ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাথরবিহীন রেলপথ: ট্রেন চলাচল নিরাপদ করতে হবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ রেললাইন সুরক্ষায় পাথর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সারা দেশে রেললাইনে পাথরের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে অহরহ ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা। নিয়ম অনুযায়ী রেললাইনে যে পরিমাণ পাথর থাকার কথা, তা নেই। দেশে রেলপথের প্রায় সর্বত্র এ সংকট বিরাজ করছে। এ সমস্যার সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কমলাপুর থেকে টঙ্গী স্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের কোনো কোনো জায়গায় পাথরের ছিটেফোঁটাও নেই। বস্তুত দেশের গোটা রেলপথেই এমন অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতি বছর রেলযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি।

বিভিন্ন রকম দ্রুতগামী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হলেও বিদ্যমান রেলপথের যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এটা এক বড় প্রশ্ন। ইঞ্জিন, বগি ও প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রাংশের অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রেল, এ তথ্য অনেক দিনের পুরনো।

এবার জানা গেল, দেশে বিদ্যমান রেলপথে প্রতি বছর ১ কোটি সিএফটি পাথর প্রয়োজন হলেও বছরে ৫ লাখ সিএফটি পাথর দেয়াও নিশ্চিত করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ক্ষয় হয়ে যাওয়া, ভেঙে বা খোয়া যাওয়া যন্ত্রাংশের তথ্য সংগ্রহেও সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা প্রশ্নবিদ্ধ।

বিশেষ করে রেলপথে পাথর আছে কি না, তা সরেজমিন যাদের দেখার কথা, তারা সেই দায়িত্ব কতটা পালন করেন সে প্রশ্নও রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান না হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই যাত্রীদের ট্রেনে চলাচল করতে হবে।

জানা গেছে, রেলপথে ব্যবহৃত পাথর শতভাগ আমদানিনির্ভর। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে এসব পাথরের মজুদ কমছে। এ অবস্থায় পাথরের আমদানি নিশ্চিত করে এর সর্বোত্তম ব্যবহারে যাতে কোনো গাফিলতি না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

দুঃখজনক হল, রেলপথে নামমাত্র পাথর দেয়া নিয়েও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো রকম অবহেলার তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

রেলযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুতগামী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনার বিষয়টি ইতিবাচক। তবে সেক্ষেত্রে রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে হবে আগে। বিশেষ করে পাথর ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে যাতে বিদ্যমান রেলকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পাথরবিহীন রেলপথ: ট্রেন চলাচল নিরাপদ করতে হবে

আপডেট টাইম : ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ রেললাইন সুরক্ষায় পাথর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সারা দেশে রেললাইনে পাথরের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে অহরহ ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা। নিয়ম অনুযায়ী রেললাইনে যে পরিমাণ পাথর থাকার কথা, তা নেই। দেশে রেলপথের প্রায় সর্বত্র এ সংকট বিরাজ করছে। এ সমস্যার সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কমলাপুর থেকে টঙ্গী স্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের কোনো কোনো জায়গায় পাথরের ছিটেফোঁটাও নেই। বস্তুত দেশের গোটা রেলপথেই এমন অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতি বছর রেলযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি।

বিভিন্ন রকম দ্রুতগামী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হলেও বিদ্যমান রেলপথের যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এটা এক বড় প্রশ্ন। ইঞ্জিন, বগি ও প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রাংশের অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রেল, এ তথ্য অনেক দিনের পুরনো।

এবার জানা গেল, দেশে বিদ্যমান রেলপথে প্রতি বছর ১ কোটি সিএফটি পাথর প্রয়োজন হলেও বছরে ৫ লাখ সিএফটি পাথর দেয়াও নিশ্চিত করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ক্ষয় হয়ে যাওয়া, ভেঙে বা খোয়া যাওয়া যন্ত্রাংশের তথ্য সংগ্রহেও সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা প্রশ্নবিদ্ধ।

বিশেষ করে রেলপথে পাথর আছে কি না, তা সরেজমিন যাদের দেখার কথা, তারা সেই দায়িত্ব কতটা পালন করেন সে প্রশ্নও রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান না হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই যাত্রীদের ট্রেনে চলাচল করতে হবে।

জানা গেছে, রেলপথে ব্যবহৃত পাথর শতভাগ আমদানিনির্ভর। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে এসব পাথরের মজুদ কমছে। এ অবস্থায় পাথরের আমদানি নিশ্চিত করে এর সর্বোত্তম ব্যবহারে যাতে কোনো গাফিলতি না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

দুঃখজনক হল, রেলপথে নামমাত্র পাথর দেয়া নিয়েও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো রকম অবহেলার তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

রেলযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুতগামী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনার বিষয়টি ইতিবাচক। তবে সেক্ষেত্রে রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে হবে আগে। বিশেষ করে পাথর ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে যাতে বিদ্যমান রেলকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।