ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারাবিধি পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন : আনিসুল হক

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ব্রিটিশ শাসনামলে প্রণয়ন করা কারাবিধি পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা হচ্ছে বিনা বিচারে কেউ যেন কারাগারে আটক না থাকেন এবং মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তার এই নির্দেশনার আলোকে সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ করে কারাবন্দিদের বিচার দ্রুততম সময়ে শেষ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

দরিদ্র কারাবন্দিদের দুর্দশা লাঘবে প্রয়োজনীয়, স্থায়িত্বশীল এবং পরিবর্তিত আইনি কাঠামো তৈরি করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মসূচি জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কারাবন্দিদের মামলায় যথাসময়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে আইনগত সহায়তা দেয়াসহ প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন প্রক্রিয়া গ্রহণেও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। কারাগারকে শোধনাগারে পরিণত করার জন্য আধুনিক কারা আইন ও পরিবর্তিত কারাবিধি প্রণয়ন করা হচ্ছে।’

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশের ৬৪টি জেলায় জেলা জজের নেতৃত্বে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয় জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির পাশাপাশি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং চৌকি আদালতসহ সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করে সেখানে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।’

এ ছাড়া দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে শ্রমিক আইন সহায়তা সেল স্থাপন করে সেখানে সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এই আইনি সহায়তা কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সকল শ্রম আদালতে চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।

‘আমরা প্রত্যেক জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে কার্যকর, গতিশীল ও সেবাবান্ধব করতে একজন করে সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজকে নিয়োগ করেছি। তারা আইনগত সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি বিনামূল্যে আইনগত পরামর্শ প্রদান এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যকার বিরোধ বা মামলা বিকল্প বিরোধ পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করছেন।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখন বিশ্বের উন্নত দেশের মতোই অফিস চলাকালীন আইনি পরামর্শের জন্য দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থায় স্থাপিত টোল ফ্রি জাতীয় হেল্প লাইন ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে আইনি সেবা নিতে পারছেন।

সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে শনিবার জাতীয়ভাবে আইনগত সহায়তা দিবস পালন করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এবারের প্রতিপাদ্য হলো-উন্নয়ন আর আইনের শাসনে এগিয়ে চলছে দেশ/লিগ্যাল এইডের সুফল পাচ্ছে সারা বাংলাদেশ।’

দেশের বিচারক, সকল আইনজীবী, এনজিও কর্মী ও সুশীল সমাজ সরকারের এ আইনগত সেবা দেয়ার কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে এই উদ্যোগকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন আনিসুল হক।

বিনামূল্যে সরকারের আইনগত সহায়তা নেয়া তিন ব্যক্তি তাদের অভিজ্ঞতা তুল ধরেন অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে সরকারের আইনগত সহায়তার সাফল্যের চিত্র তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া আইনগত সহায়তা নিয়ে সচেতনতামূলক তিনটি টিভি বিজ্ঞাপন উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।

আইনগত সহায়তা দিবসের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনের পর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে আইনগত সহায়তার বিষয়ক মেলা ও রক্তদান কর্মসূচিও উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।

অনুষ্ঠান আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক ও জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. জাফরোল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

কারাবিধি পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন : আনিসুল হক

আপডেট টাইম : ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ব্রিটিশ শাসনামলে প্রণয়ন করা কারাবিধি পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা হচ্ছে বিনা বিচারে কেউ যেন কারাগারে আটক না থাকেন এবং মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তার এই নির্দেশনার আলোকে সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ করে কারাবন্দিদের বিচার দ্রুততম সময়ে শেষ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

দরিদ্র কারাবন্দিদের দুর্দশা লাঘবে প্রয়োজনীয়, স্থায়িত্বশীল এবং পরিবর্তিত আইনি কাঠামো তৈরি করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মসূচি জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কারাবন্দিদের মামলায় যথাসময়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে আইনগত সহায়তা দেয়াসহ প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন প্রক্রিয়া গ্রহণেও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। কারাগারকে শোধনাগারে পরিণত করার জন্য আধুনিক কারা আইন ও পরিবর্তিত কারাবিধি প্রণয়ন করা হচ্ছে।’

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশের ৬৪টি জেলায় জেলা জজের নেতৃত্বে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয় জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির পাশাপাশি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং চৌকি আদালতসহ সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করে সেখানে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।’

এ ছাড়া দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে শ্রমিক আইন সহায়তা সেল স্থাপন করে সেখানে সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এই আইনি সহায়তা কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সকল শ্রম আদালতে চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।

‘আমরা প্রত্যেক জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে কার্যকর, গতিশীল ও সেবাবান্ধব করতে একজন করে সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজকে নিয়োগ করেছি। তারা আইনগত সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি বিনামূল্যে আইনগত পরামর্শ প্রদান এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যকার বিরোধ বা মামলা বিকল্প বিরোধ পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করছেন।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখন বিশ্বের উন্নত দেশের মতোই অফিস চলাকালীন আইনি পরামর্শের জন্য দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থায় স্থাপিত টোল ফ্রি জাতীয় হেল্প লাইন ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে আইনি সেবা নিতে পারছেন।

সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে শনিবার জাতীয়ভাবে আইনগত সহায়তা দিবস পালন করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এবারের প্রতিপাদ্য হলো-উন্নয়ন আর আইনের শাসনে এগিয়ে চলছে দেশ/লিগ্যাল এইডের সুফল পাচ্ছে সারা বাংলাদেশ।’

দেশের বিচারক, সকল আইনজীবী, এনজিও কর্মী ও সুশীল সমাজ সরকারের এ আইনগত সেবা দেয়ার কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে এই উদ্যোগকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন আনিসুল হক।

বিনামূল্যে সরকারের আইনগত সহায়তা নেয়া তিন ব্যক্তি তাদের অভিজ্ঞতা তুল ধরেন অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে সরকারের আইনগত সহায়তার সাফল্যের চিত্র তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া আইনগত সহায়তা নিয়ে সচেতনতামূলক তিনটি টিভি বিজ্ঞাপন উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।

আইনগত সহায়তা দিবসের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনের পর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে আইনগত সহায়তার বিষয়ক মেলা ও রক্তদান কর্মসূচিও উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।

অনুষ্ঠান আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক ও জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. জাফরোল হাসান উপস্থিত ছিলেন।