ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি চিনিকলে দুর্নীতি

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সরকারি চিনিকলগুলোকে বছরের পর বছর ভর্তুকি প্রদান করা হলেও ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে এসব প্রতিষ্ঠান।

অব্যাহত লোকসানের কারণে প্রতিযোগিতায় বেসরকারি কোম্পানির তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে এসব কোম্পানি।

সরকারের ১৫টি চিনিকলের দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের চিত্র গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি চিনিকলগুলোর লোকসানের পরিমাণ কমাতে অতীতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এক্ষেত্রে কেন কাঙ্ক্ষিত সুফল মেলেনি, তা চিহ্নিত করা দরকার।

বস্তুত, সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এসব প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ও ডিলারদের জামানত তছরুপ করার সাহস পেত না দুর্নীতিবাজরা।

ভুয়া শ্রমিকের নামে চার গুণের বেশি মজুরি উত্তোলন, প্রকৃত লোকসানের চেয়ে অতিরিক্ত দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া-এসব অনিয়ম কি দেখার কেউ নেই? বছরের পর বছর এসব দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাট কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

সরকারি চিনিকলে উৎপাদিত প্রতি কেজি চিনির উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় ৩০০ টাকা, যা বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২০০ টাকার বেশি লোকসান গুনতে হয়। বাজারে এ চিনির চাহিদা ব্যাপক।

কিন্তু বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশের কারণে তা ঠিকমতো সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে। অর্থাৎ এ খাতের বাজার এক রকম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি চিনিকলগুলোর কোনটি সম্ভাবনাময় আর কোনটির উৎপাদন স্থগিত রাখা উচিত, তা চিহ্নিত করার কাজটি কি খুব জটিল?

অধিক লোকসানি মিলগুলো বন্ধ করা বা বিকল্প সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না কেন? কী কী কারণে চিনিকলগুলো লোকসান গুনছে, তা চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। চিনিকলের কর্মচারীরা বছরে মাত্র কয়েক মাস কাজে থাকেন। মাসের পর মাস তারা অলস সময় কাটান। এর অবসান জরুরি। বিভিন্ন বাইপ্রোডাক্ট উৎপাদনের মাধ্যমে লোকসান ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া যায়।

চিনিকলগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এগুলোকে যে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব হবে না, তা বলাই বাহুল্য। প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার বিষয়টি বহুল আলোচিত। মোটকথা, ব্যবস্থাপনা কাঠামোয় আমূল সংস্কারসহ যা যা করা দরকার, দ্রুত সেসব পদক্ষেপ নিতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সরকারি চিনিকলে দুর্নীতি

আপডেট টাইম : ০৩:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সরকারি চিনিকলগুলোকে বছরের পর বছর ভর্তুকি প্রদান করা হলেও ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে এসব প্রতিষ্ঠান।

অব্যাহত লোকসানের কারণে প্রতিযোগিতায় বেসরকারি কোম্পানির তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে এসব কোম্পানি।

সরকারের ১৫টি চিনিকলের দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের চিত্র গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি চিনিকলগুলোর লোকসানের পরিমাণ কমাতে অতীতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এক্ষেত্রে কেন কাঙ্ক্ষিত সুফল মেলেনি, তা চিহ্নিত করা দরকার।

বস্তুত, সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এসব প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ও ডিলারদের জামানত তছরুপ করার সাহস পেত না দুর্নীতিবাজরা।

ভুয়া শ্রমিকের নামে চার গুণের বেশি মজুরি উত্তোলন, প্রকৃত লোকসানের চেয়ে অতিরিক্ত দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া-এসব অনিয়ম কি দেখার কেউ নেই? বছরের পর বছর এসব দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাট কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

সরকারি চিনিকলে উৎপাদিত প্রতি কেজি চিনির উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় ৩০০ টাকা, যা বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২০০ টাকার বেশি লোকসান গুনতে হয়। বাজারে এ চিনির চাহিদা ব্যাপক।

কিন্তু বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশের কারণে তা ঠিকমতো সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে। অর্থাৎ এ খাতের বাজার এক রকম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি চিনিকলগুলোর কোনটি সম্ভাবনাময় আর কোনটির উৎপাদন স্থগিত রাখা উচিত, তা চিহ্নিত করার কাজটি কি খুব জটিল?

অধিক লোকসানি মিলগুলো বন্ধ করা বা বিকল্প সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না কেন? কী কী কারণে চিনিকলগুলো লোকসান গুনছে, তা চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। চিনিকলের কর্মচারীরা বছরে মাত্র কয়েক মাস কাজে থাকেন। মাসের পর মাস তারা অলস সময় কাটান। এর অবসান জরুরি। বিভিন্ন বাইপ্রোডাক্ট উৎপাদনের মাধ্যমে লোকসান ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া যায়।

চিনিকলগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এগুলোকে যে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব হবে না, তা বলাই বাহুল্য। প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার বিষয়টি বহুল আলোচিত। মোটকথা, ব্যবস্থাপনা কাঠামোয় আমূল সংস্কারসহ যা যা করা দরকার, দ্রুত সেসব পদক্ষেপ নিতে হবে।