ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনীল অর্থনীতিবিষয়ক কৌশল

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সুনীল বা সমুদ্র অর্থনীতির (ব্লু-ইকোনমি) সুফল ঘরে তুলতে ১০ ধরনের কৌশল নির্ধারণ করেছে সরকারের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)।

বিলম্বে হলেও এটি একটি ভালো পদক্ষেপ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে যথাক্রমে ২০১২ ও ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি হয়েছে।

এর ফলে বাংলাদেশ তার সমুদ্রসীমা অংশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মহীসোপানের সমন্বয়ে বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকার ওপর স্বত্বাধিকার লাভ করেছে। এর মধ্য দিয়ে সমুদ্র অর্থনীতি ঘিরে দেশের উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর উদ্যোগ। বলা যায়, কেবল সভা-সেমিনারে আলোচনার মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রয়েছে।

সুনীল অর্থনীতি হল সমুদ্র সম্পদনির্ভর অর্থনীতি। সাগরের জলরাশি ও এর তলদেশের বিশাল সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতি। বস্তুত সাগর, মহাসাগর ও উপকূলের সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহার করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিচালিত কার‌্যাবলির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এ অর্থনীতি। এ ক্ষেত্রে বিশাল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। সুনীল অর্থনীতি সংক্রান্ত সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে কৌশল হিসেবে বলা হয়েছে- সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে একটি সবল নীতিকাঠামো গঠন করা প্রয়োজন। এ কাজ সম্পাদনের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এই নীতিকাঠামো অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদে পেশ করা হবে। সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে বিনিয়োগের বেশিরভাগই আসতে হবে বেসরকারি খাত থেকে। নতুন জ্ঞান, প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ

আনার জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইয়ের ভূমিকা বিস্তৃত করা হবে ইত্যাদি।

আমরা আশা করব, সুনীল অর্থনীতির সুফল ঘরে তোলার উদ্যোগ কেবল পরিকল্পনা ও কৌশলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এগুলোর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তা না হলে আমাদের সমুদ্রসম্পদ অন্য দেশে চলে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে সমুদ্র নানাভাবে অবদান রেখে চলেছে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগ সমুদ্রনির্ভর। অস্ট্রেলিয়া সমুদ্রসম্পদ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আয় করে থাকে। বাংলাদেশ জনবহুল হওয়ায় সমুদ্রসম্পদ আহরণের প্রয়োজনীয়তা আমাদের আরও বেশি। সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই কাম্য

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সুনীল অর্থনীতিবিষয়ক কৌশল

আপডেট টাইম : ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সুনীল বা সমুদ্র অর্থনীতির (ব্লু-ইকোনমি) সুফল ঘরে তুলতে ১০ ধরনের কৌশল নির্ধারণ করেছে সরকারের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)।

বিলম্বে হলেও এটি একটি ভালো পদক্ষেপ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে যথাক্রমে ২০১২ ও ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি হয়েছে।

এর ফলে বাংলাদেশ তার সমুদ্রসীমা অংশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মহীসোপানের সমন্বয়ে বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকার ওপর স্বত্বাধিকার লাভ করেছে। এর মধ্য দিয়ে সমুদ্র অর্থনীতি ঘিরে দেশের উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর উদ্যোগ। বলা যায়, কেবল সভা-সেমিনারে আলোচনার মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রয়েছে।

সুনীল অর্থনীতি হল সমুদ্র সম্পদনির্ভর অর্থনীতি। সাগরের জলরাশি ও এর তলদেশের বিশাল সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতি। বস্তুত সাগর, মহাসাগর ও উপকূলের সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহার করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিচালিত কার‌্যাবলির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এ অর্থনীতি। এ ক্ষেত্রে বিশাল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। সুনীল অর্থনীতি সংক্রান্ত সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে কৌশল হিসেবে বলা হয়েছে- সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে একটি সবল নীতিকাঠামো গঠন করা প্রয়োজন। এ কাজ সম্পাদনের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এই নীতিকাঠামো অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদে পেশ করা হবে। সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে বিনিয়োগের বেশিরভাগই আসতে হবে বেসরকারি খাত থেকে। নতুন জ্ঞান, প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ

আনার জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইয়ের ভূমিকা বিস্তৃত করা হবে ইত্যাদি।

আমরা আশা করব, সুনীল অর্থনীতির সুফল ঘরে তোলার উদ্যোগ কেবল পরিকল্পনা ও কৌশলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এগুলোর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তা না হলে আমাদের সমুদ্রসম্পদ অন্য দেশে চলে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে সমুদ্র নানাভাবে অবদান রেখে চলেছে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগ সমুদ্রনির্ভর। অস্ট্রেলিয়া সমুদ্রসম্পদ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আয় করে থাকে। বাংলাদেশ জনবহুল হওয়ায় সমুদ্রসম্পদ আহরণের প্রয়োজনীয়তা আমাদের আরও বেশি। সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই কাম্য