বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দেশে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকল্পে যেহেতু বারবার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠছে, সেহেতু যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করবে এটাই কাম্য। কিন্তু বাস্তবে তা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) তিতাস লোকেশনে ৭টি ওয়েলহেড কম্প্রেসার স্থাপন প্রকল্পের শুরুতেই যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা সোমবার যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে।
জানা গেছে, জাল-জালিয়াতি করে এমন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে যার সক্ষমতা থাকা তো দূরের কথা, অফিশিয়াল অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এটা সম্ভব হয়েছে খোদ বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগের এক শীর্র্ষ কর্মকর্তার যোগসাজশে।
অভিযুক্ত কোম্পানির সঙ্গে জ্বালানি বিভাগের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এক আত্মীয়ের গোপন মালিকানার সম্পর্কও নাকি রয়েছে, যিনি এক সময় তিতাস গ্যাস কোম্পানি ও পরবর্তী সময়ে পেট্রোবাংলায় উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন।
যাচাই-বাছাই না করেই বিজিএফসিএল কর্তৃক তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিতর্কিত কোম্পানি টেকনোস্টিম এনার্জিকে নোয়া (নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড) ইস্যু করার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নোয়া ইস্যুর ২৮ দিনের মধ্যেও কোম্পানিটি চুক্তি করতে পারেনি। জমা দিতে পারেনি দরপত্রের ১০ শতাংশ পারফরম্যান্স গ্যারান্টির (পিজি) টাকাও। কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট মজুমদার এন্টারপ্রাইজের প্রতারণার কারণে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই কোম্পানির ভাবমূর্তিও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।
বারবার চিঠি দিয়েও যে প্রতিষ্ঠানের সাড়া মেলেনি, ব্ল্যাকলিস্ট করার পরিবর্তে এখন আবার সেই টেকনোস্টিম এনার্জিকে ভিন্ন উপায়ে কার্যাদেশ দেয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে জানা গেছে। তৃতীয় একটি কোম্পানির কাছ থেকে পারফরম্যান্স গ্যারান্টি (পিজি) নিয়ে টেকনোস্টিম এনার্জিকে কার্যাদেশ দেয়ায় পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
এ অবস্থায় প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো কিংবা রিটেন্ডার আহ্বান করার আগে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হলে এ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। এতে কী সুফল পাওয়া যাবে তা খতিয়ে দেখতে হবে।
দেশে সব ধরনের জ্বালানির চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ অবস্থায় গ্যাস উত্তোলনবিষয়ক সব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
বস্তুত জ্বালানিবিষয়ক সব প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত সবার দক্ষতা ও সততার বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কোনো রকম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।