ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরীর ৮০তম জন্মবাষির্কী মঙ্গলবার

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার শিল্পিত কারিগর, ৮০ দশকের কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরীর ৮০তম জন্মবাষির্কী ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। তৎকালীন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার মহকুমা বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন গ্রামের বিলপাড়ার মিয়াবাড়ীতে তিনি ১৯৪১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরীর মায়ের নাম হাজেরা খাতুন এবং বাবার নাম সিরাজউদ্দীন খান চৌধুরী। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে পড়াশুনা শেষ করে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগে চাকুরী করেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদশর্ক হিসাবে।

কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরী কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ ভিত্তিক সাহিত্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকলেও জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিখতেন নিয়মিত। সম্পাদনা করতেন ‘ঢেউ’ নামে মুক্ত কবিতার কাগজ। ঢেউ কবিতার কাগজে বাংলাদেশের স্বনামধন্য কবিরা লিখেছেন।

তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘পিরীতির নকশা’, ‘যে দেশে মানুষ ঘুমায়’, ‘বেদনা আমারি থাক’, ‘আমি কেন পাবো না তোমায়’ এবং ‘কষ্টে আমি সমুদ্রে যাব’।

কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় বিরচিত কাব্যগ্রন্থ ‘পিরীতির নকশা’ বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনে ব্যাপক আলোচিত। ‘পিরীতির নকশা’ কাব্যগ্রন্থে কিশোরগঞ্জের ঋজুময় আঞ্চলিক ভঙ্গি, উপমা, নিজস্ব উচ্চারণ ও লোকায়ত ঢঙে পরিপার্শ্ব-সমাজ-মাটির অভিব্যাক্তি ফুটিয়ে তুলেছেন।

পিরীতির নকশা কাব্য সিরিজে কিশোরগঞ্জের যে আঞ্চলিক ভাষা, শব্দ এবং রুপকল্প ব্যবহার করেছেন, প্রেমের অন্তজ কাব্যময়তায় তা আর নিদির্ষ্ট কোন অঞ্চলের ভাষায় সীমাবদ্ধ থাকেনি অলংকৃত হয়ে উঠেছে সবার হৃদয়ের ভাষায়।

কিশোরগঞ্জের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত মুক্তি চৌধুরী তাঁর ছোট ভাই। কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরী তিন সন্তানের জনক।

বাংলাদেশের বিশ্ষ্টি গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, দেশ টিভি, দীপ্ত টিভি এবং ডিবিসি নিউজ এর সাবেক অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান, বাংলাদেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন প্রযোজক কবি ও গল্পকার পারভেজ চৌধুরী তাঁর প্রথম সন্তান। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রেরিয়াল টেলিভিশন একুশে টেলিভিশনের উপসস্থাপিকা, বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বেতার রেডিও মেট্রোওয়েভের ব্রডকাস্টার, ঢাকা থিয়েটারের সদস্য, মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের আভিনেত্রী সেতু ফাল্গুনী তাঁর পুত্রবধু। তারা উভয়েই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী, বতর্মানে কানাডার টরন্টো শহরে বসবাসরত।

করিমগঞ্জের জনপ্রিয় স্কুল শিক্ষিকা প্রয়াত রোকেয়া মল্লিক তাঁর স্ত্রী। কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদ হাসান কবিকণ্যার জামাতা।

কিশোরগঞ্জের কৃতী সন্তান, বাংলাদেশের জাতীয় এ্যথলেট, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রীড়া কোচ, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম রুমি, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হসপিটালের পরিচালক ডা. এহসানুল হক মুকুল তাঁর বোনের ছেলে।

কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত লিরিকধর্মী পিরীতির নকশা কাব্যের জন্যে ২০০৫ সালে সুকুমার রায় ছড়া পুরস্কার পান।

২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরী মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো প্রায় ৭৪ বছর।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরীর ৮০তম জন্মবাষির্কী মঙ্গলবার

আপডেট টাইম : ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার শিল্পিত কারিগর, ৮০ দশকের কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরীর ৮০তম জন্মবাষির্কী ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। তৎকালীন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার মহকুমা বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন গ্রামের বিলপাড়ার মিয়াবাড়ীতে তিনি ১৯৪১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরীর মায়ের নাম হাজেরা খাতুন এবং বাবার নাম সিরাজউদ্দীন খান চৌধুরী। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে পড়াশুনা শেষ করে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগে চাকুরী করেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদশর্ক হিসাবে।

কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরী কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ ভিত্তিক সাহিত্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকলেও জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিখতেন নিয়মিত। সম্পাদনা করতেন ‘ঢেউ’ নামে মুক্ত কবিতার কাগজ। ঢেউ কবিতার কাগজে বাংলাদেশের স্বনামধন্য কবিরা লিখেছেন।

তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘পিরীতির নকশা’, ‘যে দেশে মানুষ ঘুমায়’, ‘বেদনা আমারি থাক’, ‘আমি কেন পাবো না তোমায়’ এবং ‘কষ্টে আমি সমুদ্রে যাব’।

কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় বিরচিত কাব্যগ্রন্থ ‘পিরীতির নকশা’ বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনে ব্যাপক আলোচিত। ‘পিরীতির নকশা’ কাব্যগ্রন্থে কিশোরগঞ্জের ঋজুময় আঞ্চলিক ভঙ্গি, উপমা, নিজস্ব উচ্চারণ ও লোকায়ত ঢঙে পরিপার্শ্ব-সমাজ-মাটির অভিব্যাক্তি ফুটিয়ে তুলেছেন।

পিরীতির নকশা কাব্য সিরিজে কিশোরগঞ্জের যে আঞ্চলিক ভাষা, শব্দ এবং রুপকল্প ব্যবহার করেছেন, প্রেমের অন্তজ কাব্যময়তায় তা আর নিদির্ষ্ট কোন অঞ্চলের ভাষায় সীমাবদ্ধ থাকেনি অলংকৃত হয়ে উঠেছে সবার হৃদয়ের ভাষায়।

কিশোরগঞ্জের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত মুক্তি চৌধুরী তাঁর ছোট ভাই। কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরী তিন সন্তানের জনক।

বাংলাদেশের বিশ্ষ্টি গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, দেশ টিভি, দীপ্ত টিভি এবং ডিবিসি নিউজ এর সাবেক অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান, বাংলাদেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন প্রযোজক কবি ও গল্পকার পারভেজ চৌধুরী তাঁর প্রথম সন্তান। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রেরিয়াল টেলিভিশন একুশে টেলিভিশনের উপসস্থাপিকা, বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বেতার রেডিও মেট্রোওয়েভের ব্রডকাস্টার, ঢাকা থিয়েটারের সদস্য, মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের আভিনেত্রী সেতু ফাল্গুনী তাঁর পুত্রবধু। তারা উভয়েই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী, বতর্মানে কানাডার টরন্টো শহরে বসবাসরত।

করিমগঞ্জের জনপ্রিয় স্কুল শিক্ষিকা প্রয়াত রোকেয়া মল্লিক তাঁর স্ত্রী। কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদ হাসান কবিকণ্যার জামাতা।

কিশোরগঞ্জের কৃতী সন্তান, বাংলাদেশের জাতীয় এ্যথলেট, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রীড়া কোচ, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম রুমি, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হসপিটালের পরিচালক ডা. এহসানুল হক মুকুল তাঁর বোনের ছেলে।

কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত লিরিকধর্মী পিরীতির নকশা কাব্যের জন্যে ২০০৫ সালে সুকুমার রায় ছড়া পুরস্কার পান।

২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর কবি মহিউদ্দীন খান চৌধুরী মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো প্রায় ৭৪ বছর।