ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজ ঘাটতি সিন্ডিকেট: কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে

দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে আমদানি অব্যাহত থাকার পরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নানা অজুহাতে রান্নার এ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যটির দাম বাড়িয়ে চলেছে। এতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকার পরও তাদের অপতৎপরতা বন্ধ না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক।

প্রায় দেড় মাস পরও কেন পেঁয়াজ বাজারের অস্থিরতা দূর হচ্ছে না, এ প্রশ্ন ভোক্তাদের। বস্তুত পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের কাছে যেন জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশবাসী।  এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন অজুহাতে গত দেড় মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পেঁয়াজ সিন্ডিকেট।

এর বড় অংশই গেছে আমদানিকারকদের পকেটে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া না হলে অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজারও যে কোনো সময় অস্থির করে তোলার চেষ্টা করতে পারে সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যবসায়ীরা।

পেঁয়াজ এখন এত চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে যে তা অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।

এ অবস্থায় সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করা অনুচিত, যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে আরও উৎসাহিত হয়। বিষয়টি নজরদারির দায়িত্ব সরকারের। কাজেই কারা কী ধরনের কারসাজি করেছে, তা চিহ্নিত করে অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

লক্ষ করা গেছে, সম্প্রতি ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার ঘোষণা দেয়ার পরপরই দেশে পণ্যটির বাজার হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে। এরপর বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলেও এ পণ্যটির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি রহস্যজনক।

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের যেসব সংস্থা রয়েছে, সেগুলো সক্রিয় না থাকলে বিভিন্ন পণ্যের বাজার বারবার অস্থির হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কাজেই সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে আরও সজাগ থাকতে হবে যাতে কেউ কারসাজি করে পার পেতে না পারে।

বিদ্যমান বাস্তবতায় এটা স্পষ্ট যে, দেশে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মসলা ও কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশেষ জোর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমদানির ওপর নির্ভরশীল হলে ভোক্তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে। পচনশীল হওয়ায় কৃষক পেঁয়াজ জমি থেকে ঘরে তোলার পর তা বিক্রি করে দেন।

সারা দেশে কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজসহ পচনশীল পণ্য সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে পেঁয়াজের বাজারে আর এমন অস্থিরতা দেখা দেবে না। অতি মুনাফার লোভে যারা নিত্যপণ্য মজুদ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। তা না হলে বাজারে এমন অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজ ঘাটতি সিন্ডিকেট: কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে

আপডেট টাইম : ০৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে আমদানি অব্যাহত থাকার পরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নানা অজুহাতে রান্নার এ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যটির দাম বাড়িয়ে চলেছে। এতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকার পরও তাদের অপতৎপরতা বন্ধ না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক।

প্রায় দেড় মাস পরও কেন পেঁয়াজ বাজারের অস্থিরতা দূর হচ্ছে না, এ প্রশ্ন ভোক্তাদের। বস্তুত পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের কাছে যেন জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশবাসী।  এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন অজুহাতে গত দেড় মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পেঁয়াজ সিন্ডিকেট।

এর বড় অংশই গেছে আমদানিকারকদের পকেটে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া না হলে অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজারও যে কোনো সময় অস্থির করে তোলার চেষ্টা করতে পারে সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যবসায়ীরা।

পেঁয়াজ এখন এত চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে যে তা অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।

এ অবস্থায় সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করা অনুচিত, যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে আরও উৎসাহিত হয়। বিষয়টি নজরদারির দায়িত্ব সরকারের। কাজেই কারা কী ধরনের কারসাজি করেছে, তা চিহ্নিত করে অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

লক্ষ করা গেছে, সম্প্রতি ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার ঘোষণা দেয়ার পরপরই দেশে পণ্যটির বাজার হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে। এরপর বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলেও এ পণ্যটির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি রহস্যজনক।

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের যেসব সংস্থা রয়েছে, সেগুলো সক্রিয় না থাকলে বিভিন্ন পণ্যের বাজার বারবার অস্থির হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কাজেই সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে আরও সজাগ থাকতে হবে যাতে কেউ কারসাজি করে পার পেতে না পারে।

বিদ্যমান বাস্তবতায় এটা স্পষ্ট যে, দেশে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মসলা ও কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশেষ জোর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমদানির ওপর নির্ভরশীল হলে ভোক্তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে। পচনশীল হওয়ায় কৃষক পেঁয়াজ জমি থেকে ঘরে তোলার পর তা বিক্রি করে দেন।

সারা দেশে কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজসহ পচনশীল পণ্য সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে পেঁয়াজের বাজারে আর এমন অস্থিরতা দেখা দেবে না। অতি মুনাফার লোভে যারা নিত্যপণ্য মজুদ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। তা না হলে বাজারে এমন অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যায়।