বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ এটা কোনো শোভাযাত্রা বা সাইকেল র্যালির প্রস্তুতি নয়। নয় কোনো এনজিওর কর্র্মসূচিও। এটা নারী জাগরণ বা অগ্রযাত্রার প্রতীক। আর এ দৃশ্যই জানান দিচ্ছে নারীরা আর পিছিয়ে নেই। তারাও আজ পারবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। প্রতিনিয়তই স্কুল ছুটির পর এভাবেই বাড়ি ফিরে যায় তারা। চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কেই এভাবেই স্কুলে যেতে ও বাড়ি ফিরতে দেখা যাবে মেয়েদের। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত সাড়ে ৪ শতাধিক ছাত্রী বাইসাইকেলে যাতায়াত করছে।
উপজেলার বেলতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও চিরিরবন্দর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাইসাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসায় এলাকায় জাগরণ সৃষ্টি করেছে। যদিও এক সময় গ্রামের মেয়েদের বাইসাইকেল সমালোচনা হতো। গ্রামের সেই সব সমালোচনাকে জয় করে মেয়েরা এখন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার, অফিস, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় বাইসাইকেলে যাতায়াত করছে। প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের সংখ্যা। এক সময় অভিভাবকরা যাতায়াতের অসুবিধার কথা চিন্তা করে দূরের কোনো প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ভর্তি করাতে চাইত না, এখন সে ধারণা পাল্টেছে। মেয়েরাও সব প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। ধর্মীয় বাধা বা মোল্লাদের ভয়ভীতি কমে গেছে। যদিও ইভটিজিং এখনো রয়েছে। এরপরেও ঘরে বসে থাকতে চায় না নারী। তারা বেরিয়ে পড়েছে শিক্ষার আলো নিতে এবং বিশ্বকে জানতে। এসব স্কুল ছাত্রী কেউ ১ কিলোমিটার থেকে ৯ কিলোমিটার পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়। যদিও বৃষ্টি এলে স্কুলে আসতে সমস্যা হয়। সাইকেল না হলে পায়ে হেটেই আসতে হতো অথবা কিছুটা পথ হেঁটে হয়তো রিকশা বা অটোবাইকে আসতে হতো। কিন্তু স্বাধীনভাবে নিজে সাইকেল চালিয়ে এলে সময় ও সুবিধা দু’টোই পাওয়া যায়।
অভিভাবক লুৎফর রহমান শাহ্ জানান, দূরের পথ হওয়া সত্ত্বেও ভালো মানের হওয়ায় বেলতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মেয়েকে ভর্তি করেছি। মেয়েটি প্রতিদিন বাইসাইকেলেই যাতায়াত করে।
মোস্তারিনা ও মেহেরুন নামে দু’জন ছাত্রী জানায়, আমাদের বাড়ি বিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে ৬ কিলোমিটার দূরে। আমরা বাইসাইকেলে করেই যাতায়াত করে থাকি। যখন প্রচুর বৃষ্টিপাত ও ঘনকুয়াশা হলে যাতায়াতে সমস্যা হয়। বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ড্রেস থাকায় রাস্তাঘাটে তেমন সমস্যা হয় না। এছাড়াও আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওএফএম মোরশেদ-উল-আলম স্যার মোটরসাইকেলে প্রায়শই বিভিন্ন রাস্তা ও মোড়ে টহল দেন।
চিরিরবন্দর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী রিমি আকতার ও অনন্যা আফরিন নামে দশম শ্রেণির দুই ছাত্রী জানায়, নিজেদের প্রতিষ্ঠিতসহ পিতামাতার আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা ৮ কিলোমিটার দূরে রাজাপুর গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বাইসাইকেলে করেই বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছি। তারা আরো জানায়, পথিমধ্যে প্রতিনিয়ত কিছু বখাটে ছেলে আমাদের সাইকেলের পিছু নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি করে থাকে। এতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। অনুরূপ অভিযোগ করেন আরো বেশ ক’জন শিক্ষার্থী।
চিরিরবন্দর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহতাবউদ্দিন সরকার জানান, ছাত্রীদের প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সময় যদি পুলিশ প্রশাসন টহল জোরদার করতো তাহলে অনেকাংশে হ্রাস পেত বখাটেদের উপদ্রব। শিক্ষার্থীরাও নির্ভয়ে বাইসাইকেলে যাতায়াত করতে পারতো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. গোলাম রব্বানী জানান, ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি বন্ধ করা আমাদের প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি আরো জানান, ১৮ই মে পর মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ব্যাপারে নির্দেশনা না থাকায় কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। সরকারি নির্দেশনা পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ইভটিজিং বা যৌন হয়রানিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সংবাদ শিরোনাম :
তুরস্কে অস্ত্রাগারে বিস্ফোরণ, নিহত ১২
এবার কি স্ত্রীকেও ‘হারাচ্ছেন’ বাশার আল-আসাদ
রুনা লায়লাজি আমাকে বাংলা শিখিয়েছেন
গর্তে ঢুকিয়ে তরুণীকে পুড়িয়ে হত্যা, যুবলীগ নেতার ছেলে আটক
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে ২ শিশুর মৃত্যু
ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা
মেঘনার জাহাজে ৭ খুন নিয়ে যা বলছেন পরিবারের সদস্যরা
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীর পূর্ণ মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে: ডা. শফিকুর
গোপন বৈঠক থেকে যুব মহিলালীগ নেত্রী গ্রেপ্তার
আমার মনে হয়েছিল আমি দুটি বাঘের সঙ্গে শুটিং করছি
ওরা নারী জাগরণের প্রতীক
- বাঙ্গালী কণ্ঠ ডেস্ক
- আপডেট টাইম : ০৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০১৭
- 402
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ