন্ধান করে সময়ের আলো মঙ্গলবার ট্রাফিক ব্যবস্থার গোড়ায় গলদ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রাজধানীতে শুরু হয়েছে ট্রাফিক পক্ষ-২০২৪। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কাজ করছে। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগরের সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে পুলিশের সঙ্গে কাজ করতে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার কথাও জানা গেছে।
ট্রাফিক পক্ষ উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ, ট্রাফিক সাইন সম্পর্কে ধারণা প্রদান, সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দর্শনীয় স্থানগুলোয় ব্যানার স্থাপন; ট্রাফিক সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শন, শ্রমিক ও বাস মালিক প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজন, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, বিএনসিসি সদস্য ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোয় এখন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণে যেমন বিনিয়োগ প্রয়োজন তেমনি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ব্যবস্থাপনাও সে রকমভাবেই গড়ে তোলা জরুরি। ট্রাফিক আইন যত কঠোরই হোক না কেন তা যদি প্রতিপালিত না হয়, আইন অমান্যকারীরা যদি শাস্তির আওতার বাইরে থেকে যায়, তা হলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা দুরূহ। ধারণা করা হয়েছিল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, মেট্রোরেল চালুর পর সড়কে এর ইতিবাচক প্রভাব দৃশ্যমান হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শৃঙ্খলার পরিবর্তে বিশৃঙ্খলাই যেন সর্বত্র জেঁকে বসেছে।
আমরা মনে করি, সবার আগে ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানকেও যথাযথভাবে ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। রাজধানীর সড়কে চলা দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা নিরসন করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালাতে হবে। নাগরিকদের মধ্যেও আইন মেনে চলার প্রবণতা বাড়াতে হবে। যানবাহন মালিক, চালক, পথচারী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী সবার মধ্যে আইন মানার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে এর যথাযথ প্রতিফলন ঘটাতে হবে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে যানজট নিরসনের মধ্য দিয়ে।