বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৈদেশিক সহায়তা অংশ থেকে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বরাদ্দ কাটছাঁট করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কাটছাঁটের এ পরিমাণ গত অর্থবছরের তুলনায়ও বেশি।
উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে এডিপির বৈদেশিক সহায়তা অংশ থেকে ছাঁটা হয়েছিল ৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে কাটছাঁট করা হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। এডিপি বাস্তবায়নে ব্যর্থতার এ চিত্র হতাশাজনক। বস্তুত এ ব্যর্থতা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ওপরই বর্তায়।
এডিপিতে কাটছাঁট যেন প্রতি বছরের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এডিপির বরাদ্দের অর্থ পুরোপুরি ব্যয় করতে না পারার মানে হল, সংশোধিত এডিপিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ কমে যাওয়া, ব্যয় করা যায়নি বলে অনেক টাকা ফেরত যাওয়া। ফলে এসব মন্ত্রণালয়ের দ্বারা ওই টাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় হতে পারবে না। এর সেবা থেকে বঞ্চিত হবে জনগণ। এটি দুঃখজনক।
বরাদ্দের টাকা ব্যয় না হওয়াটা স্পষ্টতই সংশ্লিষ্টদের অদক্ষতা। এজন্য নানা অজুহাত দেখানো হয়ে থাকে। হয়তো এবার দোহাই দেয়া হবে চীনে দেখা দেয়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন দোহাই দেয়ার সুযোগ নেই, এটি স্রেফ সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা।
প্রশ্ন হল, বাস্তবায়ন করতে না পারলে কেন নেয়া হয় উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা? সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপট বিবেচনা না করে প্রকল্প গ্রহণ করা অনুচিত। এ ছাড়া প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে মার্কেট অ্যানালাইসিস করা প্রয়োজন। বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বিবেচনা করতে হবে।
আমরা মনে করি, এডিপি বাস্তবায়নের প্রস্তুতিতেই থেকে যায় দুর্বলতা। কাজেই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েই কোনো প্রকল্পের কাজ শুরু করা উচিত। এরপরও কোনো প্রকল্পের কাজে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হলে তার কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জোরদার করতে হবে মনিটরিং ব্যবস্থা।
যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাব রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধানে মনোনিবেশ করতে হবে। যারা ব্যর্থতার পরিচয় দেবেন, তাদের জবাবদিহির ব্যবস্থা করতে হবে। এডিপির বৈদেশিক সহায়তা অংশ থেকে বরাদ্দের কাটছাঁট কেন বছর বছর বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে, এটাই কাম্য।