ঢাকার জাতীয় জাদুঘর, জাতীয় গ্রন্থাগার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) ভবন ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন বলে তার উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “নতুন স্থাপনাগুলো হবে আন্তর্জাতিক মানের, নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। সেখানে আধুনিক সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে।”ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিএসসি এলাকায় মেট্রোরেলের স্টেশন করা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
“উনি বলেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কারণ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয় এমন কিছু হবে না। মেট্রোরেল হবে আধুনিক প্রযুক্তির কম্পিউটারাইজড ইলেকট্রিক ট্রেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের অংশটুকু সাউন্ড প্রুফ হবে। শব্দ করে চলে এমন ট্রেন হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করবে, লাইব্রেরিতে যারা পড়বে সেখানে কোনো শব্দ আসবে না।”
দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সার্বিক সুযোগ সুবিধার কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের রুট নিজে ‘ঠিক করে দিয়েছেন’ বলেও সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে জানান।
হাসান জাহিদ তুষার বলেন, “উনি বলেছেন, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা স্টেশনগুলো সর্বসাধারণের সুবিধা নিশ্চিত করবে। একই সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেমের রোগীদের কথা বিবেচনা করে শাহবাগে একটি স্টেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে টিএসসিতে একটি প্ল্যাটফর্ম করা হবে। এভাবে স্টেশনগুলো ডিজাইন করা হয়েছে প্রতি এক কিলোমিটার পর পর।
“টিএসসি এলাকায় যে প্ল্যাটফর্ম হবে সেটা বড় প্ল্যাটফর্ম হবে। যেন একসাথে অনেক ছাত্র-ছাত্রী এটা ব্যবহার করতে পারে। শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপার এবং বইমেলার কথা বিবেচনা করে বাংলা একাডেমির সামনে একটা বড় আন্ডারপাস করে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পুরো ঢাকাকে মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। কোথাও আন্ডারগ্রাউন্ড, কোথাও গ্রাউন্ডে আবার কোথাও এলিভেটেড। ঢাকার চারপাশে এলিভেটেড সার্কুলার রোড করা হবে।”
জাতীয় জাদুঘর ও জাতীয় গ্রন্থাগার একই সীমানার মধ্যে আনার পরিকল্পনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এই দুটো স্থাপনা একই সীমানায় নিয়ে আসা হবে। এখানে দৃষ্টিনন্দন বড় ভবন করা হবে। যেন মানুষ পড়াশোনার জন্য এখানে আসতে উৎসাহিত হয়। ওই সব ভবন এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ বড় হবে। ওখানে যে পুকুর আছে সেটাকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাও করতে পারে।”
এরইমধ্যে এই প্রকল্পের নকশা তৈরি হয়েছে এবং তা দেখে দিয়েছেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে টিএসসি নতুন করে গড়ে তোলা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।