ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেসিকে নিয়ে ঈর্ষায় পুড়ছেন পেলে ম্যারাডোনা

দিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে আড্ডায় তার যেসব কথা হয়েছে, তারপর লিওনেল মেসিকে বিশ্বের সেরা ফুটবলার বললে বোধহয় আশ্চর্যের হতো!

দিন কয়েক আগে প্যারিসে মেসি নিয়ে যা যা বলেছিলেন ম্যারাডোনা, সেসব শুনে পেলে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘দিয়েগো ঠিকই বলেছ। আমরা যে রকম ছিলাম ছেলেটা তেমন নয়।’

ম্যারাডোনার মতো খোলাখুলি আক্রমণে নামেননি, কিন্তু সমর্থন দিয়েছিলেন তাকে। এর পর বিশ্বের সেরা ফুটবলারের তাজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বাইরে আর কার মাথায় পরিয়ে দিতেন পেলে?

ব্রাজিল ফুটবলের সর্বকালের সেরা নক্ষত্র পরিষ্কার বলে দিলেন, এই মুহূর্তে পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার বলে দিলেন, এখনই তাকে একটা টিম করতে বললে তার প্রথম নামটাই রোনাল্ডো হতো! পেলে অলক্ষ্যে আরও একটা বিতর্কের জন্মও দিলেন।

ম্যারাডোনার মন্তব্যের পর আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মতবাদ দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল। একদল বলেছিল, ম্যারাডোনা ঠিক। মেসির মধ্যে সত্যিই লিডারশিপের অভাব আছে।

অন্য দলটা বলেছিল, হাস্যকর কথাবার্তা। ব্রাজিল বিশ্বকাপে মেসিকে দেখার পরও এসব কথা আসে কোথা থেকে?

মঙ্গলবার পেলের মন্তব্যের পর দেখা গেল, এক ওয়েবসাইটে জনৈক আর্জেন্টিনার সমর্থক খোলা চিঠি লিখেছেন। যেখানে বলেছেন, মেসি আসার আগে পেলে আর ম্যারাডোনা যুগ্মভাবে ফুটবলের সর্বকালীন শ্রেষ্ঠত্ব উপভোগ করতেন। কিন্তু মেসি আসার পর ওই শ্রেষ্ঠত্বের সিংহাসন নিয়ে তৃতীয় দাবিদার তৈরি হয়ে গেছে। মেসির সহ্য হতে পারে, কিন্তু পেলে-ম্যারাডোনার সহ্য হবে কেন?

সোজাসুজি, পেলে-ম্যারাডোনা নাকি ঈর্ষান্বিত। ঈর্ষায় পুড়ছেন তারা মেসিকে নিয়ে! পেলের মন্তব্যের পর সেই ধারণা যদি আরও ধূমায়িত হয়, কিছু করার নেই।

‘আমি রোনাল্ডোকে সম্মান করি। আমাকে একটা জাতীয় টিম তৈরি করতে বলা হলে, প্রথম নামটাই ওর হতো’, বলেছেন পেলে।

ক্রিশ্চিয়ানো নিয়ে ফুটবল কিংবদন্তির সার্টিফিকেট এখানেই শেষ হয়নি। ‘আমি তো বলব, বিশ্বের সেরা ফুটবলার এখন রোনাল্ডো। তবে হ্যাঁ, মেসি, আমার বা দিয়েগোর সঙ্গে রোনাল্ডোর তুলনা চলে না। চারজনের খেলার স্টাইল চার রকম। বরং ওর সঙ্গে আপনারা ব্রাজিলের রোনালদোর তুলনা করতে পারেন।’

কেন? ব্রাজিল মহাতারকার বিশ্লেষণে, রোনাল্ডো অনেকটাই সামনে খেলেন। প্রায় ফরোয়ার্ড হিসেবে। তার পজিশন অনেক বেশি সেন্ট্রাল, খেলার স্টাইল অনেক বেশি সরাসরি। যা গোল পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেয়।

‘আমাদের সবারই খেলার স্টাইল আলাদা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হল, ও এমন একজন প্লেয়ার যে গোল করবে। ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দেবে’, বলেছেন পেলে। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘পেলে, ম্যারাডোনার সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ানোর তুলনা হয় না কারণ আমরা পেছন থেকে উঠে আসতাম। ও সেখানে উপরে থাকে। মেসিও বেশির ভাগ খেলাটা মাঝমাঠে খেলে।’

তবে ব্রাজিলীয় কিংবদন্তির মনে হচ্ছে, এখনকার ফুটবলের হাল খুবই খারাপ। গত পাঁচ বছরে বিশ্ব থেকে মাত্র দু’জন তারকা বেরিয়ে এসেছেন। ‘বেল, নেইমার আছে। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। আগে এক-একটা টিমে তিন-চারজন করে তারকা থাকত। এখন বিশ্বে বোধহয় তিন-চারজন আছে। যা লজ্জার’, বলেছেন পেলে।

কিন্তু পরে কী বলেছেন না বলেছেন, তাতে আর কী এসে যায়? তার গুরুত্বও বা কতটুকু? আসলটা তো প্রথমেই বলে দিয়েছেন পেলে, বাকি যা কিছু সবই তো নিমিত্ত মাত্র।
ওয়েবসাইট।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

মেসিকে নিয়ে ঈর্ষায় পুড়ছেন পেলে ম্যারাডোনা

আপডেট টাইম : ০৬:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০১৬

দিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে আড্ডায় তার যেসব কথা হয়েছে, তারপর লিওনেল মেসিকে বিশ্বের সেরা ফুটবলার বললে বোধহয় আশ্চর্যের হতো!

দিন কয়েক আগে প্যারিসে মেসি নিয়ে যা যা বলেছিলেন ম্যারাডোনা, সেসব শুনে পেলে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘দিয়েগো ঠিকই বলেছ। আমরা যে রকম ছিলাম ছেলেটা তেমন নয়।’

ম্যারাডোনার মতো খোলাখুলি আক্রমণে নামেননি, কিন্তু সমর্থন দিয়েছিলেন তাকে। এর পর বিশ্বের সেরা ফুটবলারের তাজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বাইরে আর কার মাথায় পরিয়ে দিতেন পেলে?

ব্রাজিল ফুটবলের সর্বকালের সেরা নক্ষত্র পরিষ্কার বলে দিলেন, এই মুহূর্তে পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার বলে দিলেন, এখনই তাকে একটা টিম করতে বললে তার প্রথম নামটাই রোনাল্ডো হতো! পেলে অলক্ষ্যে আরও একটা বিতর্কের জন্মও দিলেন।

ম্যারাডোনার মন্তব্যের পর আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মতবাদ দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল। একদল বলেছিল, ম্যারাডোনা ঠিক। মেসির মধ্যে সত্যিই লিডারশিপের অভাব আছে।

অন্য দলটা বলেছিল, হাস্যকর কথাবার্তা। ব্রাজিল বিশ্বকাপে মেসিকে দেখার পরও এসব কথা আসে কোথা থেকে?

মঙ্গলবার পেলের মন্তব্যের পর দেখা গেল, এক ওয়েবসাইটে জনৈক আর্জেন্টিনার সমর্থক খোলা চিঠি লিখেছেন। যেখানে বলেছেন, মেসি আসার আগে পেলে আর ম্যারাডোনা যুগ্মভাবে ফুটবলের সর্বকালীন শ্রেষ্ঠত্ব উপভোগ করতেন। কিন্তু মেসি আসার পর ওই শ্রেষ্ঠত্বের সিংহাসন নিয়ে তৃতীয় দাবিদার তৈরি হয়ে গেছে। মেসির সহ্য হতে পারে, কিন্তু পেলে-ম্যারাডোনার সহ্য হবে কেন?

সোজাসুজি, পেলে-ম্যারাডোনা নাকি ঈর্ষান্বিত। ঈর্ষায় পুড়ছেন তারা মেসিকে নিয়ে! পেলের মন্তব্যের পর সেই ধারণা যদি আরও ধূমায়িত হয়, কিছু করার নেই।

‘আমি রোনাল্ডোকে সম্মান করি। আমাকে একটা জাতীয় টিম তৈরি করতে বলা হলে, প্রথম নামটাই ওর হতো’, বলেছেন পেলে।

ক্রিশ্চিয়ানো নিয়ে ফুটবল কিংবদন্তির সার্টিফিকেট এখানেই শেষ হয়নি। ‘আমি তো বলব, বিশ্বের সেরা ফুটবলার এখন রোনাল্ডো। তবে হ্যাঁ, মেসি, আমার বা দিয়েগোর সঙ্গে রোনাল্ডোর তুলনা চলে না। চারজনের খেলার স্টাইল চার রকম। বরং ওর সঙ্গে আপনারা ব্রাজিলের রোনালদোর তুলনা করতে পারেন।’

কেন? ব্রাজিল মহাতারকার বিশ্লেষণে, রোনাল্ডো অনেকটাই সামনে খেলেন। প্রায় ফরোয়ার্ড হিসেবে। তার পজিশন অনেক বেশি সেন্ট্রাল, খেলার স্টাইল অনেক বেশি সরাসরি। যা গোল পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেয়।

‘আমাদের সবারই খেলার স্টাইল আলাদা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হল, ও এমন একজন প্লেয়ার যে গোল করবে। ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দেবে’, বলেছেন পেলে। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘পেলে, ম্যারাডোনার সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ানোর তুলনা হয় না কারণ আমরা পেছন থেকে উঠে আসতাম। ও সেখানে উপরে থাকে। মেসিও বেশির ভাগ খেলাটা মাঝমাঠে খেলে।’

তবে ব্রাজিলীয় কিংবদন্তির মনে হচ্ছে, এখনকার ফুটবলের হাল খুবই খারাপ। গত পাঁচ বছরে বিশ্ব থেকে মাত্র দু’জন তারকা বেরিয়ে এসেছেন। ‘বেল, নেইমার আছে। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। আগে এক-একটা টিমে তিন-চারজন করে তারকা থাকত। এখন বিশ্বে বোধহয় তিন-চারজন আছে। যা লজ্জার’, বলেছেন পেলে।

কিন্তু পরে কী বলেছেন না বলেছেন, তাতে আর কী এসে যায়? তার গুরুত্বও বা কতটুকু? আসলটা তো প্রথমেই বলে দিয়েছেন পেলে, বাকি যা কিছু সবই তো নিমিত্ত মাত্র।
ওয়েবসাইট।