ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপর্যস্ত যোগাযোগব্যবস্থা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এবারের বন্যায় বিপুল ক্ষতির শিকার হয়েছে দেশের উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল। ২৭টি জেলার ১৫৪টি উপজেলার প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। মারা গেছে ৯৮ জন। ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদি পশু ও যোগাযোগব্যবস্থারও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। ১০০ কিলোমিটারের বেশি রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত। দুই হাজার ৮০০ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক ভেঙে গেছে বা বিধ্বস্ত হয়েছে।

যোগাযোগব্যবস্থার বেশি ক্ষতি হয়েছে দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, জামালপুর, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায়। এসব জেলার যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ঢাকা-দিনাজপুর সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দিনাজপুর-কুড়িগ্রাম রেল যোগাযোগও বন্ধ। দুটি আন্ত নগর ট্রেনসহ ১১ জোড়া ট্রেন চলছে না।

দিনাজপুরের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর ও ঢাকা রুটের প্রায় ১২০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত। গত রবিবার টাঙ্গাইলে নদীর স্রোতে একটি রেল সেতুর সংযোগ অংশের মাটি ধসে যাওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রেলপথের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রংপুর বিভাগে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ১২০ ফুট রেলপথ নদীতে বিলীন। সেখানে রেল যোগাযোগ সত্বর শুরু করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই সন্দিহান। রংপুরের কাউনিয়া-তিস্তা-মহেন্দ্রনগর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রেলপথের ২০টি স্থানে ২০-২৫ ফুট গর্ত তৈরি হয়েছে। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থেকে মন্মথপুর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার পথের ৪৮টি স্থানে পাঁচ ফুট পর্যন্ত মাটি সরে গেছে। এ জেলার আরো তিনটি রেলপথের ছয় কিলোমিটার জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁওয়েও রেলপথের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে রংপুর রেল বিভাগের ১০০ কিলোমিটারের বেশি রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত। মাটি-পাথর সরে যাওয়ায় রেললাইন কোথাও দেবে গেছে, কোথাও বেঁকে গেছে, কোথাও বা শূন্যে ঝুলছে।

মৌলভীবাজারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সওজের ৯৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিনাজপুরের পাঁচবাড়ী থেকে আমবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ভেসে গেছে বা ধসে গেছে। এ কারণে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঘুরে সড়কপথে চলাচল করতে হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু বাস চলছে। বন্যায় আক্রান্ত অন্যান্য জেলায়ও সওজ ও স্থানীয় সরকারের সড়কের ক্ষতি হয়েছে।

রেলপথ ও সড়ক-মহাসড়কের ক্ষতির কারণে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ এবং রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত। মানুষকে চলতে হচ্ছে ঘুরপথে, অনেক দুর্ভোগ সয়ে। চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে। ঈদুল আজহার মাত্র ১১ দিন বাকি। মানুষ ছুটবে বাড়ির দিকে। দ্রুত রেলপথ ও সড়ক-মহাসড়ক মেরামত করা না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই ‘জরুরি পরিস্থিতি’ মোকাবেলার মানসিকতায় যোগাযোগব্যবস্থা পুরোপুরি সচল করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাজ শুরু করতে হবে এখনই।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বিপর্যস্ত যোগাযোগব্যবস্থা

আপডেট টাইম : ০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এবারের বন্যায় বিপুল ক্ষতির শিকার হয়েছে দেশের উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল। ২৭টি জেলার ১৫৪টি উপজেলার প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। মারা গেছে ৯৮ জন। ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদি পশু ও যোগাযোগব্যবস্থারও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। ১০০ কিলোমিটারের বেশি রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত। দুই হাজার ৮০০ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক ভেঙে গেছে বা বিধ্বস্ত হয়েছে।

যোগাযোগব্যবস্থার বেশি ক্ষতি হয়েছে দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, জামালপুর, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায়। এসব জেলার যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ঢাকা-দিনাজপুর সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দিনাজপুর-কুড়িগ্রাম রেল যোগাযোগও বন্ধ। দুটি আন্ত নগর ট্রেনসহ ১১ জোড়া ট্রেন চলছে না।

দিনাজপুরের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর ও ঢাকা রুটের প্রায় ১২০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত। গত রবিবার টাঙ্গাইলে নদীর স্রোতে একটি রেল সেতুর সংযোগ অংশের মাটি ধসে যাওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রেলপথের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রংপুর বিভাগে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ১২০ ফুট রেলপথ নদীতে বিলীন। সেখানে রেল যোগাযোগ সত্বর শুরু করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই সন্দিহান। রংপুরের কাউনিয়া-তিস্তা-মহেন্দ্রনগর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রেলপথের ২০টি স্থানে ২০-২৫ ফুট গর্ত তৈরি হয়েছে। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থেকে মন্মথপুর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার পথের ৪৮টি স্থানে পাঁচ ফুট পর্যন্ত মাটি সরে গেছে। এ জেলার আরো তিনটি রেলপথের ছয় কিলোমিটার জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁওয়েও রেলপথের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে রংপুর রেল বিভাগের ১০০ কিলোমিটারের বেশি রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত। মাটি-পাথর সরে যাওয়ায় রেললাইন কোথাও দেবে গেছে, কোথাও বেঁকে গেছে, কোথাও বা শূন্যে ঝুলছে।

মৌলভীবাজারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সওজের ৯৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিনাজপুরের পাঁচবাড়ী থেকে আমবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ভেসে গেছে বা ধসে গেছে। এ কারণে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঘুরে সড়কপথে চলাচল করতে হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু বাস চলছে। বন্যায় আক্রান্ত অন্যান্য জেলায়ও সওজ ও স্থানীয় সরকারের সড়কের ক্ষতি হয়েছে।

রেলপথ ও সড়ক-মহাসড়কের ক্ষতির কারণে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ এবং রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত। মানুষকে চলতে হচ্ছে ঘুরপথে, অনেক দুর্ভোগ সয়ে। চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে। ঈদুল আজহার মাত্র ১১ দিন বাকি। মানুষ ছুটবে বাড়ির দিকে। দ্রুত রেলপথ ও সড়ক-মহাসড়ক মেরামত করা না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই ‘জরুরি পরিস্থিতি’ মোকাবেলার মানসিকতায় যোগাযোগব্যবস্থা পুরোপুরি সচল করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাজ শুরু করতে হবে এখনই।