বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ এক সময় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর ঘন ঘন গণমাধ্যমের শিরোনাম হতো। এরপর দেশের কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও দুর্নীতি-অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে নানারকম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক স্বার্থে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি/প্রবিধি যথাযথ প্রতিপালনের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য ইউজিসি থেকে পাঠানো পৃথক চিঠিতে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বস্তুত বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষাপটে ইউজিসির পক্ষ থেকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিকে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে গবেষণা কার্যক্রমটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় কমিশন এ কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এ খাতে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এ অর্থ গবেষণা কার্যক্রমে ব্যয় করার নিয়ম থাকলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটছে। বিষয়টি দুঃখজনক। গবেষণা খাতের বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে কী করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশেষভাবে তৎপর হতে হবে।
করোনার তাণ্ডবে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে কমিশন ও ভিসিদের মধ্যে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যাতে সব শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারে, সে লক্ষ্যে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধাসহ শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে ডেটা সরবরাহ এবং সহজ শর্তে ঋণ বা মঞ্জুরির আওতায় স্মার্টফোন সুবিধার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য ইউজিসি থেকে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। যেসব শিক্ষার্থীর ডিভাইস ক্রয়ের আর্থিক সক্ষমতা নেই, তারা যাতে সময়মতো ডিভাইসসহ অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
বেশকিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় ভাগ বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে না। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু শর্ত আরোপ করেছে, যা বিদ্যমান নিয়ম ব্যত্যয়ের শামিল। এ অনিয়মের বিষয়টি ইউজিসির নজরে এসেছে।
কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য নিজেদের আত্মীয়স্বজনের সন্তানকে দরিদ্র দেখিয়ে বিনা মূল্যে পড়াচ্ছেন। আবার কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে অধ্যয়ন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যমান নিয়ম ভঙ্গ করে মুক্তিযোদ্ধা ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বঞ্চিত করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।