ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যানজটে অনেক ক্ষতি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  রাজধানী ঢাকার উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়ে গেল ঢাকায়। দিনব্যাপী এ সম্মেলনের পাঁচটি অধিবেশনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরাও বক্তব্য দেন। ভারতের দিল্লি ও চীনের সাংহাইয়ের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা এবং ঢাকার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। ‘ঢাকাকে একটি আধুনিক নগরী বানানোর সুযোগ’ শীর্ষক প্রবন্ধ সম্মেলনে পঠিত হয়েছে; যেখানে বলা হয়েছে, ১০ বছর আগেও ঢাকায় যানবাহনের গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। বর্তমানে যা ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার। যানবাহনের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে যানজট নিরসনে যথাযথ উদ্যোগ না নিলে ২০২৫ সালের মধ্যে যানবাহনের গতি হবে প্রতি ঘণ্টায় চার কিলোমিটার। এখনই প্রতিদিন যানজটের কারণে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। প্রতিবছর অর্থনীতিতে ক্ষতি হচ্ছে বিলিয়ন ডলার। যানজটের কারণে নগরায়ণের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার অনেক কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিনের যানজট মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের জন্ম দিচ্ছে। দেশের আর্থিক ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কয়েক বছর আগে এক জরিপে দেখানো হয়েছিল, যানজটের কারণে প্রতিদিনের আর্থিক ক্ষতি ২০ হাজার কোটি টাকা। ঢাকায় বর্ষা মৌসুমে যানজটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে জলজট। রাজধানীতে রাস্তার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার চলছে। খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। চলছে উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজও। যানজট এখন ঢাকাবাসীর নিত্যসঙ্গী। এমনিতে রাজধানীতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক রাস্তা নেই। মূল কয়েকটি রাস্তার ওপর নির্ভর করতে হয় নগরবাসীকে। কিন্তু যে সড়ক রাজধানীতে আছে, সেখানে কি শৃঙ্খলা আছে? সড়ক ব্যবস্থাপনায় কি কোনো ত্রুটি নেই? বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হচ্ছে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের সমন্বয়হীনতা যে মহানগরীকে আজকের স্থবিরপ্রায় অবস্থায় এনে ফেলেছে, এ থেকে মুক্ত হতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। বিশ্বব্যাংক বলছে, ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ঢাকায় সড়ক বেড়েছে ৫ শতাংশ; বিপরীতে সড়কে যান চলাচল বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ। মানুষ বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ঢাকার নগরায়ণ কেন্দ্র থেকে উত্তর দিকে এবং এখন পশ্চিম দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে। নগরীর পূর্ব দিকের এলাকাগুলো এখনো গ্রামীণ।

রাজধানীর যানজট নিরসনে দিল্লির উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত দিল্লি একটি অগোছালো শহর ছিল। তখন দিল্লিতে মাত্র একটি উড়াল সেতু ছিল। প্রধান সমস্যা ছিল যানজট। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের মাধ্যমে এখন দিল্লিতে ২৫০ কিলোমিটারের বেশি মেট্রো রেল নির্মাণ করা হয়েছে। ৭৮টি উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যে রাস্তায় ক্রসিং ছিল সেখানে ওভারপাস বা আন্ডারপাসের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ঢাকায়ও বেশ কয়েকটি উড়াল সেতু তৈরি হয়েছে। মেট্রো রেলের কাজ চলছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতা চোখে পড়ে সর্বত্র। এই সমন্বয়হীনতা দূর করতে পারলে ঢাকার রাস্তার দুর্ভোগ এখনই দূর করা সম্ভব।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

যানজটে অনেক ক্ষতি

আপডেট টাইম : ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  রাজধানী ঢাকার উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়ে গেল ঢাকায়। দিনব্যাপী এ সম্মেলনের পাঁচটি অধিবেশনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরাও বক্তব্য দেন। ভারতের দিল্লি ও চীনের সাংহাইয়ের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা এবং ঢাকার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। ‘ঢাকাকে একটি আধুনিক নগরী বানানোর সুযোগ’ শীর্ষক প্রবন্ধ সম্মেলনে পঠিত হয়েছে; যেখানে বলা হয়েছে, ১০ বছর আগেও ঢাকায় যানবাহনের গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। বর্তমানে যা ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার। যানবাহনের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে যানজট নিরসনে যথাযথ উদ্যোগ না নিলে ২০২৫ সালের মধ্যে যানবাহনের গতি হবে প্রতি ঘণ্টায় চার কিলোমিটার। এখনই প্রতিদিন যানজটের কারণে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। প্রতিবছর অর্থনীতিতে ক্ষতি হচ্ছে বিলিয়ন ডলার। যানজটের কারণে নগরায়ণের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার অনেক কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিনের যানজট মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের জন্ম দিচ্ছে। দেশের আর্থিক ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কয়েক বছর আগে এক জরিপে দেখানো হয়েছিল, যানজটের কারণে প্রতিদিনের আর্থিক ক্ষতি ২০ হাজার কোটি টাকা। ঢাকায় বর্ষা মৌসুমে যানজটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে জলজট। রাজধানীতে রাস্তার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার চলছে। খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। চলছে উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজও। যানজট এখন ঢাকাবাসীর নিত্যসঙ্গী। এমনিতে রাজধানীতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক রাস্তা নেই। মূল কয়েকটি রাস্তার ওপর নির্ভর করতে হয় নগরবাসীকে। কিন্তু যে সড়ক রাজধানীতে আছে, সেখানে কি শৃঙ্খলা আছে? সড়ক ব্যবস্থাপনায় কি কোনো ত্রুটি নেই? বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হচ্ছে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের সমন্বয়হীনতা যে মহানগরীকে আজকের স্থবিরপ্রায় অবস্থায় এনে ফেলেছে, এ থেকে মুক্ত হতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। বিশ্বব্যাংক বলছে, ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ঢাকায় সড়ক বেড়েছে ৫ শতাংশ; বিপরীতে সড়কে যান চলাচল বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ। মানুষ বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ঢাকার নগরায়ণ কেন্দ্র থেকে উত্তর দিকে এবং এখন পশ্চিম দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে। নগরীর পূর্ব দিকের এলাকাগুলো এখনো গ্রামীণ।

রাজধানীর যানজট নিরসনে দিল্লির উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত দিল্লি একটি অগোছালো শহর ছিল। তখন দিল্লিতে মাত্র একটি উড়াল সেতু ছিল। প্রধান সমস্যা ছিল যানজট। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের মাধ্যমে এখন দিল্লিতে ২৫০ কিলোমিটারের বেশি মেট্রো রেল নির্মাণ করা হয়েছে। ৭৮টি উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যে রাস্তায় ক্রসিং ছিল সেখানে ওভারপাস বা আন্ডারপাসের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ঢাকায়ও বেশ কয়েকটি উড়াল সেতু তৈরি হয়েছে। মেট্রো রেলের কাজ চলছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতা চোখে পড়ে সর্বত্র। এই সমন্বয়হীনতা দূর করতে পারলে ঢাকার রাস্তার দুর্ভোগ এখনই দূর করা সম্ভব।