বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অধীন বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ক্যাডারদের মেধাবী হিসাবে গণ্য করা হয়। অথচ বিসিএসের সার্কুলার থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সর্বশেষ পর্যায়ে আসতে লেগে যায় কয়েক বছর। এতে বেকারত্বের সমস্যায় পড়তে হয় অপেক্ষারত মেধাবীদের।
খতিয়ে দেখা যায়, ৩৮তম বিসিএসের সার্কুলার হয়েছিল ২০১৭ সালের ২০ জুন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭। লিখিত পরীক্ষা শুরু হয় ৮ আগস্ট ২০১৮। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হয় ৩১ জুলাই ২০১৯ তারিখে এবং শেষ হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয় ৩০ জুন ২০২০।
৩৮তম বিসিএসের গেজেট এখনো প্রকাশিত হয়নি। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যেও গেজেট প্রকাশ ও নিয়োগ সম্পন্ন হয়, তারপরও সার্কুলার দেওয়া থেকে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে প্রায় চার বছর! নিকট অতীতের অন্যান্য বিসিএসের পরিসংখ্যানও প্রায় একই রকম (বিশেষ বিসিএস ছাড়া)।
প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক পাস করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু বিসিএসের এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক মধ্যম ও নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীর এতদিন ধৈর্য ধরার মতো অবস্থা থাকে না। অনেকের পক্ষেই অনার্স পাস করার পর এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা সম্ভব হয় না, পরিবারের কথা চিন্তা করে অন্য পেশায় যেতে হয়। কাজেই দেখা যাচ্ছে, এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে শুধু মেধার প্রয়োজন নয়, দরকার ধৈর্য ও আর্থিক সাপোর্টও।
পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক একাধিকবার বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, উচ্চপর্যায়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে লিখিত পরীক্ষায় নম্বর কমানো, পরীক্ষা পদ্ধতির মানোন্নয়ন, সিলেবাসের আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কিছুর বাস্তবায়ন লক্ষ করা যাচ্ছে না। কার্যত পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।
এদিকে ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির অধীন সরকারি ব্যাংকগুলোর সার্কুলার থেকে চূড়ান্ত নিয়োগ হতে তুলনামূলক কম সময় লাগায় অনেক তরুণ বিসিএস পরীক্ষার বিকল্প হিসাবে ব্যাংক পরীক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ব্যাংকের সার্কুলার প্রতিবছরই হয়ে থাকে। দেখা যায়, ব্যাংকে নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা থেকে নিয়োগ পর্যন্ত সময় লাগে এক থেকে দেড় বছর, যা তুলনামূলক অনেক কম সময়।
বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা হতাশ করছে স্নাতক পাস করে বেকার অবস্থায় থাকা হাজারো তরুণকে, যাদের মেধাকে এ সময় কাজে লাগানো যেত দেশের প্রয়োজনে। পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার এই সময়টায় (৩-৪ বছর) একজন তরুণ দেশকে আরও ভালো কিছু দিতে পারত।