ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্তিত্বহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্তিত্বহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাগুজে অস্তিত্ব থাকার খবর নতুন নয়। সর্বশেষ গতকালের যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার এক অস্তিত্বহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার কথা জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকুন্দিয়া পৌর সদরে আনোয়ারখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারি সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় ১৯৯২ সালেই তা বিলুপ্ত হয়ে যায়।

কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি বই যাচ্ছে। আরও বিস্ময়ের ব্যাপার, অস্তিত্বহীন এ মাদ্রাসায় সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়াই যে এর উদ্দেশ্য, তা সহজেই অনুমেয়।

সারা দেশে অস্তিত্বহীন বা ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ মিলিয়ে এক হাজারের বেশি ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। নামসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠান জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাগজপত্রে থাকলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই, অনেকটা ‘কাজির গরু কেতাবে’ থাকার মতো।

কারা, কীভাবে ও কী উদ্দেশ্যে এসব ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘গড়ে তুলেছে’, তা উদ্ঘাটন করা জরুরি। অভিযোগ আছে, মূলত মোটা অঙ্কের টাকার নিয়োগ বাণিজ্য এবং এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারি অর্থ লোপাট করাই ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্দেশ্য।

এ ছাড়া বৃত্তি ও উপবৃত্তির অর্থও আত্মসাৎ করা হয়। জানা যায়, ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেওয়া হয়। অনুমোদনের আগে সরকারি পরিদর্শনের সময় অন্যের জমি বা ভবনে সাইনবোর্ড টানিয়ে প্রস্তাবিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে দেখানো হয়।

প্রতিষ্ঠানের আবেদনপত্রের সঙ্গে জমির ভুয়া দলিল এবং ভূমি অফিসের কাগজ জাল করে নামজারির পত্রও দাখিল করা হয়। এভাবে অনুমোদন পায় ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বস্তুত এটি একটি দুর্নীতি, যার মূলোৎপাটন জরুরি। আমরা মনে করি, অস্তিত্বহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আলোচ্য আনোয়ারখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার বিষয়েও যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

অস্তিত্বহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আপডেট টাইম : ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্তিত্বহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাগুজে অস্তিত্ব থাকার খবর নতুন নয়। সর্বশেষ গতকালের যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার এক অস্তিত্বহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার কথা জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকুন্দিয়া পৌর সদরে আনোয়ারখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারি সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় ১৯৯২ সালেই তা বিলুপ্ত হয়ে যায়।

কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি বই যাচ্ছে। আরও বিস্ময়ের ব্যাপার, অস্তিত্বহীন এ মাদ্রাসায় সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়াই যে এর উদ্দেশ্য, তা সহজেই অনুমেয়।

সারা দেশে অস্তিত্বহীন বা ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ মিলিয়ে এক হাজারের বেশি ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। নামসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠান জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাগজপত্রে থাকলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই, অনেকটা ‘কাজির গরু কেতাবে’ থাকার মতো।

কারা, কীভাবে ও কী উদ্দেশ্যে এসব ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘গড়ে তুলেছে’, তা উদ্ঘাটন করা জরুরি। অভিযোগ আছে, মূলত মোটা অঙ্কের টাকার নিয়োগ বাণিজ্য এবং এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারি অর্থ লোপাট করাই ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্দেশ্য।

এ ছাড়া বৃত্তি ও উপবৃত্তির অর্থও আত্মসাৎ করা হয়। জানা যায়, ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেওয়া হয়। অনুমোদনের আগে সরকারি পরিদর্শনের সময় অন্যের জমি বা ভবনে সাইনবোর্ড টানিয়ে প্রস্তাবিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে দেখানো হয়।

প্রতিষ্ঠানের আবেদনপত্রের সঙ্গে জমির ভুয়া দলিল এবং ভূমি অফিসের কাগজ জাল করে নামজারির পত্রও দাখিল করা হয়। এভাবে অনুমোদন পায় ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বস্তুত এটি একটি দুর্নীতি, যার মূলোৎপাটন জরুরি। আমরা মনে করি, অস্তিত্বহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আলোচ্য আনোয়ারখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার বিষয়েও যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।