ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ইলিশের দাপটেও চড়া অন্য মাছের দাম

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ প্রায় এক মাস ধরে রাজধানীর মাছের বাজার অনেকটাই ইলিশের দখলে। সব বাজারেই ভরপুর মিলছে বড় ইলিশ। ফলে ক্রেতারাও অনেকটা ইলিশের দিকে ঝুঁকছেন। এরপরও কমছে না অন্য মাছের দাম। আগের মতোই সব ধরনের মাছ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া ও খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইলিশ মাছ পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। তাই দাম বেশি হওয়ার পরও একটি শ্রেণি ইলিশের দিকে ঝুঁকছে। দিন যত যাচ্ছে বাজারে ইলিশের সরবরাহ ততো বাড়ছে। তবে অন্য মাছের সরবরাহ কমছে। এ কারণে হয়তো মাছের দাম কমছে না। ব্যবসায়ীদের মতে, এক বছরের বেশ সময় ধরে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মাছের উৎপাদন কম হয়েছে। মাছের দাম চড়া থাকার পিছনে এটি একটি অন্যতম কারণ। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙ্গাস। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। স্বস্তি দিচ্ছে না ছোট মাছও। কাচ্চি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। কয়েক মাস ধরেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। এদিকে বাজার ভেদে ১ কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা কেজি। আর পিস বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১৫০০ টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্র হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকার মধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরেই বড় ইলিশ এমন দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এক মাস আগে এসব ইলিশ দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হয়। বড় ইলিশের পাশাপাশি মাসের হিসাবে দাম কমেছে ছোট ও মাঝারি ইলিশের। তবে সপ্তাহের হিসাবে ছোট ও মাঝারি ইলিশের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকার মধ্যে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে। আর ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আমেনা খাতুন বলেন, ‘মানসে (মানুষে) কয় ইলিশের দাম কমছে। কই দাম তো কম দেহিনা (দেখি না)। হাজার টাকা কেজি চায়। এটা ক্যামনে কম দাম হয়? আমগোর মতো মানসের কি এই দামে ইলিশ কেনন সম্ভব?’
এ সময় কিছুটা বিরক্তির ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ইলিশ মাছ বড় লোকের খাবার। গরিবের কপালে এখন আর ইলিশ নেই। এখন ইলিশ কেনা মানেই বিলাসিতা করা। শুধু কি ইলিশ সব মাছের দাম চড়া, পাঙ্গাস-তেলাপিয়া মাছের কেজি চায় ১৭০ টাকা। রুই মাছ ৩০০ টাকা কেজি। এমন দামে গরিব মানুষ কীভাবে মাছ কিনে খাবে বলেন। রামপুরার বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, মাছে-ভাতে বাঙালি- এ কথা বলার দিন শেষ হয়ে আসছে। মাছের যে দাম অনেকেই দেখবেন নিয়মিত মাছ কেনে না। তেলাপিয়া, পাঙ্গাস ছাড়া ৩০০ টাকা কেজির নিচে এখন কোনো ভালো মাছ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, বাজারে গিয়ে যে দিকেই তাকায় শুধু ইলিশ আর ইলিশ দেখি। বড় ছোট সব ধরনের ইলিশ বাজারে ভরপুর। কিন্তু কিনতে যান হাজার টাকার নিচে ভালো ইলিশ পাবেন না। এক হাজার টাকা দিয়ে এক কেজি মাছ কেনা কয়জনের পক্ষে সম্ভব? রামপুরার মাছ ব্যবসায়ী রাজীব বলেন, বাজারে এখন ভরপুর ইলিশ। এ কারণে দাম কিছুটা কমেছে। তবে ভালো ইলিশ হাজার টাকার নিচে কেজি পাওয়া যাবে না। আমাদের ধারণা, কয়েকদিন পর ইলিশের দাম কিছুটা কমতে পারে। তখন ইলিশের সঙ্গে সঙ্গে অন্য মাছের দামও কমবে। মালিবাগের ব্যবসায়ী জিয়াদুল বলেন, যে ব্যক্তি হাজার টাকা দিয়ে ইলিশ মাছে কেজি কেনে, সে নিশ্চয় তেলাপিয়া-পাঙ্গাস কিনে খায় না। সুতরাং ইলিশ ও তেলাপিয়া-পাঙ্গাসের ক্রেতা শ্রেণি আলাদা। তাছাড়া বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও অন্য মাছের সরবরাহ কমেছে। এসব কারণেই ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও অন্য মাছের দাম কমেনি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, স্বস্তি নেই ঢাকার বাতাসে

ইলিশের দাপটেও চড়া অন্য মাছের দাম

আপডেট টাইম : ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ প্রায় এক মাস ধরে রাজধানীর মাছের বাজার অনেকটাই ইলিশের দখলে। সব বাজারেই ভরপুর মিলছে বড় ইলিশ। ফলে ক্রেতারাও অনেকটা ইলিশের দিকে ঝুঁকছেন। এরপরও কমছে না অন্য মাছের দাম। আগের মতোই সব ধরনের মাছ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া ও খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইলিশ মাছ পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। তাই দাম বেশি হওয়ার পরও একটি শ্রেণি ইলিশের দিকে ঝুঁকছে। দিন যত যাচ্ছে বাজারে ইলিশের সরবরাহ ততো বাড়ছে। তবে অন্য মাছের সরবরাহ কমছে। এ কারণে হয়তো মাছের দাম কমছে না। ব্যবসায়ীদের মতে, এক বছরের বেশ সময় ধরে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মাছের উৎপাদন কম হয়েছে। মাছের দাম চড়া থাকার পিছনে এটি একটি অন্যতম কারণ। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙ্গাস। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। স্বস্তি দিচ্ছে না ছোট মাছও। কাচ্চি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। কয়েক মাস ধরেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। এদিকে বাজার ভেদে ১ কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা কেজি। আর পিস বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১৫০০ টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্র হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকার মধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরেই বড় ইলিশ এমন দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এক মাস আগে এসব ইলিশ দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হয়। বড় ইলিশের পাশাপাশি মাসের হিসাবে দাম কমেছে ছোট ও মাঝারি ইলিশের। তবে সপ্তাহের হিসাবে ছোট ও মাঝারি ইলিশের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকার মধ্যে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে। আর ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আমেনা খাতুন বলেন, ‘মানসে (মানুষে) কয় ইলিশের দাম কমছে। কই দাম তো কম দেহিনা (দেখি না)। হাজার টাকা কেজি চায়। এটা ক্যামনে কম দাম হয়? আমগোর মতো মানসের কি এই দামে ইলিশ কেনন সম্ভব?’
এ সময় কিছুটা বিরক্তির ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ইলিশ মাছ বড় লোকের খাবার। গরিবের কপালে এখন আর ইলিশ নেই। এখন ইলিশ কেনা মানেই বিলাসিতা করা। শুধু কি ইলিশ সব মাছের দাম চড়া, পাঙ্গাস-তেলাপিয়া মাছের কেজি চায় ১৭০ টাকা। রুই মাছ ৩০০ টাকা কেজি। এমন দামে গরিব মানুষ কীভাবে মাছ কিনে খাবে বলেন। রামপুরার বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, মাছে-ভাতে বাঙালি- এ কথা বলার দিন শেষ হয়ে আসছে। মাছের যে দাম অনেকেই দেখবেন নিয়মিত মাছ কেনে না। তেলাপিয়া, পাঙ্গাস ছাড়া ৩০০ টাকা কেজির নিচে এখন কোনো ভালো মাছ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, বাজারে গিয়ে যে দিকেই তাকায় শুধু ইলিশ আর ইলিশ দেখি। বড় ছোট সব ধরনের ইলিশ বাজারে ভরপুর। কিন্তু কিনতে যান হাজার টাকার নিচে ভালো ইলিশ পাবেন না। এক হাজার টাকা দিয়ে এক কেজি মাছ কেনা কয়জনের পক্ষে সম্ভব? রামপুরার মাছ ব্যবসায়ী রাজীব বলেন, বাজারে এখন ভরপুর ইলিশ। এ কারণে দাম কিছুটা কমেছে। তবে ভালো ইলিশ হাজার টাকার নিচে কেজি পাওয়া যাবে না। আমাদের ধারণা, কয়েকদিন পর ইলিশের দাম কিছুটা কমতে পারে। তখন ইলিশের সঙ্গে সঙ্গে অন্য মাছের দামও কমবে। মালিবাগের ব্যবসায়ী জিয়াদুল বলেন, যে ব্যক্তি হাজার টাকা দিয়ে ইলিশ মাছে কেজি কেনে, সে নিশ্চয় তেলাপিয়া-পাঙ্গাস কিনে খায় না। সুতরাং ইলিশ ও তেলাপিয়া-পাঙ্গাসের ক্রেতা শ্রেণি আলাদা। তাছাড়া বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও অন্য মাছের সরবরাহ কমেছে। এসব কারণেই ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও অন্য মাছের দাম কমেনি।