ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো একমাত্র ভরসা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমলাভাঙা খাল। একপাড়ে দক্ষিণ কাজির হাওলা, অন্যপাড়ে কাছিয়াবুনিয়া গ্রাম। দুই গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষের যোগাযোগ ভরসা ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে বাঁশের সাঁকো। তাও এখন নড়বড়ে। তাতে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীদের চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। প্রতিদিন অন্তত এক হাজার মানুষ এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। এরমধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। ওই দুই গ্রামের অবস্থান পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নে। শিক্ষার্থীরা বলছে, প্রতিদিনই নড়ক (সাঁকো) পেড়িয়ে তাদের পাঠগ্রহণ করতে যেতে হয়।

স্থানীয়রা জানায়, গ্রামবাসীর অর্থায়নে ২০১৪ সালে দক্ষিণ কাজির হাওলা ও কাছিয়াবুনিয়া গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া আমলাভাঙা খালের ওপর এ বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। স্বেচ্ছাশ্রমে ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সাঁকোটি নির্মাণে তখন প্রায় ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এরপর একাধিবার মেরামত করা হলেও বর্তমানে সেই সাঁকোটি নড়বড়ে অবস্থা। গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে চলাচল করছে। তারা ওই সাঁকোটি পেড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করে।

দক্ষিণ কাজির হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সূচণা আক্তার বলে, ‘আমাগো বাড়ি খালের ওপাড় (কাছিয়াবুনিয়া)। হাক্কা (সাঁকো) দিয়া স্কুলে যাইতে আইতে খুব ডর করে। হাক্কার উপরে উটলেই (উঠলে) পা কাঁপে। মনেহয় বুঝি, এহনি পানিতে পইরা যামু।’ রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা আক্তার বলে, ‘আমার বাড়ি দক্ষিণ কাজির হাওলা গ্রামে। ঝুঁকির মধ্যে এই সাঁকোটি দিয়ে আসা-যাওয়া করছি। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এখানে একটি সেতু নির্মাণের জোড়ালো দাবি জানাচ্ছি।’

কাজির হাওলা ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁশের সাঁকোর কিছুটা দূরে জবু হাওলাদারের বাড়ির কাছে একটি সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’ রাঙ্গাবালী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন বলেন, ‘পাশ্ববর্তী একটি সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও জনগুরুত্বপূর্ণ ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল হাসান বলেন, ‘সার্ভে করতে হবে, আমরা বাঁশের সাঁকোর ওখানে লোক পাঠাবো। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

দুই গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো একমাত্র ভরসা

আপডেট টাইম : ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমলাভাঙা খাল। একপাড়ে দক্ষিণ কাজির হাওলা, অন্যপাড়ে কাছিয়াবুনিয়া গ্রাম। দুই গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষের যোগাযোগ ভরসা ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে বাঁশের সাঁকো। তাও এখন নড়বড়ে। তাতে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীদের চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। প্রতিদিন অন্তত এক হাজার মানুষ এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। এরমধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। ওই দুই গ্রামের অবস্থান পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নে। শিক্ষার্থীরা বলছে, প্রতিদিনই নড়ক (সাঁকো) পেড়িয়ে তাদের পাঠগ্রহণ করতে যেতে হয়।

স্থানীয়রা জানায়, গ্রামবাসীর অর্থায়নে ২০১৪ সালে দক্ষিণ কাজির হাওলা ও কাছিয়াবুনিয়া গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া আমলাভাঙা খালের ওপর এ বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। স্বেচ্ছাশ্রমে ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সাঁকোটি নির্মাণে তখন প্রায় ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এরপর একাধিবার মেরামত করা হলেও বর্তমানে সেই সাঁকোটি নড়বড়ে অবস্থা। গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে চলাচল করছে। তারা ওই সাঁকোটি পেড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করে।

দক্ষিণ কাজির হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সূচণা আক্তার বলে, ‘আমাগো বাড়ি খালের ওপাড় (কাছিয়াবুনিয়া)। হাক্কা (সাঁকো) দিয়া স্কুলে যাইতে আইতে খুব ডর করে। হাক্কার উপরে উটলেই (উঠলে) পা কাঁপে। মনেহয় বুঝি, এহনি পানিতে পইরা যামু।’ রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা আক্তার বলে, ‘আমার বাড়ি দক্ষিণ কাজির হাওলা গ্রামে। ঝুঁকির মধ্যে এই সাঁকোটি দিয়ে আসা-যাওয়া করছি। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এখানে একটি সেতু নির্মাণের জোড়ালো দাবি জানাচ্ছি।’

কাজির হাওলা ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁশের সাঁকোর কিছুটা দূরে জবু হাওলাদারের বাড়ির কাছে একটি সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’ রাঙ্গাবালী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন বলেন, ‘পাশ্ববর্তী একটি সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও জনগুরুত্বপূর্ণ ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল হাসান বলেন, ‘সার্ভে করতে হবে, আমরা বাঁশের সাঁকোর ওখানে লোক পাঠাবো। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।