ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাইটানিকের কাছে নতুন ধ্বংসাবশেষের সন্ধান

আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে নতুন ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে এর সঙ্গে নিখোঁজ হওয়া ডুবোযান টাইটানের সম্পর্ক রয়েছে কি না— তা এখনও স্পষ্ট নয়।

টাইটানের অনুসন্ধানে যে দুটি যন্ত্রচালিত ডুবোযান বা রোভ ব্যবহার করা হচ্ছিল সেগুলোর একটি এই ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পেয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড বাহিনী।

তবে এই অনুসন্ধানে সহায়তা করার জন্য ভিক্টর ৬০০০ নামের যে বিশেষ রোবট ফ্রান্স পাঠিয়েছে, সেটি সাগরের গভীরে গিয়ে ধংসাবশেষের নমুনা সংগ্রহ সুক্ষ্ম ও কৌশলীভাবে জাহাজ বা ডুবোজাহাজ কাটতে সক্ষম। যে ধ্বংসাবশেষটি পাওয়া গেছে, সেটির নমুনা সংগ্রহে এই রোবটটিকে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।

ধ্বংসাবশেষটির কোনো ছবি এখনও পাওয়া যায়নি। মার্কিন কোস্টগার্ড বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধ্বংসাবশেষটির নমুনা সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে।

১৯১২ সালে যুক্তরাজ্যের সাউথ হ্যাম্পটন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি যাওয়ার পথ হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আটলান্টিক মহাসগারে ডুবে যায় তৎকালীন বিশ্বের বৃহত্তম বিলাসবহুল জাহাজ টাইটানিক। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় জাহাজটির ২ হাজার ২২৪ জন যাত্রীর মধ্যে সাগরের হিমশীতল পানিতে ডুবে মারা যান দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ।

আটলান্টিক সাগরের যে এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ, সেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে। সাগরের গভীরে এই ধ্বংসাবশেষটি দেখতে গত রোববার কানাডার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড ল্যাব্রাডর দ্বীপের উপকূল থেকে টাইটান নামের একটি ডুবোযানে চেপে রওনা হন চালকসহ মোট ৫ জন আরোহী।

উপকূলের যে এলাকা থেকে রওনা দিয়েছিল টাইটান, সেখান থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি।

এই অভিযানে অংশ নেওয়া আরোহীরা হলেন, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান (১৯), টাইটান প্রস্তুতকারী কোম্পানি ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) এবং সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)।

ডুবোযানটির পাইলট ছিলেন স্টকটন রাশ নিজেই। অভিযানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক অভিযাত্রীর মাথাপিছু ব্যয় হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।

কিন্তু রোববার রওনা হওয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর মাদার শিপ সাবমেরিন ও জাহাজ চলাচল সম্পর্কিত সমস্ত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে টাইটান। তারপর টানা ২০০ ঘণ্টা ধরে তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর মিলল টাইটানের ধ্বংসাবশেষ।

মার্কিন কোস্টগার্ড বাহিনী জানিয়েছে, ডুবোযানটির সন্ধান পেতে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের আশপাশের প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চষে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্র : বিবিসি

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

টাইটানিকের কাছে নতুন ধ্বংসাবশেষের সন্ধান

আপডেট টাইম : ০৭:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩

আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে নতুন ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে এর সঙ্গে নিখোঁজ হওয়া ডুবোযান টাইটানের সম্পর্ক রয়েছে কি না— তা এখনও স্পষ্ট নয়।

টাইটানের অনুসন্ধানে যে দুটি যন্ত্রচালিত ডুবোযান বা রোভ ব্যবহার করা হচ্ছিল সেগুলোর একটি এই ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পেয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড বাহিনী।

তবে এই অনুসন্ধানে সহায়তা করার জন্য ভিক্টর ৬০০০ নামের যে বিশেষ রোবট ফ্রান্স পাঠিয়েছে, সেটি সাগরের গভীরে গিয়ে ধংসাবশেষের নমুনা সংগ্রহ সুক্ষ্ম ও কৌশলীভাবে জাহাজ বা ডুবোজাহাজ কাটতে সক্ষম। যে ধ্বংসাবশেষটি পাওয়া গেছে, সেটির নমুনা সংগ্রহে এই রোবটটিকে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।

ধ্বংসাবশেষটির কোনো ছবি এখনও পাওয়া যায়নি। মার্কিন কোস্টগার্ড বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধ্বংসাবশেষটির নমুনা সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে।

১৯১২ সালে যুক্তরাজ্যের সাউথ হ্যাম্পটন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি যাওয়ার পথ হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আটলান্টিক মহাসগারে ডুবে যায় তৎকালীন বিশ্বের বৃহত্তম বিলাসবহুল জাহাজ টাইটানিক। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় জাহাজটির ২ হাজার ২২৪ জন যাত্রীর মধ্যে সাগরের হিমশীতল পানিতে ডুবে মারা যান দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ।

আটলান্টিক সাগরের যে এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ, সেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে। সাগরের গভীরে এই ধ্বংসাবশেষটি দেখতে গত রোববার কানাডার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড ল্যাব্রাডর দ্বীপের উপকূল থেকে টাইটান নামের একটি ডুবোযানে চেপে রওনা হন চালকসহ মোট ৫ জন আরোহী।

উপকূলের যে এলাকা থেকে রওনা দিয়েছিল টাইটান, সেখান থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি।

এই অভিযানে অংশ নেওয়া আরোহীরা হলেন, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান (১৯), টাইটান প্রস্তুতকারী কোম্পানি ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) এবং সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)।

ডুবোযানটির পাইলট ছিলেন স্টকটন রাশ নিজেই। অভিযানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক অভিযাত্রীর মাথাপিছু ব্যয় হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।

কিন্তু রোববার রওনা হওয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর মাদার শিপ সাবমেরিন ও জাহাজ চলাচল সম্পর্কিত সমস্ত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে টাইটান। তারপর টানা ২০০ ঘণ্টা ধরে তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর মিলল টাইটানের ধ্বংসাবশেষ।

মার্কিন কোস্টগার্ড বাহিনী জানিয়েছে, ডুবোযানটির সন্ধান পেতে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের আশপাশের প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চষে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্র : বিবিসি