ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলার কারণ জানালেন পুতিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ওপর চালানো ব্যাপক বিমান হামলা ছিল পশ্চিমাদের সরবরাহকৃত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রুশ ভূখণ্ডে কিয়েভের হামলার ‘প্রতিক্রিয়া’।

বৃহস্পতিবারের হামলার ফলে ইউক্রেনের ওডেসা, খারকিভ, লুটস্কসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভও হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। কিন্তু ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলছে রাজধানী লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা সব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।

কিয়েভের সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে হামলা চলে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘আমাদের জ্বালানিব্যবস্থাই লক্ষ্য।’রাশিয়ার এই হামলার ফলে তীব্র শীতে ইউক্রেনের ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়েছে। পুতিন এর আগে ইউক্রেনের মিত্রদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।

কারণ তারা ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত করার জন্য পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তিনি তখনই পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি দেন।

পুতিন বলেছেন, ‘আমরা একটি ব্যাপক হামলা চালিয়েছি।’ কাজাখস্তানে সফররত অবস্থায় মিত্রদের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি এ কথা বলেন, যা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘এই আক্রমণ আমাদের ভূখণ্ডে (মার্কিন) এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে অব্যাহত হামলার প্রতিক্রিয়া।’

রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, রাশিয়া ৯০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে এবং ১৭টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। সাধারণত তিনি এমন বিশদ তথ্য প্রকাশ করেন না।

এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, রাশিয়া জানে ইউক্রেনকে কতগুলো দূরপাল্লার অস্ত্র দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো কোথায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাশিয়া গত সপ্তাহে ইউক্রেনের ওপর নতুন ওরেশনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষার জন্য ‘বাধ্য হয়েছে’, যা কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলোকে বিস্মিত করেছে।

পাশাপাশি তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ভবিষ্যতেও এমন আরো ‘পরীক্ষামূলক’ হামলা চালানো হতে পারে।

ভ্লাদিমির পুতিন জানান, রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে হামলার লক্ষ্যবস্তু বেছে নিচ্ছে, যার মধ্যে কিয়েভের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রগুলো’ রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সংঘাতের সময় মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের ‘গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ভবনগুলোতে’ ইউক্রেন হামলার চেষ্টা চালিয়েছে।

পুতিন ওরেশনিক মিসাইল সম্পর্কে বলেন, এটি যেকোনো লক্ষ্যবস্তুকে ‘ধ্বংসস্তূপে’ পরিণত করতে পারে। তিনি দাবি করেন, একসঙ্গে চালানো কয়েকটি ওরেশনিক হামলা ‘পারমাণবিক আঘাতের সমান প্রভাব’ ফেলতে পারে। তার আরো দাবি, ওরেশনিক মিসাইল প্রায় ‘প্রতি সেকেন্ডে তিন কিলোমিটার’ গতিতে চলতে পারে এবং এর আঘাতকারী উপাদানগুলো এমন তাপ উৎপন্ন করে, যা ‘সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার মতো’।

রুশ প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, ‘যদি পশ্চিমা সরবরাহকৃত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আরো হামলা চালানো হয়, আমরা জবাব দেব। এর মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ওরেশনিকের আরো পরীক্ষার সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলার কারণ জানালেন পুতিন

আপডেট টাইম : ১২:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ওপর চালানো ব্যাপক বিমান হামলা ছিল পশ্চিমাদের সরবরাহকৃত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রুশ ভূখণ্ডে কিয়েভের হামলার ‘প্রতিক্রিয়া’।

বৃহস্পতিবারের হামলার ফলে ইউক্রেনের ওডেসা, খারকিভ, লুটস্কসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভও হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। কিন্তু ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলছে রাজধানী লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা সব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।

কিয়েভের সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে হামলা চলে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘আমাদের জ্বালানিব্যবস্থাই লক্ষ্য।’রাশিয়ার এই হামলার ফলে তীব্র শীতে ইউক্রেনের ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়েছে। পুতিন এর আগে ইউক্রেনের মিত্রদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।

কারণ তারা ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত করার জন্য পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তিনি তখনই পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি দেন।

পুতিন বলেছেন, ‘আমরা একটি ব্যাপক হামলা চালিয়েছি।’ কাজাখস্তানে সফররত অবস্থায় মিত্রদের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি এ কথা বলেন, যা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘এই আক্রমণ আমাদের ভূখণ্ডে (মার্কিন) এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে অব্যাহত হামলার প্রতিক্রিয়া।’

রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, রাশিয়া ৯০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে এবং ১৭টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। সাধারণত তিনি এমন বিশদ তথ্য প্রকাশ করেন না।

এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, রাশিয়া জানে ইউক্রেনকে কতগুলো দূরপাল্লার অস্ত্র দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো কোথায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাশিয়া গত সপ্তাহে ইউক্রেনের ওপর নতুন ওরেশনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষার জন্য ‘বাধ্য হয়েছে’, যা কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলোকে বিস্মিত করেছে।

পাশাপাশি তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ভবিষ্যতেও এমন আরো ‘পরীক্ষামূলক’ হামলা চালানো হতে পারে।

ভ্লাদিমির পুতিন জানান, রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে হামলার লক্ষ্যবস্তু বেছে নিচ্ছে, যার মধ্যে কিয়েভের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রগুলো’ রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সংঘাতের সময় মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের ‘গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ভবনগুলোতে’ ইউক্রেন হামলার চেষ্টা চালিয়েছে।

পুতিন ওরেশনিক মিসাইল সম্পর্কে বলেন, এটি যেকোনো লক্ষ্যবস্তুকে ‘ধ্বংসস্তূপে’ পরিণত করতে পারে। তিনি দাবি করেন, একসঙ্গে চালানো কয়েকটি ওরেশনিক হামলা ‘পারমাণবিক আঘাতের সমান প্রভাব’ ফেলতে পারে। তার আরো দাবি, ওরেশনিক মিসাইল প্রায় ‘প্রতি সেকেন্ডে তিন কিলোমিটার’ গতিতে চলতে পারে এবং এর আঘাতকারী উপাদানগুলো এমন তাপ উৎপন্ন করে, যা ‘সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার মতো’।

রুশ প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, ‘যদি পশ্চিমা সরবরাহকৃত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আরো হামলা চালানো হয়, আমরা জবাব দেব। এর মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ওরেশনিকের আরো পরীক্ষার সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত।’