বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কোনো তরুণের মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় না ঘটলে সে প্রেমিকার সঙ্গে প্রতারণার কথা ভাবতেও পারে না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী এবং অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া তার আরও কয়েকজন বন্ধু মিলে রাবির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানিসহ যে ভয়াবহ প্রতারণা করেছে, সে ঘটনায় ধিক্কার জানানোর ভাষা খুঁজে পাওয়া কঠিন।
জানা গেছে, এ ঘটনার মূল হোতা মাহফুজুর রহমান সারদ ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে আসছিল। কোনো তরুণ কোনো তরুণীর সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করলেও ওই তরুণ যদি ওই তরুণীর শ্লীলতাহানির মতো ঘৃণ্য চিন্তা করে তাহলে বোঝা যায়, ওই তরুণের ভেতর স্বাভাবিক মানুষের কোনো বৈশিষ্ট্য আর সক্রিয় নেই।
সারদ নামের ওই শিক্ষার্থীর ভেতর ন্যূনতম কোনো বিবেচনাবোধ সক্রিয় থাকলে তার পক্ষে দীর্ঘদিনের পরিচিত তরুণীর শ্লীলতাহানি ঘটানো সম্ভব হতো না। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি, দক্ষ সন্ত্রাসীর মতো মাহফুজ ও তার বন্ধুরা শ্লীলতাহানির ভিডিও ধারণ করে ভয় দেখিয়ে ওই তরুণীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে। এসব ঘটনা নিপুণভাবে সম্পন্ন করার জন্য অভিযুক্তরা পরিকল্পনাও করেছিল।
এসব ঘটনা সংঘটনের সময় তারা যেভাবে অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তাতে তাদের সম্পর্কে আরও অনেক প্রশ্ন জাগবে এটাই স্বাভাবিক। উল্লেখ্য, সারদ ও তার বন্ধুরা মিলে এমন আরও তরুণীকে হয়রানি করেছে।
এই শিক্ষার্থীদের বয়স বেশি নয়। এদের ভয়াবহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা শুনে নানা প্রশ্নের জন্ম হবে, যার জবাব পাওয়া বেশ কঠিন। এ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের একটি হল, এরা কার প্রশ্রয়ে এত বেপরোয়া আচরণ করেছে?
এরা ইতিমধ্যে আরও যেসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেসব ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। যে বয়সে একজন শিক্ষার্থীর একাগ্রচিত্তে পড়ালেখা করার কথা, সে বয়সে কেন তাদের এত অধঃপতন হল, সে রহস্য উদ্ঘাটনেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসব বিষয়ে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- কার দায়িত্ব বেশি, এ নিয়ে তর্ক না করে সবাইকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
যেখানে একজন শিক্ষার্থীর নিজ বন্ধুর বিপদে জীবন বাজি রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার কথা, সেখানে কেউ কেউ কেন নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্য কাজের কথা চিন্তা করছে, এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবতে হবে। অপরাধ যত নগণ্যই হোক, অপরাধীকে দ্রুত যথাযথ আইনের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে দেরি করা হলে দেশে বিকারগ্রস্ত ও দুর্ধর্ষ অপরাধীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।