ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়ন্ত্রণহীন সড়ক দুর্ঘটনা এ ভয়াবহতা কি চলতেই থাকবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দেশে সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপকতা যেন কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। গত মঙ্গলবার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছিলেন।

এ সময় তাদের বহনকারী একটি মিনিবাস দুর্ঘটনাকবলিত হলে একজন শিক্ষিকার বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আহত হন আরও অন্তত ১৪ শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা।

সড়ককেন্দ্রিক দুঃসংবাদের এখানেই শেষ নয়; পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এদিন সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী , জয়পুরহাট, মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুরে বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন।

আমরা গভীর বেদনা ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি- নানা উদ্যোগের পরও সড়কে মৃত্যুর হার কমছে না; বরং প্রতিদিন বড় হচ্ছে ‘মৃত্যুর মিছিল’, যা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত, অসহনীয়।

প্রশ্ন হল, আমাদের প্রতিদিন যদি এমন বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এত আন্দোলন, এত সুপারিশ-পরামর্শ এবং নতুন প্রবর্তিত আইন কোন্ কাজে লাগল? সাধারণত দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালকের খামখেয়ালিপনা ও নিয়ম না মেনে গাড়ি চালনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহনকারী মিনিবাসটির চালকের ক্ষেত্রেও একই বিষয় লক্ষ করা গেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের পরামর্শ ও সুপারিশ করা হলেও তা যে অরণ্যে রোদনে পর্যবসিত হচ্ছে, দেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা তারই প্রমাণ।

সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে এ ব্যাপারে ইতিবাচক চিন্তা ও সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি। আমাদের সড়ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকলেও দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কারও কোনো কার্যকর ভূমিকা লক্ষ করা যায় না।

এ কথা সর্বজনবিদিত, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খলা। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাপটে দোষী চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

অবশ্য আইন মানার ক্ষেত্রে পথচারীরাও সচেতন নন। ঝুঁকি নিয়ে বাসে ওঠানামা ছাড়াও জেব্রাক্রসিং ও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে চলন্ত বাসের সামনে হাত উঁচিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হওয়া একটি সাধারণ বিষয় পরিণত হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের প্রয়োগ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ চালক এবং সড়কে চলাচল উপযোগী ভালো মানের যানবাহন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে একইসঙ্গে আমাদেরও সচেতন হতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নিয়ন্ত্রণহীন সড়ক দুর্ঘটনা এ ভয়াবহতা কি চলতেই থাকবে

আপডেট টাইম : ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দেশে সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপকতা যেন কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। গত মঙ্গলবার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছিলেন।

এ সময় তাদের বহনকারী একটি মিনিবাস দুর্ঘটনাকবলিত হলে একজন শিক্ষিকার বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আহত হন আরও অন্তত ১৪ শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা।

সড়ককেন্দ্রিক দুঃসংবাদের এখানেই শেষ নয়; পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এদিন সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী , জয়পুরহাট, মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুরে বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন।

আমরা গভীর বেদনা ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি- নানা উদ্যোগের পরও সড়কে মৃত্যুর হার কমছে না; বরং প্রতিদিন বড় হচ্ছে ‘মৃত্যুর মিছিল’, যা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত, অসহনীয়।

প্রশ্ন হল, আমাদের প্রতিদিন যদি এমন বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এত আন্দোলন, এত সুপারিশ-পরামর্শ এবং নতুন প্রবর্তিত আইন কোন্ কাজে লাগল? সাধারণত দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালকের খামখেয়ালিপনা ও নিয়ম না মেনে গাড়ি চালনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহনকারী মিনিবাসটির চালকের ক্ষেত্রেও একই বিষয় লক্ষ করা গেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের পরামর্শ ও সুপারিশ করা হলেও তা যে অরণ্যে রোদনে পর্যবসিত হচ্ছে, দেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা তারই প্রমাণ।

সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে এ ব্যাপারে ইতিবাচক চিন্তা ও সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি। আমাদের সড়ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকলেও দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কারও কোনো কার্যকর ভূমিকা লক্ষ করা যায় না।

এ কথা সর্বজনবিদিত, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খলা। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাপটে দোষী চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

অবশ্য আইন মানার ক্ষেত্রে পথচারীরাও সচেতন নন। ঝুঁকি নিয়ে বাসে ওঠানামা ছাড়াও জেব্রাক্রসিং ও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে চলন্ত বাসের সামনে হাত উঁচিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হওয়া একটি সাধারণ বিষয় পরিণত হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের প্রয়োগ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ চালক এবং সড়কে চলাচল উপযোগী ভালো মানের যানবাহন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে একইসঙ্গে আমাদেরও সচেতন হতে হবে।