ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রস্তাব আন্তর্জাতিক ভূমিকা জোরদার করা প্রয়োজন

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের আবাসস্থলে ফেরত যেতে উৎসাহিত করতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সম্প্রতি যে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে তা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশটি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আশা করব, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেবে মিয়ানমার।

এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হল। প্রস্তাবে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার আওতায় এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত ও জোরদার করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) চলমান প্রক্রিয়া ও গাম্বিয়ার ভূমিকাকে স্বাগত জানানো হয়। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এ অবস্থায় আইসিজে থেকে যে রায় প্রদান করা হবে, তা কার্যকর করতে মিয়ানমার যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়, সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।

সম্প্রতি আইসিজের অন্তর্বর্তী রায়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা রোধে মিয়ানমারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেয়া হয়েছে। এ রায়ের পর মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কাজেই আইসিজের চূড়ান্ত আদেশ বাস্তবায়নে যাতে মিয়ানমার কোনো রকম গড়িমসি না করে সে জন্য বাংলাদেশকে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশকে মিয়ানমার, চীন, রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি আরও শক্তিশালী করতে হবে।

এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গেও বহুপক্ষীয় কূটনৈতিক কৌশল অবলম্বন করতে হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে চীন ও ভারতের সঙ্গে মিয়ানমারের সখ্যের বিষয়টি বহুল আলোচিত। এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সখ্যের বিষয়টিও বারবার আলোচনায় আসে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন, রাশিয়া ও ভারতের সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশগুলো যাতে বাণিজ্যিক ও অন্যান্য স্বার্থের চেয়ে এক্ষেত্রে নৈতিক ও মানবিক বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়, সে লক্ষ্যে আমাদের জোর প্রয়াস চালাতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জাতিসংঘে রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রস্তাব আন্তর্জাতিক ভূমিকা জোরদার করা প্রয়োজন

আপডেট টাইম : ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুন ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের আবাসস্থলে ফেরত যেতে উৎসাহিত করতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সম্প্রতি যে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে তা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশটি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আশা করব, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেবে মিয়ানমার।

এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হল। প্রস্তাবে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার আওতায় এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত ও জোরদার করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) চলমান প্রক্রিয়া ও গাম্বিয়ার ভূমিকাকে স্বাগত জানানো হয়। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এ অবস্থায় আইসিজে থেকে যে রায় প্রদান করা হবে, তা কার্যকর করতে মিয়ানমার যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়, সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।

সম্প্রতি আইসিজের অন্তর্বর্তী রায়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা রোধে মিয়ানমারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেয়া হয়েছে। এ রায়ের পর মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কাজেই আইসিজের চূড়ান্ত আদেশ বাস্তবায়নে যাতে মিয়ানমার কোনো রকম গড়িমসি না করে সে জন্য বাংলাদেশকে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশকে মিয়ানমার, চীন, রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি আরও শক্তিশালী করতে হবে।

এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গেও বহুপক্ষীয় কূটনৈতিক কৌশল অবলম্বন করতে হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে চীন ও ভারতের সঙ্গে মিয়ানমারের সখ্যের বিষয়টি বহুল আলোচিত। এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সখ্যের বিষয়টিও বারবার আলোচনায় আসে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন, রাশিয়া ও ভারতের সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশগুলো যাতে বাণিজ্যিক ও অন্যান্য স্বার্থের চেয়ে এক্ষেত্রে নৈতিক ও মানবিক বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়, সে লক্ষ্যে আমাদের জোর প্রয়াস চালাতে হবে।