ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনমনের পুলিশদের নিয়ে ভয়-ভীতি ‍দূর করাই আমার লক্ষ্য

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সাধারণ মানুষদের মাঝে পুলিশদের নিয়ে নেতিবাচক ধারণা আছে। পুলিশদের নিয়ে ভয়-ভীতি আছে জনমনে। কিন্তু তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সাধারণ জনগণের মন থেকে পুলিশিভীতি দূর করার চেষ্টা করেছেন। এলাকায় মাদক নির্মূল ও সন্ত্রাস দমনে কাজ করেছেন। একাধারে ২৩বার ডিএমপির শ্রেষ্ঠ ডিসি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। তার সাক্ষাতকার নিয়েছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।

প্রশ্ন: তেজগাঁয়ের আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নে আপনার ভূমিকা কেমন ছিল?

বিপ্লব সরকার: আমি সব সময় চেষ্টা করেছি পুলিশ সদস্যদের উজ্জীবিত করার। পুলিশ সদস্যরা জনগণের অনুভূতিটা যেনো ধরতে পারে। তারা যেনো আমাদের কাছে এসে ভরসা পায়। এ ব্যাপারে সচেষ্ট থেকেছি। মানুষ আসলে সমস্যায় পড়ে থানায় আসে। থানায় এসে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা বলে। তাদেরকে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি ভালো সার্ভিস দেয়ার। অনেকেই আমাদের সেবায় সন্তুষ্ট হয়েছেন। কেউ কেউ অল্প সন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার হয়ত অনেককে সন্তুষ্ট করতে পারিনি। তবে আমার চেষ্টা ছিল এই এলাকার মানুষদের পুলিশিং সেবার মাধ্যমে সন্তুষ্ট করার। সন্ত্রাস দমন ও মাদক নির্মূলে কাজ করেছি। পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের কনস্টেবল, এসআই দের নিয়ে এসব কাজ করেছি। আমার একার পক্ষে কাজ করা কখনোই সম্ভব ছিল না।

প্রশ্ন: ডিএমপির একাধারে ২৩ বার শ্রেষ্ঠ ডিসি হয়েছেন। শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পান?

বিপ্লব সরকার: শ্রেষ্ঠ ডিসি হওয়ার জন্য তো আমি কাজ করিনি। জনগণের সমস্যা নিবারণের জন্য কাজ করেছি। যদি ভালো কাজ করার জন্য চেষ্টা করা হয়, তাহলে ভালো কাজ করা যায়। আর যখন ভালো কাজ করা হয়। তখন ভালো কাজের পুরস্কার তো পাওয়া যাবে। ভালো কাজ কখনো বৃথা যায় না। এর একটা রিওয়ার্ড আছে। আর যখন ভালো কাজের মূল্যায়ন পাওয়া যায়, পুরস্কার পাওয়া হয়। তখন অনুপ্রেরণা আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া এটা আমার একার অবদান নয়। আমার কনস্টেবল, এসআই সবাইকে উজ্জীবিত করার মাধ্যমে হয়ত ভালো কিছু কাজ করতে পেরেছি। আমার সব সদস্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

প্রশ্ন: একজন পুলিশ অফিসারের বদলি হওয়ার খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরগরম। অনেকে আপনার বদলি যাতে না হয় এজন্য লেখালেখি ও করছে। পুলিশ অফিসারদের বদলি এমনটা স্বাভাবিকভাবে দেখা যায় না। আপনার ক্ষেত্রে কেনো এমনটা হলো?

বিপ্লব সরকার: দেখুন, সরকারি চাকরিজীবীদের বদলি হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। একজায়গা তো আর স্থায়ীভাবে থাকা যায় না। তবে মানুষ হয়ত চেয়েছে এই এলাকায় আরো বেশি দিন থাকি। আমার প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা তা দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি। আমি তেজাগাঁয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বরত রয়েছি। এই এলাকার মানুষদের ভালো সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষ যদি বিন্দুমাত্র ও সন্তুষ্টও হয়ে থাকে, তাহলে এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি এলাকার মানুষদের মাঝে আর পুলিশের মাঝে মেলবন্ধন করার চেষ্টা করেছি। সাধারণ মানুষদের মন থেকে পুলিশি ভীতি দূর করার চেষ্টা ছিল সব সময়।

প্রশ্ন: আপনাকে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে দেখি। এসব কাজ কেন করেন?

বিপ্লব সরকার: শিশু বলতে দুঃস্থ শিশুদের বোঝাচ্ছি। দরিদ্র শিশুদের নিয়ে কাজ করি। এটা আমাদের সমাজের বিশাল একটা অংশ। এই বিশাল অংশকে অবহেলিত রেখে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের পক্ষ থেকে যদি সামান্য কাজ করতে পারি, তাহলে হয়ত তারা আলোর মুখ দেখতে পারে। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে দুঃস্থরা আর দুঃস্থ থাকবে না।” আমাদের সমাজে যারা বিত্তবান আছে তারা যদি প্রতিদিন একটা ক্ষুদ্র অংশও দুঃস্থ শিশুদের জন্য রাখি তাদের অবস্থার অনেক পরিবর্তন হবে। সমাজে বৈষম্য কমে আসবে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জনমনের পুলিশদের নিয়ে ভয়-ভীতি ‍দূর করাই আমার লক্ষ্য

আপডেট টাইম : ১২:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সাধারণ মানুষদের মাঝে পুলিশদের নিয়ে নেতিবাচক ধারণা আছে। পুলিশদের নিয়ে ভয়-ভীতি আছে জনমনে। কিন্তু তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সাধারণ জনগণের মন থেকে পুলিশিভীতি দূর করার চেষ্টা করেছেন। এলাকায় মাদক নির্মূল ও সন্ত্রাস দমনে কাজ করেছেন। একাধারে ২৩বার ডিএমপির শ্রেষ্ঠ ডিসি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। তার সাক্ষাতকার নিয়েছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।

প্রশ্ন: তেজগাঁয়ের আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নে আপনার ভূমিকা কেমন ছিল?

বিপ্লব সরকার: আমি সব সময় চেষ্টা করেছি পুলিশ সদস্যদের উজ্জীবিত করার। পুলিশ সদস্যরা জনগণের অনুভূতিটা যেনো ধরতে পারে। তারা যেনো আমাদের কাছে এসে ভরসা পায়। এ ব্যাপারে সচেষ্ট থেকেছি। মানুষ আসলে সমস্যায় পড়ে থানায় আসে। থানায় এসে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা বলে। তাদেরকে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি ভালো সার্ভিস দেয়ার। অনেকেই আমাদের সেবায় সন্তুষ্ট হয়েছেন। কেউ কেউ অল্প সন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার হয়ত অনেককে সন্তুষ্ট করতে পারিনি। তবে আমার চেষ্টা ছিল এই এলাকার মানুষদের পুলিশিং সেবার মাধ্যমে সন্তুষ্ট করার। সন্ত্রাস দমন ও মাদক নির্মূলে কাজ করেছি। পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের কনস্টেবল, এসআই দের নিয়ে এসব কাজ করেছি। আমার একার পক্ষে কাজ করা কখনোই সম্ভব ছিল না।

প্রশ্ন: ডিএমপির একাধারে ২৩ বার শ্রেষ্ঠ ডিসি হয়েছেন। শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পান?

বিপ্লব সরকার: শ্রেষ্ঠ ডিসি হওয়ার জন্য তো আমি কাজ করিনি। জনগণের সমস্যা নিবারণের জন্য কাজ করেছি। যদি ভালো কাজ করার জন্য চেষ্টা করা হয়, তাহলে ভালো কাজ করা যায়। আর যখন ভালো কাজ করা হয়। তখন ভালো কাজের পুরস্কার তো পাওয়া যাবে। ভালো কাজ কখনো বৃথা যায় না। এর একটা রিওয়ার্ড আছে। আর যখন ভালো কাজের মূল্যায়ন পাওয়া যায়, পুরস্কার পাওয়া হয়। তখন অনুপ্রেরণা আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া এটা আমার একার অবদান নয়। আমার কনস্টেবল, এসআই সবাইকে উজ্জীবিত করার মাধ্যমে হয়ত ভালো কিছু কাজ করতে পেরেছি। আমার সব সদস্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

প্রশ্ন: একজন পুলিশ অফিসারের বদলি হওয়ার খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরগরম। অনেকে আপনার বদলি যাতে না হয় এজন্য লেখালেখি ও করছে। পুলিশ অফিসারদের বদলি এমনটা স্বাভাবিকভাবে দেখা যায় না। আপনার ক্ষেত্রে কেনো এমনটা হলো?

বিপ্লব সরকার: দেখুন, সরকারি চাকরিজীবীদের বদলি হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। একজায়গা তো আর স্থায়ীভাবে থাকা যায় না। তবে মানুষ হয়ত চেয়েছে এই এলাকায় আরো বেশি দিন থাকি। আমার প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা তা দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি। আমি তেজাগাঁয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বরত রয়েছি। এই এলাকার মানুষদের ভালো সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষ যদি বিন্দুমাত্র ও সন্তুষ্টও হয়ে থাকে, তাহলে এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি এলাকার মানুষদের মাঝে আর পুলিশের মাঝে মেলবন্ধন করার চেষ্টা করেছি। সাধারণ মানুষদের মন থেকে পুলিশি ভীতি দূর করার চেষ্টা ছিল সব সময়।

প্রশ্ন: আপনাকে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে দেখি। এসব কাজ কেন করেন?

বিপ্লব সরকার: শিশু বলতে দুঃস্থ শিশুদের বোঝাচ্ছি। দরিদ্র শিশুদের নিয়ে কাজ করি। এটা আমাদের সমাজের বিশাল একটা অংশ। এই বিশাল অংশকে অবহেলিত রেখে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের পক্ষ থেকে যদি সামান্য কাজ করতে পারি, তাহলে হয়ত তারা আলোর মুখ দেখতে পারে। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে দুঃস্থরা আর দুঃস্থ থাকবে না।” আমাদের সমাজে যারা বিত্তবান আছে তারা যদি প্রতিদিন একটা ক্ষুদ্র অংশও দুঃস্থ শিশুদের জন্য রাখি তাদের অবস্থার অনেক পরিবর্তন হবে। সমাজে বৈষম্য কমে আসবে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।