ফারাক্কার প্রভাবে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। পানির অভাবে মরে গেছে এ অঞ্চলের পদ্মার ১০টি শাখা নদী, মৃত প্রায় আরো অন্তত ১০টি নদী। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষিতে ভয়ঙ্কর থাবা আঘাত হেনেছে ফারাক্কা। পানির অভাবে ৭০ভাগ জেলে পেশা বদল করেছে। এবছর পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির স্তর নেমে যায় ৬ দশমিক ৮৭ মিটারে। যা গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রাজশাহীতে পদ্মার বুকে একসময় পাল তোলা বড় বড় নৌকা চলত, একথা এখন হয়তো অনেকের কাছেই কল্প কাহিনীর মত শোনাবে। কারণ, নদীর সুবিশাল বক্ষে এখন বছর জুড়েই চোখে পড়ে ধুধু বালুচর। অনেক এলাকাতেই হচ্ছে ফসলের আবাদ। বর্ষা মৌসুমের কয়েয়কটা দিন ছাড়া পদ্মা নদীর রাজশাহী পয়েন্টে পানির দেখা মেলা কষ্টকর। নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, গেলো চার দশকে এ অঞ্চলের নারোদ, মুশাখাঁ, হোজা, সিনার কুপ, ইছামতি, বারাহি, রায়চাঁন, সন্ধ্যা, কমলা, খালিসা ডাঙ্গি শাখা নদী এখন মৃত খালে পরিনত হয়েছে। মরে যাবার উপক্রম বারনই, বড়াল, গড়াই, মাথাভাঙ্গা, চিত্রা, কুমার, চন্দনা, পাগলা নদী। পানি না থাকায় এ অঞ্চলের নদীপথের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১৫শ কিলোমিটার নৌপথ নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষির উপর প্রভাব পড়েছে সব থেকে বেশি। এ অঞ্চলের কৃষি এখন ভূ গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। পানির স্তর প্রতি বছরই নিচের দিকে নামছে এসবই হচ্ছে পদ্মায় পানির প্রবাহ কমে যাবার কারণে।
তিনি বলেন, পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। আর মাছের অভাবে এ অঞ্চলের প্রায় ৭০ভাগ জেলেই পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই এলাকা ছেড়া চলে গেছে।
এদিকে, রাজশাহীতে পদ্মায় এবছরই পানির স্তর সব থেকে নিচে নেমে গেছে। এপ্রিল মে মাসে প্রতিবছরই পানির প্রবাহ কিছুটা কমে গেলেও এবারের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত ১০ মে রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানির উচ্চতা ছিলো ৬ দশমিক ৮৭ মিটার। এর আগের বছর গুলোতে এই উচ্চতা ছিলো দুই আড়াই মিটার বেশি। এদিকে, শুধু খরা মৌসুমে নয়, বর্ষাতেও রাজশাহেিত খুব বেশি পানি থাকেনা। গেলো ১৬ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেলে এই সময়ে একবারও তেমন বন্যা হয়নি। এই সময়ে মাত্র দু বছর বিপদসীমা ছুঁয়েছে। রাজশাহী পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ৫০ মিটারকে। ২০০৩ সালে বর্ষা মৌসুমে এই উচ্চতা উঠে ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার আর ২০১৩ সালে তা উঠেছিলো ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। অন্য বছর গুলোতে পানি বিপদসীমা ছুতে পারেনি।
এদিকে, ফারাক্কা নিয়ে দু দেশের মধ্যে চুক্তির পরও পদ্মায় পানির দেখা মিলছেনা। গত ১৬ বছরের পানি প্রাপ্তির হিসাবে দেখা গেছে মাত্র তিন বছর ছাড়া প্রতি খরা মৌসু্মইে পানি পাওয়া গেছে চুক্তির থেকে কম। এদিকে ১৯৯৬ সালে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি অনুযায়ী খরা মওসুম হিসেবে জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবার কথা বাংলাদেশের। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ২০০১ থেকে ২০১৬সাল পর্যন্ত মাত্র তিন বছর ৩৫ হাজারের বেশি কিউসেক পানি মিলেছে। বাকি বছরগুলোতে পাওয়া গেছে অনেক কম। পানি উন্নয়ন বোর্ডে তথ্যমতে, ২০০৭, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ৪০ হাজার কিউসেকের বেশি পানি পাওয়া গেছে। সব থেকে কম পানি পাওয়া গেছে, ২০১০ সালে ১৩ হাজার ৮৪৯ কিউসেক পানি। আর এবছর সবনিম্ন পানি পাওয়া গেলে ১৫হাজার কিউসেক পানি।
তবে, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান, ফারাক্কা পয়েন্টে পর্যাপ্ত থাকলেই কেবল হিস্যা অনুযায়ী পানি পাওয়া কথা। কিন্তু গেলো কয়েক বছর ধরে সেখানেই পানি না থাকায় আমরা হিস্যা অনুযায়ি পানি পাওয়া যায়নি।
তবে, বিভিন্ন সত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গঙ্গার উৎস থেকে ফারাক্কা পর্যন্ত বহু বাঁধ আর খালের মাধ্যমে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। কৃত্রিম খালসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণে ফারাক্কা পয়েন্টে পানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার জানান, ফারাক্কার প্রভাবেই আজকে পদ্মার এই মরণ দশা। এর প্রভাব শুধু রাজশাহী অঞ্চলেই নয় দক্ষিনের জেলাগুলোর উপরও প্রভাব পড়ছে। আগামী দিনে এটা আরো ভয়াবহ হবে।
রাজশাহীতে পদ্মার বুকে একসময় পাল তোলা বড় বড় নৌকা চলত, একথা এখন হয়তো অনেকের কাছেই কল্প কাহিনীর মত শোনাবে। কারণ, নদীর সুবিশাল বক্ষে এখন বছর জুড়েই চোখে পড়ে ধুধু বালুচর। অনেক এলাকাতেই হচ্ছে ফসলের আবাদ। বর্ষা মৌসুমের কয়েয়কটা দিন ছাড়া পদ্মা নদীর রাজশাহী পয়েন্টে পানির দেখা মেলা কষ্টকর। নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, গেলো চার দশকে এ অঞ্চলের নারোদ, মুশাখাঁ, হোজা, সিনার কুপ, ইছামতি, বারাহি, রায়চাঁন, সন্ধ্যা, কমলা, খালিসা ডাঙ্গি শাখা নদী এখন মৃত খালে পরিনত হয়েছে। মরে যাবার উপক্রম বারনই, বড়াল, গড়াই, মাথাভাঙ্গা, চিত্রা, কুমার, চন্দনা, পাগলা নদী। পানি না থাকায় এ অঞ্চলের নদীপথের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১৫শ কিলোমিটার নৌপথ নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষির উপর প্রভাব পড়েছে সব থেকে বেশি। এ অঞ্চলের কৃষি এখন ভূ গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। পানির স্তর প্রতি বছরই নিচের দিকে নামছে এসবই হচ্ছে পদ্মায় পানির প্রবাহ কমে যাবার কারণে।
তিনি বলেন, পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। আর মাছের অভাবে এ অঞ্চলের প্রায় ৭০ভাগ জেলেই পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই এলাকা ছেড়া চলে গেছে।
এদিকে, রাজশাহীতে পদ্মায় এবছরই পানির স্তর সব থেকে নিচে নেমে গেছে। এপ্রিল মে মাসে প্রতিবছরই পানির প্রবাহ কিছুটা কমে গেলেও এবারের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত ১০ মে রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানির উচ্চতা ছিলো ৬ দশমিক ৮৭ মিটার। এর আগের বছর গুলোতে এই উচ্চতা ছিলো দুই আড়াই মিটার বেশি। এদিকে, শুধু খরা মৌসুমে নয়, বর্ষাতেও রাজশাহেিত খুব বেশি পানি থাকেনা। গেলো ১৬ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেলে এই সময়ে একবারও তেমন বন্যা হয়নি। এই সময়ে মাত্র দু বছর বিপদসীমা ছুঁয়েছে। রাজশাহী পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ৫০ মিটারকে। ২০০৩ সালে বর্ষা মৌসুমে এই উচ্চতা উঠে ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার আর ২০১৩ সালে তা উঠেছিলো ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। অন্য বছর গুলোতে পানি বিপদসীমা ছুতে পারেনি।
এদিকে, ফারাক্কা নিয়ে দু দেশের মধ্যে চুক্তির পরও পদ্মায় পানির দেখা মিলছেনা। গত ১৬ বছরের পানি প্রাপ্তির হিসাবে দেখা গেছে মাত্র তিন বছর ছাড়া প্রতি খরা মৌসু্মইে পানি পাওয়া গেছে চুক্তির থেকে কম। এদিকে ১৯৯৬ সালে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি অনুযায়ী খরা মওসুম হিসেবে জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবার কথা বাংলাদেশের। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ২০০১ থেকে ২০১৬সাল পর্যন্ত মাত্র তিন বছর ৩৫ হাজারের বেশি কিউসেক পানি মিলেছে। বাকি বছরগুলোতে পাওয়া গেছে অনেক কম। পানি উন্নয়ন বোর্ডে তথ্যমতে, ২০০৭, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ৪০ হাজার কিউসেকের বেশি পানি পাওয়া গেছে। সব থেকে কম পানি পাওয়া গেছে, ২০১০ সালে ১৩ হাজার ৮৪৯ কিউসেক পানি। আর এবছর সবনিম্ন পানি পাওয়া গেলে ১৫হাজার কিউসেক পানি।
তবে, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান, ফারাক্কা পয়েন্টে পর্যাপ্ত থাকলেই কেবল হিস্যা অনুযায়ী পানি পাওয়া কথা। কিন্তু গেলো কয়েক বছর ধরে সেখানেই পানি না থাকায় আমরা হিস্যা অনুযায়ি পানি পাওয়া যায়নি।
তবে, বিভিন্ন সত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গঙ্গার উৎস থেকে ফারাক্কা পর্যন্ত বহু বাঁধ আর খালের মাধ্যমে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। কৃত্রিম খালসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণে ফারাক্কা পয়েন্টে পানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার জানান, ফারাক্কার প্রভাবেই আজকে পদ্মার এই মরণ দশা। এর প্রভাব শুধু রাজশাহী অঞ্চলেই নয় দক্ষিনের জেলাগুলোর উপরও প্রভাব পড়ছে। আগামী দিনে এটা আরো ভয়াবহ হবে।