বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে কর্মব্যস্ত জীবনে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার সময় খুব কম মানুষেরই আছে। তাছাড়া সারাদিন অফিস করে দিনশেষে শরীরচর্চা করার ধৈর্যও থাকে না। তখন শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
তবে বিশষেজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ক্যালোরি পোড়ানোর জন্য এক্সারসাইজই কিন্তু একমাত্র উপায় নয়। আপনার ফিটনেস গোল-এর অংশ হতে পারে হাইড্রোথেরাপি। এক ঘণ্টা গরম পানিতে গোসল করে পুড়িয়ে ফেলতে পারেন ১৩০ ক্যালোরি।
২০১৬ সালে ব্রিটেনের লবর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডা. ফকনার ১৪ জন অতিরিক্ত ওজনের পুরুষকে নিয়ে একটি গবেষণা করেন। প্রথম ক্ষেত্রে তাদের ৬০ মিনিট সাইক্লিং করতে বলা হয়, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ওই একই সময় ধরে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার পানিতে গোসল করতে বলা হয়। এই দুই ক্ষেত্রেই শুধু বসে থাকতে যে পরিমাণ এনার্জি লাগে, তার থেকে বেশি এনার্জি ব্যয় হয়। দেখা গিয়েছে, গরম পানিতে গোসল করে বসে থাকার তুলনায় ৭৯ শতাংশ বেশি ক্যালোরি ঝরানো সম্ভব হয়। যদিও ৬০ মিনিট বাইকিং বা সাইক্লিং-য়ে ৭৫০শতাংশ বেশি ক্যালোরি ঝরানো সম্ভব।
তাই মেদ ঝরানোর জন্য এক্সারসাইজই সেরা উপায় হলেও যারা ক্লান্তি, স্ট্রেস, পেশীর যন্ত্রণার কারণে এক্সারসাইজ করে উঠতে পারেন না, তারা বিকল্প হিসেবে বেছে নিতেই পারেন গরম পানিতে গোসল।
জানলে অবাক হবেন যে, শরীরের মেটাবলিজম উন্নত করে ওজন কমাতে সাহায্য করাতেই আটকে নেই গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা। আমাদের হার্ট, ত্বক ও পেশী সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে গরম পানির গোসল।
ব্লাড সুগার
ওই একই গবেষণাপত্রে ডা. ফকনার উল্লেখ করেছিলেন, খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে এই তাপমাত্রার (১০৪ ফারেনহাইট) পানিতে গোসাল করলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। এই প্রভাব সারা দিন বজায় না থাকলেও খাওয়ার আগে গোসল করে নিয়ে ওষুধ খাওয়া এড়াতে পারেন। তাই যারা টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে গরম পানিতে গোসল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
হার্ট
২০১৫ সালে স্টিম বাথ বা সওনা বাথের প্রভাব নিয়ে ২ হাজার ৩১৫ জন মধ্যবয়সী পুরুষকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়। দেখা গিয়েছে, যারা নিয়মিত সওনা বাথ নিয়ে অভ্যস্ত তাদের হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, ফ্যাটাল করোনারি হার্ট ডিজিজ, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম।
বয়স্কদের জন্য
২০০৮ সালে ৮১ জন বয়স্ক রোগীকে নিয়ে ডা. ফকনার একটি গবেষণা করেন। ফলাফলে দেখা যায়, মাত্র ৩০ মিনিট গরম পানিতে গোসল করেই তিন মাসের মধ্যে কমে যেতে পারে অস্টিওআর্থারাইটিস বা ক্রনিক ব্যাক পেনের মতো সমস্যা।