ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেমরায় ব্যবসায়ীর চোখ উপরে ফেলায় ৫ আসামির যাবজ্জীবন

রাজধানীর ডেমরার বড় ভাঙ্গা এলাকায় ১৬ বছর আগের ব্যবসায়ী রাজীবুল আলম রাজীবকে অপহরণ করে দুই চোখ তুলে ফেলার মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামির ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। যা অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বিজয় ওরফে শামীম আহম্মেদ, দ্বীন ইসলাম, মো. ইকবাল, নাছু ওরফে নাসির উদ্দিন ও রাজিব ওরফে মোটা রাজিব।

রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর চার আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস প্রাপ্তরা হলেন, রিপন, রাশেদ, তপন ও রাসেল ওরফে রোসেল ওরফে মমিতুর রহমান।

রায় ঘোষণার সময় আসামি রাশেদ, রিপন ও ইকবাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। মামলায় জামিনে থাকা অন্যান্য আসামিরাও অনুপস্থিত ছিলেন। মামলার প্রধান আসামি রুবেল ২০১০ সালের ১৬ মার্চ র‌্যাবের ক্রসফায়ার নিহত হয় বলে জানা গেছে।

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ভিকটিম রাজীবুল বলেন, ‌‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। আমার চোখ উপড়ানোর ঘটনার সঙ্গে ১০ জন আসামি জড়িত ছিলেন। কিন্তু আদালত চারজনকে খালাস দিয়েছে। তাই আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

রায়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে রাজীবুলের স্ত্রী মলি আক্তার বলেন, ‘১৬ বছর আগে আমার স্বামীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়। সন্তানসহ কতটা কষ্ট নিয়ে আমরা জীবনযাপন করছি। অথচ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা খালাস পেয়ে গেল। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব। ’

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে রিকশাযোগে ভিকটিম রাজীবুল আলম ডেমরায় বোর্ড মিল এলাকা থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। বড় ভঙ্গা এলাকায় রিকশা আসার পর আসামিরা রাজীবুল আলম রাজীবকে অপহরণ করে একটি ফাঁকা প্লটে নিয়ে যায়। এরপর তার হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ উপড়ে ফেলে। এই ঘটনায় ঘটনার পর দিন ২৮ নভেম্বর রাজীবুলের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ডেমরা থানার পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলাটি বিচার চলাকালীন সময়ে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ডেমরায় ব্যবসায়ীর চোখ উপরে ফেলায় ৫ আসামির যাবজ্জীবন

আপডেট টাইম : ১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজধানীর ডেমরার বড় ভাঙ্গা এলাকায় ১৬ বছর আগের ব্যবসায়ী রাজীবুল আলম রাজীবকে অপহরণ করে দুই চোখ তুলে ফেলার মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামির ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। যা অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বিজয় ওরফে শামীম আহম্মেদ, দ্বীন ইসলাম, মো. ইকবাল, নাছু ওরফে নাসির উদ্দিন ও রাজিব ওরফে মোটা রাজিব।

রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর চার আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস প্রাপ্তরা হলেন, রিপন, রাশেদ, তপন ও রাসেল ওরফে রোসেল ওরফে মমিতুর রহমান।

রায় ঘোষণার সময় আসামি রাশেদ, রিপন ও ইকবাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। মামলায় জামিনে থাকা অন্যান্য আসামিরাও অনুপস্থিত ছিলেন। মামলার প্রধান আসামি রুবেল ২০১০ সালের ১৬ মার্চ র‌্যাবের ক্রসফায়ার নিহত হয় বলে জানা গেছে।

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ভিকটিম রাজীবুল বলেন, ‌‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। আমার চোখ উপড়ানোর ঘটনার সঙ্গে ১০ জন আসামি জড়িত ছিলেন। কিন্তু আদালত চারজনকে খালাস দিয়েছে। তাই আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

রায়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে রাজীবুলের স্ত্রী মলি আক্তার বলেন, ‘১৬ বছর আগে আমার স্বামীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়। সন্তানসহ কতটা কষ্ট নিয়ে আমরা জীবনযাপন করছি। অথচ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা খালাস পেয়ে গেল। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব। ’

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে রিকশাযোগে ভিকটিম রাজীবুল আলম ডেমরায় বোর্ড মিল এলাকা থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। বড় ভঙ্গা এলাকায় রিকশা আসার পর আসামিরা রাজীবুল আলম রাজীবকে অপহরণ করে একটি ফাঁকা প্লটে নিয়ে যায়। এরপর তার হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ উপড়ে ফেলে। এই ঘটনায় ঘটনার পর দিন ২৮ নভেম্বর রাজীবুলের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ডেমরা থানার পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলাটি বিচার চলাকালীন সময়ে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।