ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এসএমই উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভালো একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন। সারা দেশে প্রায় ৭০ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) তৈরি করবে তারা।

দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা এ উদ্যোগের লক্ষ্য। প্রান্তিক ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশে মোট ৬৯ হাজার ৯০২ জন নতুন এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করবে সংস্থাটি।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ২০০৭ সালে এসএমই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল নিয়ে এর যাত্রা শুরু। উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ, প্রশিক্ষণ, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে পরামর্শ ও সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে নতুন ব্যবসা সৃষ্টি ও পরিচালনায় দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ফাউন্ডেশন। নতুন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ৬৪ জেলাকে ১৭৭টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ১২৯টি খুবই সম্ভাবনাময়। ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৯ জন মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ উদ্যোগের ফল পাবে। অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক সহজে এসএমই ফাউন্ডেশনের ঋণ পাচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা।

ঋণ পরিশোধও করছে তারা। শতভাগ ঋণ ফেরত পাওয়া যায়, খেলাপের ঘটনা ঘটছে না। ফাউন্ডেশন ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়, ব্যাংকের মাধ্যমে। সরাসরি দিতে পারলে তাদের জন্য আরো ভালো হতো।

কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে ফাউন্ডেশনকে। সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত অর্থ নেই তাদের হাতে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া যাচ্ছে না। ২০১২ সাল থেকে আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ায় ফাউন্ডেশনের আয় কমতে থাকে। জমানো টাকা থেকে খরচ করতে হচ্ছে তাদের। সংকুচিত হয়েছে কার্যক্রম। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। সেই পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আরো ৫০০ কোটি টাকা চেয়েছিল তারা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তাদের ফান্ডে এ পরিমাণ টাকা দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর পার হলেও টাকা পায়নি ফাউন্ডেশন। গত মে মাসে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রীর কাছে বরাদ্দের জন্য আরেকটি চিঠি পাঠান। ফাউন্ডেশনের জন্য করমুক্ত সুবিধা ও জাতীয় বাজেটের আওতায় বার্ষিক ২০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দও চেয়েছেন তিনি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য বৃহৎ শিল্প খাতের পাশাপাশি এ খাতকেও এগিয়ে নিতে হবে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে। এর জন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের কাজে গতিশীলতা আনা জরুরি। বরাদ্দ বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সব সহায়তা তাদের দিতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

এসএমই উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ

আপডেট টাইম : ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভালো একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন। সারা দেশে প্রায় ৭০ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) তৈরি করবে তারা।

দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা এ উদ্যোগের লক্ষ্য। প্রান্তিক ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশে মোট ৬৯ হাজার ৯০২ জন নতুন এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করবে সংস্থাটি।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ২০০৭ সালে এসএমই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল নিয়ে এর যাত্রা শুরু। উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ, প্রশিক্ষণ, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে পরামর্শ ও সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে নতুন ব্যবসা সৃষ্টি ও পরিচালনায় দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ফাউন্ডেশন। নতুন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ৬৪ জেলাকে ১৭৭টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ১২৯টি খুবই সম্ভাবনাময়। ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৯ জন মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ উদ্যোগের ফল পাবে। অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক সহজে এসএমই ফাউন্ডেশনের ঋণ পাচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা।

ঋণ পরিশোধও করছে তারা। শতভাগ ঋণ ফেরত পাওয়া যায়, খেলাপের ঘটনা ঘটছে না। ফাউন্ডেশন ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়, ব্যাংকের মাধ্যমে। সরাসরি দিতে পারলে তাদের জন্য আরো ভালো হতো।

কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে ফাউন্ডেশনকে। সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত অর্থ নেই তাদের হাতে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া যাচ্ছে না। ২০১২ সাল থেকে আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ায় ফাউন্ডেশনের আয় কমতে থাকে। জমানো টাকা থেকে খরচ করতে হচ্ছে তাদের। সংকুচিত হয়েছে কার্যক্রম। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। সেই পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আরো ৫০০ কোটি টাকা চেয়েছিল তারা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তাদের ফান্ডে এ পরিমাণ টাকা দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর পার হলেও টাকা পায়নি ফাউন্ডেশন। গত মে মাসে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রীর কাছে বরাদ্দের জন্য আরেকটি চিঠি পাঠান। ফাউন্ডেশনের জন্য করমুক্ত সুবিধা ও জাতীয় বাজেটের আওতায় বার্ষিক ২০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দও চেয়েছেন তিনি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য বৃহৎ শিল্প খাতের পাশাপাশি এ খাতকেও এগিয়ে নিতে হবে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে। এর জন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের কাজে গতিশীলতা আনা জরুরি। বরাদ্দ বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সব সহায়তা তাদের দিতে হবে।