বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ প্রতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকে কেন্দ্র করে কী সমস্যা সৃষ্টি হয় তা সর্বজনবিদিত। জানা গেছে, এবার উচ্চমাধ্যমিকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করলেও বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২ লাখের বেশি আসন খালি থাকবে।
বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর কর্মজীবনে প্রবেশ এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত আসন থাকার কারণেই এমনটা হবে। গত বছরও আগের পাশ করা এবং নতুন পাশ করা মিলিয়ে মোট আসনের ৭৪ শতাংশে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল, যা প্রায় আট লাখের মতো। এবার মূলত সংকট সৃষ্টি হবে পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে দেশের ২০টি সাধারণ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ৬টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গ্রুপের ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনে ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হয়েছে এসএসসি বা এইচএসসির যে কোনো একটিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩ এবং দুটি মিলিয়ে সাড়ে ৬।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা আরও বেশি। সেই হিসাবে ১৩ লাখের বেশি পাশ করলেও মূলত ভর্তির জন্য লড়াইয়ে নামতে পারবে সর্বোচ্চ জিপিএ-৩ পাওয়া শিক্ষার্থীরা। এ ধরনের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। তবে ভালোমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির লড়াইটা হবে প্রতি বছরের মতো।
কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে পারছে না। এটা কি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলোর স্রেফ গাফিলতি, নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনো রহস্য? বর্তমান পদ্ধতি কি তাহলে কর্তৃপক্ষগুলোর বাড়তি আয়ের কোনো সুযোগ তৈরি করছে?
দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট কোনো ফি কাঠামো নেই এবং এই সুযোগে যে যার মতো করে ফি নির্ধারণ করে চলেছেন। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষার একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার। এতে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজটি সুসম্পন্ন হবে এবং একইসঙ্গে দূর হবে ভোগান্তি।
আমরা আশা করব, আগামীতে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভিত্তিক ভর্তির আওতায় আসবে। পরবর্তী সময়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও এ পথেই এগোতে হবে। শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোও জরুরি।
এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি দায়িত্ব রয়েছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারেরও। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পেতে শিক্ষার মান উন্নয়নের বিকল্প নেই।