ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এক বছর: শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি এবং নতুন বা পরিবর্তিত রূপের করোনাভাইরাসের আবির্ভাবে এখন সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটির বর্ষপূর্তি হচ্ছে আজ। দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে এখনো চলছে সেই ছুটি। মাঝে সংক্রমণ কমে আসায় ৩০ মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার ঘোষণা আসে। কিন্তু ইতোমধ্যে সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

এ অবস্থায় ঘোষিত তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। শহরাঞ্চলে বেশিরভাগ অভিভাবককে সন্তান নিয়ে গণপরিবহণ বা রিকশায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়। তরুণদের আক্রান্তের হার আগের চেয়ে বেড়েছে। শিশু শিক্ষার্থীরা এতদিন ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় আক্রান্তের হার কম ছিল; কিন্তু তারা ঘরের বাইরে বের হলে আক্রান্তের হার কী হবে, তা অনিশ্চিত।

স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এটাই স্বাভাবিক। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে জনগণের উদাসীনতার কারণেই দেশে সংক্রমণ বেড়েছে। এ অবস্থায় বিশেষ ব্যবস্থায় পূর্বঘোষিত সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও ভাবতে হবে। করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে শিক্ষক ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

যেহেতু এখনই শিশুদের টিকার আওতায় আনা যাচ্ছে না, সেহেতু তারা সংক্রমণের আশঙ্কা এড়িয়ে কীভাবে স্কুলে যাবে, এটাই প্রশ্ন। সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে এলে খোলা মাঠে স্কুল কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে, প্রায় একশ বছর আগে বিভিন্ন দেশে যেমনটি হয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার টিকার দুই ডোজ নেওয়ার অন্তত ১৪ দিন পর মানবদেহে প্রকৃত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। তবে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও পুরোপুরি করোনার শঙ্কামুক্ত হওয়া যাবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মনে রাখতে হবে, অনুমোদিত টিকাগুলো বেশ কার্যকর হলেও করোনার মূল জীবাণুর বিরুদ্ধে এটা শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারবে না।

বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকলেও কখন এ মহামারি কাক্সিক্ষত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা এখনো কেউ বলতে পারছেন না। কাজেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এক বছর: শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে

আপডেট টাইম : ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি এবং নতুন বা পরিবর্তিত রূপের করোনাভাইরাসের আবির্ভাবে এখন সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটির বর্ষপূর্তি হচ্ছে আজ। দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে এখনো চলছে সেই ছুটি। মাঝে সংক্রমণ কমে আসায় ৩০ মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার ঘোষণা আসে। কিন্তু ইতোমধ্যে সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

এ অবস্থায় ঘোষিত তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। শহরাঞ্চলে বেশিরভাগ অভিভাবককে সন্তান নিয়ে গণপরিবহণ বা রিকশায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়। তরুণদের আক্রান্তের হার আগের চেয়ে বেড়েছে। শিশু শিক্ষার্থীরা এতদিন ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় আক্রান্তের হার কম ছিল; কিন্তু তারা ঘরের বাইরে বের হলে আক্রান্তের হার কী হবে, তা অনিশ্চিত।

স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এটাই স্বাভাবিক। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে জনগণের উদাসীনতার কারণেই দেশে সংক্রমণ বেড়েছে। এ অবস্থায় বিশেষ ব্যবস্থায় পূর্বঘোষিত সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও ভাবতে হবে। করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে শিক্ষক ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

যেহেতু এখনই শিশুদের টিকার আওতায় আনা যাচ্ছে না, সেহেতু তারা সংক্রমণের আশঙ্কা এড়িয়ে কীভাবে স্কুলে যাবে, এটাই প্রশ্ন। সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে এলে খোলা মাঠে স্কুল কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে, প্রায় একশ বছর আগে বিভিন্ন দেশে যেমনটি হয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার টিকার দুই ডোজ নেওয়ার অন্তত ১৪ দিন পর মানবদেহে প্রকৃত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। তবে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও পুরোপুরি করোনার শঙ্কামুক্ত হওয়া যাবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মনে রাখতে হবে, অনুমোদিত টিকাগুলো বেশ কার্যকর হলেও করোনার মূল জীবাণুর বিরুদ্ধে এটা শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারবে না।

বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকলেও কখন এ মহামারি কাক্সিক্ষত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা এখনো কেউ বলতে পারছেন না। কাজেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে।