বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ শরীরকে ফিট রাখতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। প্রত্যেক মানুষই চায় তার শরীরটাকে সুগঠিত এবং আকর্ষণীয় রাখতে। এর জন্য যদি আপনি পুরো খাওয়া-দাওয়াই বন্ধ করে দেন তাহলে মারাত্মক ভুল করবেন। খাওয়া-দাওয়া ঠিক রেখে আপনি ব্যায়ামের মাধ্যমেই আপনার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেন। তবে আপনাকে জানতে হবে ব্যায়ামের প্রকৃতি বা ধরন।
হুটহাট করে পেশি নাড়াচাড়া করলেন এবং কিছুক্ষণ পর পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লেন তাতে কিন্তু কাজের কাজ হবে না কিছুই। মাঠে মারা যাবে আপনার পরিশ্রম। সুন্দর শরীর গঠনের জন্য আপনার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম রয়েছে, আপনি সেগুলোই অনুশীলন করুন। দৈনিক না পারলেও সপ্তাহে অন্তত দু-তিন দিন করুন। কয়েক মাস অনুশীলনের পর দেখবেন বন্ধুবান্ধবই কেমন ঘোরলাগা চোখে তাকাচ্ছে আপনার দিকে। তাদের চোখে-মুখে কেবল ফুটছে আপনার ফিগারের প্রশংসা। হ্যাঁ, একটি কথা মনে রাখবেন, যে ১১টি ব্যায়ামের কথা বলা হচ্ছে তা কিন্তু সবই আপনাকে করতে হবে ১ থেকে ১১ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে। সবচেয়ে ভালো হয়, ব্যায়ামগুলো যদি আপনি সূর্য ওঠার সাথে সাথে করেন।
১.প্রার্থনার ভঙ্গিতে দাঁড়ান
পা দুটোকে একত্র করে দাঁড়ান এবং হাত দুটোকে সামনে এনে প্রার্থনার ভঙ্গিতে অবস্থান নিন। পায়ের পাতার ওপর চাপ দিন এবং ঊরুর সামনের মাংস টানতে থাকুন। বুক এবং মাথা উঠানোর সময় কাঁধ দুটোকে শিথিল রাখুন। গলার পেশিতে কোনো টান রাখবেন না। এই ভঙ্গিতে অল্প করে শ্বাস নিন।
২.পেছন দিকে বাঁকা হোন
শ্বাস নিন এবং আপনার হাত দুটোকে মাথার উপরে তুলুন। আঙুলগুলো সোজা রাখুন। পা দুটো যেন মাটিতে থাকে সে দিকে খেয়াল রাখুন। এবার উত্তোলিত বাহুদ্বয়কে হাতসহ পেছনের দিকে নিয়ে আসুন। আস্তে আস্তে পেছন দিকে বাঁকা হোন। তলপেটটা যেন সামনের দিকে থাকে।
৩.সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ুন
শ্বাস ছাড়–ন। আপনি সামনের দিকে ঝুঁকে হাত দুটো মেঝেতে রাখুন। খেয়াল রাখবেন, আপনার হাঁটু যেন বেঁকে না যায়। হাতের আঙুল দিয়ে পায়ের পাতা স্পর্শ করুন। (তবে আপনার হাত মেঝে পর্যন্ত না পৌঁছলে হাঁটু দুটো ভাঁজ করতে পারেন)। ঘাড়টাকে শিথিল করুন এবং মাথাটাকে দু’হাঁটুর সামনে ফেলে দিন। তবে পা দুটো শক্ত রাখবেন। ঊরুর পেশি এতে সঙ্কুচিত হবে। আপনার মেরুদণ্ডকে যতটা সম্ভব সোজা রাখবেন।
৪.লেফট লাঞ্জ
শ্বাস নিন। আগের মতো হাত দুটোকে পায়ের পাতার কাছে আনুন। হাঁটু দুটো ভাঁজ করুন, তারপর আপনার ডান পাটা পেছনে নিয়ে যান। মেঝেতে এখন কেবল আপনার বাঁ পাটাই ভর করে আছে। এবার সামনের দিকে আপনার দু’বাহুর মাঝে হাঁটুর সামনে বুক নিয়ে ঠেলুন জোরে চাপ দিন। খেয়াল রাখবেন, আপনার গোড়ালি ও কাঁধ যেন সোজা লাইনে থাকে।
৫.বুকডনের ভঙ্গি
শ্বাস ছেড়ে দিন। অন্য পা পেছনে নিয়ে যান। হাত দুটো এবং পায়ের পাতার সামনের অংশ দিয়ে সোজা মেঝেতে ভর দিন এবং নিঃশ্বাস ধরে রাখুন। শরীরটাকে সোজা রাখার চেষ্টা করুন। পা দুটো, বাহু দুটো সবই সোজা থাকবে, ভাঁজ হবে না কোথাও। মাথাটাকে মেরুদণ্ডের একই লাইনে রাখুন। আপনার দৃষ্টি রাখুন হাত দুটোর দিকে।
৬.চার হাত-পায়ে বিশেষ ভঙ্গি
এবার শ্বাস ছাড়–ন। হাঁটু দুটো ভাঁজ করে এবং নিচু করে মেঝেতে রাখুন। তারপর বাহু দুটো ভাঁজ করুন এবং আপনার বুক ও চিবুক (অথবা কপাল) আস্তে করে মেঝেতে স্থাপন করুন। আপনার মুখটি মেঝের সাথে সমান্তরালভাবে রাখুন। পায়ের আঙুলগুলো বাঁকা করুন।
৭.গোখরা সাপের মতো ভঙ্গি
শ্বাস নিন। বাহু দুটো সোজা করুন, তবে কনুই দুটোকে আটকে রাখবেন না। বাহু ঠেলে শরীরটাকে সামনে নিয়ে যান ঠিক যেন সাঁতার কাটছেন আপনি। আপনার পিঠ বাঁকা করতে হবে, তবে পা দুটো পুরোপুরি ছড়ানো থাকবে। পায়ের আঙুলগুলো মেঝের ওপর থাকবে। খেয়াল রাখবেন, আপনার বুকটা যেন উঠানো থাকে।
৮.রাইট লাঞ্জ
শ্বাস নিন। ডান পাকে ভাঁজ করে দু’হাতের মধ্যে আনুন। বাম পাটা পেছনে ছড়িয়ে থাকবে। ডান পায়ের গোড়ালি মেঝের ওপর থাকবে। হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে বুক দিয়ে হাঁটুতে চাপ দিন। ঘাড়টাকে শিথিল রাখুন।
৯.শরীরটাকে সামনের দিকে বাঁকা করুন
শ্বাস ছাড়–ন। পা দুটোকে সোজা করুন। শরীরের সামনের অংশটিকে সামনের দিকে বাঁকিয়ে এনে হাত দুটো আপনার দু’পায়ের পাতার দু’পাশে রাখুন। মাথাটাকে দু’হাঁটুর সামনে নিয়ে আসুন। আপনার পায়ে যাতে টানটান ভাব থাকে সেটার দিকে খেয়াল রাখুন। ঊরু দুটোর মাংসপেশির সংকোচন আপনি টের পাবেন। পায়ের পাতা দুটো মেঝের উপর হালকাভাবে থাকবে।
১০.শরীরটাকে পেছনে বাঁকান
শ্বাস নিন। আপনার হাত দুটো মেঝে ছেড়ে শূন্যে উঠাতে উঠাতে শ্বাস নিতে থাকুন। হাত দুটো মাথার ওপর দিয়ে নিন। শরীরটাকে নিতম্ব থেকে পেছনে বাঁকান। বুকটাকে চিতিয়ে ধরুন। আপনার দৃষ্টি পেছনে নিন। হাতের মাঝ দিয়ে দেখুন। সোজা রাখুন হাতের আঙুলগুলো। ওভাবেই বাঁকিয়ে রাখুন শরীরটাকে।
১১.সোজা হয়ে দাঁড়ান
শ্বাস ছাড়ুন। হাত দুটোকে এবার শরীরের দু’পাশে নিয়ে আসুন। সোজা সামনের দিকে তাকান। মুখের মাংসপেশিগুলোকে শিথিল রাখুন। আপনার মাথা এবং নিতম্ব একেবারে আপনার দু’পায়ের ওপর ভর দিয়ে থাকবে। মুখমণ্ডল শিথিল রাখুন এবং হাতের আঙুলগুলো মেঝের দিকে রাখুন। গভীরভাবে অল্প কয়েকবার শ্বাস নিন এবং আবার ১ নম্বর থেকে শুরু করুন।