ঢাকা , মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলের মাঠ যেন জলাশয়

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেখলে মনে হবে, বন্যায় প্লাবিত এলাকা অথবা কোনো জলাশয়। সেই জলাশয়ের পাশেই আছে একটি বিদ্যালয়ের আধা পাকা ঘর। সেখানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। জলাবদ্ধ জায়গাটি ওই বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। তবে সেখানে খেলাধুলার সুযোগ নেই। সেখানে খেলা করে হাঁসের দল। বছরে প্রায় ছয় মাস খেলাধুলা থেকে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত থাকলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের।

এটি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রয়না ভরট সরকারবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ। ছয় মাস ধরে পানির নিচে থাকায় খেলাধুলা ও প্রতিদিনের সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

গত ২৩ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির পুরো মাঠ পানিতে থইথই করছে। অনেক ছাত্র তাদের প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণিকক্ষে যাওয়া-আসা করছে। শ্রেণিকক্ষে যাওয়া-আসার সময় ছাত্রীদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। শরীরে পানির স্পর্শ পেয়ে কিছু সময় তারা হাসাহাসি করছে। তবে শরীরে কাদাপানি লাগায় তারা বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকছিল না। ভেজা কাপড়ে অস্বস্তিতে ক্লাসে বসে থাকতে হচ্ছিল। কয়েকজন শিক্ষক জানান, এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না, অন্যদিকে দিনের পর দিন এভাবে ভেজার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের মাঠটি খানিকটা নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে ছয় মাস ধরে পানির নিচে ডুবে আছে। মাঠটি ভরাট করার জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হলেও কোনো ফল হয়নি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহাগ বলে, ‘বছরের ছয়-সাত মাস মাঠে হাঁটুপানি জমে থাকে। এতে আমরা খেলাধুলাসহ স্বাভাবিক হাঁটাচলাও করতে পারি না। স্কুলে এসে সারা দিন কক্ষে বন্দী হয়ে থাকতে হয়।’

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয়ের এমন বেহাল দশা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। খেলাধুলা ও শরীরচর্চা না করলে পড়াশোনায় মন বসে না। কিন্তু কবে নাগাদ এই দুরবস্থা দূর হবে, কে জানে।

প্রধান শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম জানান, মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, পাঠদানে সমস্যাসহ বিদ্যালয় পরিচালনায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি মাঠটি ভরাটের জন্য দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ কম, তারপরও ধীরে ধীরে মাঠটি ভরাট করার চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া মাঠের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য একটি নালা নির্মাণ করা হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের মাঠ যেন জলাশয়

আপডেট টাইম : ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেখলে মনে হবে, বন্যায় প্লাবিত এলাকা অথবা কোনো জলাশয়। সেই জলাশয়ের পাশেই আছে একটি বিদ্যালয়ের আধা পাকা ঘর। সেখানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। জলাবদ্ধ জায়গাটি ওই বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। তবে সেখানে খেলাধুলার সুযোগ নেই। সেখানে খেলা করে হাঁসের দল। বছরে প্রায় ছয় মাস খেলাধুলা থেকে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত থাকলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের।

এটি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রয়না ভরট সরকারবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ। ছয় মাস ধরে পানির নিচে থাকায় খেলাধুলা ও প্রতিদিনের সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

গত ২৩ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির পুরো মাঠ পানিতে থইথই করছে। অনেক ছাত্র তাদের প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণিকক্ষে যাওয়া-আসা করছে। শ্রেণিকক্ষে যাওয়া-আসার সময় ছাত্রীদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। শরীরে পানির স্পর্শ পেয়ে কিছু সময় তারা হাসাহাসি করছে। তবে শরীরে কাদাপানি লাগায় তারা বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকছিল না। ভেজা কাপড়ে অস্বস্তিতে ক্লাসে বসে থাকতে হচ্ছিল। কয়েকজন শিক্ষক জানান, এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না, অন্যদিকে দিনের পর দিন এভাবে ভেজার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের মাঠটি খানিকটা নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে ছয় মাস ধরে পানির নিচে ডুবে আছে। মাঠটি ভরাট করার জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হলেও কোনো ফল হয়নি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহাগ বলে, ‘বছরের ছয়-সাত মাস মাঠে হাঁটুপানি জমে থাকে। এতে আমরা খেলাধুলাসহ স্বাভাবিক হাঁটাচলাও করতে পারি না। স্কুলে এসে সারা দিন কক্ষে বন্দী হয়ে থাকতে হয়।’

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয়ের এমন বেহাল দশা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। খেলাধুলা ও শরীরচর্চা না করলে পড়াশোনায় মন বসে না। কিন্তু কবে নাগাদ এই দুরবস্থা দূর হবে, কে জানে।

প্রধান শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম জানান, মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, পাঠদানে সমস্যাসহ বিদ্যালয় পরিচালনায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি মাঠটি ভরাটের জন্য দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ কম, তারপরও ধীরে ধীরে মাঠটি ভরাট করার চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া মাঠের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য একটি নালা নির্মাণ করা হবে।