ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল যন্ত্র সহজলভ্য করার মধ্যদিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি আরও দৃঢ় করার কোনো বিকল্প নেই।
ডিজিটাল বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত্তির উপরেই ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়িত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন এবং উৎপাদিত যন্ত্র প্রমোট ও বাজারজাত করতে নীতি নির্ধারক ও ট্রেডবডিসহ ডিজিটাল পণ্য উৎপাদন, বিক্রয় ও সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ আইডিবি ভবনে ‘সিটি আইটি ফেয়ার-২০২২’ শিরোনামে কম্পিউটার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বাংলাদেশে কম্পিউটার প্রযুক্তির বিকাশের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৯৮৭ সালে কম্পিউটারে বাংলা প্রবর্তনের ধারাবাহিকতায় প্রথমে পত্রিকা অফিসে কম্পিউটার ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে বাংলা প্রকাশনার জায়গাটি সীসার হরফের পরিবর্তে কম্পিউারের দখলে চলে আসে।
এ দেশের রাজনীতিবীদদের মধ্যে প্রথম কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিননার নাম উল্লেখ করেন কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের পর শেখ হাসিনা নিজ হাতে কম্পিউটারে বাংলা টাইপ করে প্রেসরিলিজসহ দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। কম্পিউটার সাধারণের নাগালে পৌঁঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করে কম্পিউটার বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বার কম্পিউটার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ট্রেডবডির ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরিতে কম্পিউটার মেলার আয়োজনসহ মানুষের দোরগোড়ায় গিয়েছি। কম্পিউটার সহজলভ্য করতে নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় ট্রেডবডির সময়োপযোগী ভূমিকার ফলশ্রুতিতে দেশে কম্পিউটার বিপ্লব ত্বরান্বিত হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, মানুষের পরিবর্তিত চাহিদার প্রয়োজনে নতুন নতুন ডিভাইসের চাহিদা মেটাতে বিক্রয় ও সেবার বিষয়টি নতুন করে এখন ভাবতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে মোবাইল সেটের একটি বড় বাজার তৈরি হয়েছে। গ্রাহকরা যাতে কম্পিউটার সিটিতে মোবাইলসেট কিনতে পারে সে ব্যবস্থা প্রবর্তনের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন বিসিএস ও বেসিস’র সাবেক এই সভাপতি।
তিনি বিসিএস কম্পিউটার সিটিকে দেশের কম্পিউটার বাজারজাত ও জনগণকে কম্পিউটার বিষষে ব্যাপক সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী কম্পিউটার বিপননকেন্দ্র হিসেবে অভিহিত করেন।
মন্ত্রী বলেন, বিসিএস কম্পিউটার সিটির ২৩ বছরের পথচলার ইতিহাসে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে অনেক চড়াই উৎরাই পাড়ি দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, সামনের দিনে মানুষ আইওটি ডিভাইস কিংবা রোবট খুঁজবে কম্পিউটারের দোকানে। মন্ত্রী সে বিষয়টি খেয়াল রেখে তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সাজাতে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যোদ্ধা হিসেবে বিসিএস কম্পিউটার সিটি’র সংশ্লিষ্ট নেত্ববৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করে যাওয়ারও আহ্বান জানান।
বিসিএস কম্পিউটার সিটির সভাপতি এ এল মজহার ইমাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে এসোসিও এওয়ার্ড কমিটির সম্মানীয় আজীবন চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ এইচ কাফি, বিসিএস’র সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার, গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক জসীম উদ্দিন খোন্দকার প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ১০ দিনের কম্পিউটার মেলা। ‘সিটি আইটি মেগা ফেয়ার-২০২২’ নামের এই মেলা আগামী ৭ জানুয়ারি-২০২৩ পর্যন্ত চলবে। পরে মন্ত্রী ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন।