বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বরিশাল চরকাউয়ার কর্নকাঠী ও চরকরনজির নামে পাশাপাশি দু’টি গ্রাম। গ্রামের মাঝে একটি সেতু প্রায় দশ বছর আগে সিডরে ভেঙে যায়।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বা নতুন কোন সেতু নির্মাণ না হওয়াতে দুর্ভোগে রয়েছে ইউনিয়নের ২ গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী সহ হাজার হাজার মানুষ।
একটি সেতুর অভাবে মাত্র কয়েক মিনিটের পথ দীর্ঘ সময় ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। যানবাহনের অভাবে এলাকার অসুস্থ রোগীদেরও সময়মত হাসপাতালে নেয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন ঝুঁকি বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
যথা সময়ে হাসপাতালে নিতে না পারায় চিকিৎসার অভাবে রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁশের সাঁকোটি।
সরজমিনে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পাটমন্ত্রী আব্দুর রহমান বিশ্বাস। সেই সময় ৭ নং চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্জাহান ভূঁইয়া মরা নদী নামে পরিচিত এই নদীটির উপরে ও তার পার্শ্ববর্তী খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছিলেন। এতে ইউনিয়নের দুই গ্রামের মানুষ সড়ক পথে যাতায়াতে সুবিধা হয়। কিন্তু ১ বছর পূর্বে ব্রিজটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ভেঙে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাদল আকন জানায়, আমার মেয়ে স্কুল থেকে আসার পথে ওই সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার পরে তার স্কুলে যাওয়া আসা বন্ধ রয়েছে। শুধু বাদল আকনই নয়, আরো অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পাঠাচ্ছেন। তাতে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কায় রয়েছে তারা।
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের কর্নকাঠী ও চরকরনজির গ্রামে দুইটির লোকজন এই খানে একটি সেতুর অভাবে সড়ক পথে যাতায়াত করতে পারছে না। সময়মত স্কুল ও কলেজে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। যে কারণে সমস্যায় পড়ে অনেকেরই লেখাপড়ার বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম খান বলেন, অনেক বছর থেকেই এই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ন ছিল। আমরা সরকারের কাছে নির্মাণের আবেদন করেছিলাম কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকার কারণে নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
বিষয়টি নিয়ে বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী খান সাগর বলেন, এই সেতুটির কারণে অনেক দিন থেকেই শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার সাধারণ জনগণ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।
তিনি ওই পথে একটি সেতু নিমার্ণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্বে থাকা ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, এই মূহুর্তে চেয়ারম্যান হজে রয়েছেন। তবে আমরা বিষটির চেয়ারম্যানের জানা রয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয় চরকরনজি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও এস.এস.সি ভোকেশনালের প্রধান শিক্ষক রমেশ চন্দ্র দাস বলেন, এই ব্রিজটির কারণে আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অনেকাংশে কমে গেছে। ইতোপূর্বে এটি নির্মাণের জন্য মানবন্ধন সহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছিরাম কিন্তু তিনি নির্মাণের আশ্বাস দিলেও র্দীঘ দিনেও কাজ হয়নি।
বরিশাল সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, গেল বছর বিষয়টি অবগত হয়ে সাময়িকভাবে চলাচলের জন্য ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে ছিলাম। নতুন করে বরাদ্দ না আসায় সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় অভিবাবক ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথে একটি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।