বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মহামারি করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির নাম যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত সংক্রমণ ও মৃত্যুতে বৈশ্বিক তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে দেশটি। মারণ ভাইরাস করোনায় মার্কিন মুলুকে এ পর্যন্ত ৮ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তও ছাড়িয়েছে ৫ কোটি। এরইমধ্যে সপ্তাহ দুই ধরে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনায় মৃত্যু বাড়তে শুরু করেছে।
এ পর্যন্ত দেশটিতে যত লোক মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই বয়স্ক এবং তাদের করোনার ভ্যাকসিন নেওয়া ছিল না। করোনায় ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালেই বেশি মার্কিনি মারা গেছেন। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমাণ মার্কিনির মৃত্যু হয়েছিল, করোনায় এরইমধ্যে এরচেয়ে দ্বিগুণ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
এদিকে মহামারি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. কেরি অ্যালথফ বলছেন, করোনাভাইরাসকে শরীর প্রতিরোধ করতে পারে, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও এমন পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এর আগ পর্যন্ত সংক্রমণ ও মৃত্যুর এ স্রোত দেখতে হবে। এ খুবই সহজ সত্য।
গত কয়েক মাস ধরে সংক্রমণ কিছুটা কমে আসার পর আবারও নতুন করে শনাক্ত বৃদ্ধির কারণ হিসেবে মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞরা অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কথা বলছেন। এ ভ্যারিয়েন্টের কারণেই গত দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ফের বাড়ছে। এরইমধ্যে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক রাজ্যে শনাক্ত হয়েছে। যে কারণে এই শীতে গোটা দেশের কোভিড পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফাইজারের টিকাদান শুরুর পর এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ বছরের এপ্রিলে দেশটিতে মডার্না ও সিঙ্গেল ডোজের জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়।
করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের নাম। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটি, মৃত্যুর তালিকার দ্বিতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪১ জনের মৃত্যু নিয়ে মোট মৃত্যু ৬ লাখ ১৭ হাজার ১২১ জন এবং নতুন ৩ হাজার ৮২৬ জন শনাক্ত নিয়ে মোট শনাক্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৫ জনে। আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার ৬৩০ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৮ জন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে শীতপ্রধান রাজ্যগুলোতে। এরমধ্যে ভারমন্ট, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও মিশিগানে সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে ওমিক্রন শনাক্ত হলেও এখনো দৈনিক আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৯৯ শতাংশের মধ্যে দেখা মিলছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের।