ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুখের তিন লক্ষণেই বুঝে নিন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে কি-না

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দীর্ঘমেয়াদি একটি ব্যাধি হচ্ছে ডায়াবেটিস। দিন দিন এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছরই অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস এমন একটি ব্যাধি যা ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

গ্লুকোজের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে ওঠায় রক্তপ্রবাহে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। যদিও ডায়াবেটিসের সাধারণ কয়েকটি লক্ষণ সবাই কমবেশি জানলেও তা এড়িয়ে যান। যেমন- ডায়াবেটিস হলে অত্যধিক ক্ষুধা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি এবং খিটখিটে মেজাজ হয়। পাশাপাশি ডায়াবেটিস হলে মুখে তিনটি সতর্কতা লক্ষণ প্রকাশ পায়। চলুন জেনে নেয়া যাক সে লক্ষণগুলো-

দাঁতের ক্ষতি

মাড়ির রোগ হওয়ার কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাড়ির চারপাশে প্লাক গঠনের ফলে দাঁত আলগা হতে শুরু করে। ফলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের তুলনায় ডায়াবেটিস রোগীরা দাঁতের সমস্যায় বেশি ভোগেন। যারা নিয়মিত দাঁতের যত্ন নেন না; তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়ে। দাঁত নষ্ট হওয়ার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো- মাড়ির চারপাশ ফুলে যাওয়া, ঘা ও দাঁতের ব্যথা।

শুকনো মুখ

টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের উভয় ক্ষেত্রেই সাধারণ ও প্রাথমিক লক্ষণগুলোর শুকনো বা শুষ্ক মুখ অন্যতম। সবসময় মুখ ও গলা শুকিয়ে আসে এক্ষেত্রে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে রোগীর মুখের লালা উৎপাদন কমে যায়।

শুষ্ক মুখের লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- রুক্ষ বা শুকনো জিহ্বা, মুখে আর্দ্রতার অভাব, ঠোঁট ফেটে যাওয়া, মুখে ফোলাভাব, খাবার গিলতে বা কথা বলতে অসুবিধা হওয়া ইত্যাদি।

মাড়ির রোগ

শুধু শুষ্ক মুখ নয়, পাশাপাশি দাঁতের চারপাশে এবং মাড়ির নিচে লালা উৎপাদনকেও প্রভাবিত করে রক্তে শর্করার মাত্রা। শরীরে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে জীবাণুর সংক্রমণ বেড়ে যায়। ফলে মাড়ির চারপাশে জ্বালা করে।

এমনকি মাড়ির রোগ, দাঁত ক্ষয়ও হতে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে মাড়ির রোগ বেশি দেখা যায়। মাড়ির রোগ হওয়া রক্তের শর্করার মাত্রা আরও খারাপ হওয়ার অবস্থার ইঙ্গিত।

মাড়ির রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- লাল, ফোলা, কালশিটে বা মাড়ি দিয়ে রক্তপাত, দাঁত আলগা হওয়া, খাবারে কামড় বা চিবানোর সময় কষ্ট হওয়া, মুখের দুর্গন্ধ বা খারাপ স্বাদ ইত্যাদি।

করণীয়

মুখের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জটিলতাগুলো রোধ করতে ডায়াবেটিস রোগীকে অবশ্যই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পাশাপাশি ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী দাঁতের যত্ন নিতে হবে।

ডায়াবেটিস হওয়ার পর সবাই পা এবং চোখের যত্নের দিকে মনোনিবেশ করেন। দাঁতের যত্ন নিতে ভুলেই যান। মনে রাখতে হবে, মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রতিও সচেতন হতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

মুখের তিন লক্ষণেই বুঝে নিন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে কি-না

আপডেট টাইম : ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ দীর্ঘমেয়াদি একটি ব্যাধি হচ্ছে ডায়াবেটিস। দিন দিন এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছরই অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস এমন একটি ব্যাধি যা ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

গ্লুকোজের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে ওঠায় রক্তপ্রবাহে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। যদিও ডায়াবেটিসের সাধারণ কয়েকটি লক্ষণ সবাই কমবেশি জানলেও তা এড়িয়ে যান। যেমন- ডায়াবেটিস হলে অত্যধিক ক্ষুধা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি এবং খিটখিটে মেজাজ হয়। পাশাপাশি ডায়াবেটিস হলে মুখে তিনটি সতর্কতা লক্ষণ প্রকাশ পায়। চলুন জেনে নেয়া যাক সে লক্ষণগুলো-

দাঁতের ক্ষতি

মাড়ির রোগ হওয়ার কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাড়ির চারপাশে প্লাক গঠনের ফলে দাঁত আলগা হতে শুরু করে। ফলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের তুলনায় ডায়াবেটিস রোগীরা দাঁতের সমস্যায় বেশি ভোগেন। যারা নিয়মিত দাঁতের যত্ন নেন না; তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়ে। দাঁত নষ্ট হওয়ার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো- মাড়ির চারপাশ ফুলে যাওয়া, ঘা ও দাঁতের ব্যথা।

শুকনো মুখ

টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের উভয় ক্ষেত্রেই সাধারণ ও প্রাথমিক লক্ষণগুলোর শুকনো বা শুষ্ক মুখ অন্যতম। সবসময় মুখ ও গলা শুকিয়ে আসে এক্ষেত্রে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে রোগীর মুখের লালা উৎপাদন কমে যায়।

শুষ্ক মুখের লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- রুক্ষ বা শুকনো জিহ্বা, মুখে আর্দ্রতার অভাব, ঠোঁট ফেটে যাওয়া, মুখে ফোলাভাব, খাবার গিলতে বা কথা বলতে অসুবিধা হওয়া ইত্যাদি।

মাড়ির রোগ

শুধু শুষ্ক মুখ নয়, পাশাপাশি দাঁতের চারপাশে এবং মাড়ির নিচে লালা উৎপাদনকেও প্রভাবিত করে রক্তে শর্করার মাত্রা। শরীরে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে জীবাণুর সংক্রমণ বেড়ে যায়। ফলে মাড়ির চারপাশে জ্বালা করে।

এমনকি মাড়ির রোগ, দাঁত ক্ষয়ও হতে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে মাড়ির রোগ বেশি দেখা যায়। মাড়ির রোগ হওয়া রক্তের শর্করার মাত্রা আরও খারাপ হওয়ার অবস্থার ইঙ্গিত।

মাড়ির রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- লাল, ফোলা, কালশিটে বা মাড়ি দিয়ে রক্তপাত, দাঁত আলগা হওয়া, খাবারে কামড় বা চিবানোর সময় কষ্ট হওয়া, মুখের দুর্গন্ধ বা খারাপ স্বাদ ইত্যাদি।

করণীয়

মুখের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জটিলতাগুলো রোধ করতে ডায়াবেটিস রোগীকে অবশ্যই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পাশাপাশি ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী দাঁতের যত্ন নিতে হবে।

ডায়াবেটিস হওয়ার পর সবাই পা এবং চোখের যত্নের দিকে মনোনিবেশ করেন। দাঁতের যত্ন নিতে ভুলেই যান। মনে রাখতে হবে, মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রতিও সচেতন হতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।