ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে সেতুতে রডের বদলে বাঁশ দেওয়া হয়েছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দক্ষিণ সুনামগঞ্জের গ্রামীণ সড়কের একটি সেতুতে অ্যাপ্রোচ অংশ কিছুটা ভেঙে যাওয়ায় দু-একটি বাঁশ ভেতরে দেখা যাচ্ছে। প্রায় ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এই সেতু।

স্থানীয় লোকজন দাবি করছেন, সেতুতে রডের বদলে বাঁশ দেওয়া হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ করেছে এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ।

তবে ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দাবি, রডের পরিবর্তে কোথাও বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। বন্যার সময় কাজ করতে শাটার আটকানোর জন্য বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই বাঁশগুলো আর বের করা সম্ভব হয়নি, তাই কিছু বাঁশ দেখা যাচ্ছে।

এর আগেও দেশের বিভিন্ন সরকারি ভবন ও সড়ক নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। এবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এ ধরনের অভিযোগ উঠল।

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও-হাসকুঁড়ি রাস্তার জিল্লুর মিয়ার বাড়ির সমানের খালে ২৭ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সেতুর নির্মাণ শ্রমিক বীরগাঁও গ্রামের রফিজ আলী বলেন, গত বর্ষাকালে ঠিকাদার এই সেতুর কাজ শুরু করেছিলাম। ওখানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেছি। শুরু থেকেই অনিয়ম করেছেন ঠিকাদার। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি। সেতুতে ময়লা পাথর ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও রডের সঙ্গে বাঁশের ফলা ও ছোট ছোট বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণে সেতুর ঢালাই ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।

পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জুবায়েল আহমদ বলেন, সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল অংশে বাঁশ-রড দুটোই দেখা যায়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাহিদ মিয়া বলেন, সেতুতে একটিও বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। কাজ করার সময় পানি চলে আসায় শাটারের সঙ্গে বাঁশ দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঁশ বের করা সম্ভব হয়নি। সেতুর যে অংশ সন্দেহ হয়, সেটা ভেঙে দেখা যেতে পারে। বাঁশ ব্যবহার হয়ে থাকলে সব দায় আমি নেব।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন ভুঞা বলেন, সেতুতে রডের সঙ্গে কোনো ধরনের বাঁশ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কাজ করার সময় বন্যা ছিল। বন্যার সময় কাজ করতে দু’পাশের শাটার আটকানোর জন্য কিছু বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই বাঁশগুলো বের করা সম্ভব হয়নি, তাই কিছু বাঁশ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কোনো বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। একটি মহল অপপ্রচার করছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক জানান, কোনো সেতু বা কালভার্ট নির্মাণে বাঁশ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারও কাছ থেকে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বা কেউ বিষয়টি অবগত করেনি। খোঁজখবর নেওয়া হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

সুনামগঞ্জে সেতুতে রডের বদলে বাঁশ দেওয়া হয়েছে

আপডেট টাইম : ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দক্ষিণ সুনামগঞ্জের গ্রামীণ সড়কের একটি সেতুতে অ্যাপ্রোচ অংশ কিছুটা ভেঙে যাওয়ায় দু-একটি বাঁশ ভেতরে দেখা যাচ্ছে। প্রায় ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এই সেতু।

স্থানীয় লোকজন দাবি করছেন, সেতুতে রডের বদলে বাঁশ দেওয়া হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ করেছে এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ।

তবে ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দাবি, রডের পরিবর্তে কোথাও বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। বন্যার সময় কাজ করতে শাটার আটকানোর জন্য বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই বাঁশগুলো আর বের করা সম্ভব হয়নি, তাই কিছু বাঁশ দেখা যাচ্ছে।

এর আগেও দেশের বিভিন্ন সরকারি ভবন ও সড়ক নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। এবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এ ধরনের অভিযোগ উঠল।

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও-হাসকুঁড়ি রাস্তার জিল্লুর মিয়ার বাড়ির সমানের খালে ২৭ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সেতুর নির্মাণ শ্রমিক বীরগাঁও গ্রামের রফিজ আলী বলেন, গত বর্ষাকালে ঠিকাদার এই সেতুর কাজ শুরু করেছিলাম। ওখানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেছি। শুরু থেকেই অনিয়ম করেছেন ঠিকাদার। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি। সেতুতে ময়লা পাথর ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও রডের সঙ্গে বাঁশের ফলা ও ছোট ছোট বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণে সেতুর ঢালাই ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।

পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জুবায়েল আহমদ বলেন, সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল অংশে বাঁশ-রড দুটোই দেখা যায়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাহিদ মিয়া বলেন, সেতুতে একটিও বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। কাজ করার সময় পানি চলে আসায় শাটারের সঙ্গে বাঁশ দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঁশ বের করা সম্ভব হয়নি। সেতুর যে অংশ সন্দেহ হয়, সেটা ভেঙে দেখা যেতে পারে। বাঁশ ব্যবহার হয়ে থাকলে সব দায় আমি নেব।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন ভুঞা বলেন, সেতুতে রডের সঙ্গে কোনো ধরনের বাঁশ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কাজ করার সময় বন্যা ছিল। বন্যার সময় কাজ করতে দু’পাশের শাটার আটকানোর জন্য কিছু বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই বাঁশগুলো বের করা সম্ভব হয়নি, তাই কিছু বাঁশ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কোনো বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। একটি মহল অপপ্রচার করছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক জানান, কোনো সেতু বা কালভার্ট নির্মাণে বাঁশ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারও কাছ থেকে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বা কেউ বিষয়টি অবগত করেনি। খোঁজখবর নেওয়া হবে।