হাওরের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কে ‘হাওররত্ন’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কে এই সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এঁর পক্ষে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের সহধর্মিণী অ্যাডভোকেট শামসুন্নাহার নেলী। সামাজিক সংগঠন হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সংগঠনটির মুখপত্র বার্ষিক ম্যাগাজিন হাওরের হালচাল-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশনাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রকাশনা উৎসব ও হাওর পদক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় হাওরের আরো তিন কীর্তিমানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন, হাওর সমাজসেবায় কিংবদন্তি সমাজসেবক ও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম স্যার ফজলে হাসান আবেদকে হাওরবন্ধু-২০২০ পদক, হাওর সাংবাদিকতায় অসামান্য অবদান রাখায় প্রবীণ সাংবাদিক, কলাম লেখক ও বিশ্লেষক জনাব হাসান শাহরিয়ারকে হাওরবন্ধু-২০২০ পদক এবং হাওরে নারী ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদান রাখায় হাওরের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আছিয়া আলমকে হাওরকন্যা-২০২০ পদক।
এছাড়া কৃষি-অর্থনীতি বিশ্লেষক ও কলাম লেখক, দৈনিক বাংলাদেশের খবর পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক এস এম মুকুলকে হাওরের হালচাল ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা লেখক-২০২০ পদক প্রদান করা হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, হাওরাঞ্চলকে দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত করা, হাওরপাড়ের মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ এবং উন্নয়ন সম্ভাবনাকে তুলে ধরার লক্ষ্যে হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক নামে সামাজিক সংগঠনটি কাজ করছে।
প্রকাশনা উৎসব ও হাওর পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. আবদুল হক।এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আছিয়া আলম, ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান এবং ব্র্যাক-এর সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচির প্রধান জনাব শ্যাম সুন্দর সাহা।
অনুষ্ঠানে হাওরের হালচাল ম্যাগাজিনের লেখকদের মধ্যে অনুপম মাহমুদ এবং পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার নিজ নিজ অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন মো. বিল্লাল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান এমারত। অনুষ্ঠানে পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন পদকপ্রাপ্ত বাছাই কমিটির আহবায়ক রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব।
সংগঠনের আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা হাওরের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে হাওরবাসীদের একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে চাই। হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক সেই কাজটিই করবে। হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক হাওরবাসীদের মধ্যে একটি কার্যকর নেটওয়ার্ক সৃষ্টির মাধ্যমে কৃষি, কৃষক ও হাওরের পক্ষে কথা বলবে।
প্রকাশনা উৎসব আয়োজক কমিটির আহবায়ক মো. আজিজুল হক জানান, হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক-এর মুখপত্র বার্ষিক ম্যাগাজিন হাওরের হালচাল-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। এটা আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। তাই আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আগামী বছর থেকে আয়োজনকে আমরা আরো সমৃদ্ধ করব।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি বলেন, হাওর এখন সরকারের নজরে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে হাওরের উন্নয়নে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। সরকারের এই উন্নয়ন পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টাকে হাওরের স্বকীয়তা বজায় রেখে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে হাওরবাসীকে এগিয়ে আসার আহবানে হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক নতুন দিগন্তের সূচনা করল।