বিশ্বের প্রথম ২৪০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত স্মার্টফোন আনছে রিয়েলমি। রিয়েলমি জানিয়েছে ফাস্ট চার্জিংয়ের এই ব্যবস্থাটি থাকবে তাদের নতুন স্মার্টফোন ‘জিটি নিও ফাইভ’ এ। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি চীনের স্থানীয় সময় বেলা ২টায় স্মার্টফোনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে রিয়েলমি।
যদিও স্মার্টফোনটির বিষয়ে অফিসিয়াল তথ্য খুব একটা জানা যায়নি। তবে প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষকদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে এই স্মার্টফোনটিতে প্রসেসর হিসাবে ব্যবহার করা হবে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগনের সর্বাধুনিক চার মিলিমিটার প্ল্যাটফরমের এইট প্লাস জেন ওয়ান চিপসেট। আট কোরের এই প্রসেসরটির কার্যক্ষমতা ৩.১৯ গিগাহার্জ। গ্রাফিক্স কার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হবে অ্যাড্রিনো ৭৩০। এর আগে গেল বছরের জুলাই মাসে বাজারে আসা জিটি টু স্মার্টফোনেও একই প্রসেসর ব্যবহার করেছিল রিয়েলমি। নতুন বছরের প্রথম স্মার্টফোনে নতুন কোনো প্রসেসর ব্যবহার না করার বিষয়ে কিছু জানায়নি রিয়েলমি। ধারণা করা হচ্ছে খরচ কমাতেই রিয়েলমির এমন পদক্ষেপ। ফোনটি চলবে অ্যান্ড্রোয়েড থারটিন অপারেটিং সিস্টেমে আর ইউজার ইন্টারফেস বা ইউআই থাকছে রিয়েলমি ইউআই ফোর।
অবশ্য প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন এই স্মার্টফোনটির আরেকটি মডেল বাজারে ছাড়বে রিয়েলমি। যেটায় প্রসেসর হিসাবে ব্যবহার করা হবে মিডিয়াটেকের সর্বাধুনিক চার মিলিমিটার প্ল্যাটফরমের ডাইমেনসিটি ৮২০০ চিপসেট। আট কোরের এই প্রসেসরটির কার্যক্ষমতা ৩.১ গিগাহার্জ। গ্রাফিক্স কার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হবে মালি জি ৬১০ এমসি সিক্স (G610 MC6)। এই প্রসেসরটি অবশ্য প্রথম কোনো স্মার্টফোনে ব্যবহার করছে রিয়েলমি। তবে এই স্মার্টফোনে ১৫০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সুবিধা থাকবে।
দুটো ফোনের স্টোরেজে ব্যবহার করা হয়েছে ইউএফএস ফোর টেকনলজি। দুটো ফোনেই সহায়ক হিসাবে থাকছে ৮ থেকে ১৬ গিগাবাইট পর্যন্ত র্যাম। আরও থাকছে ১২৮ গিগাবাইট থেকে ১ টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ সুবিধা। তবে স্মার্টফোন দুটো কয়টি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাবে তা জানা যায়নি।
দুটো ফোনে একই ডিসপ্লে মডিউল ব্যবহার করা হবে। ডিসপ্লে হিসাবে দেওয়া হবে ১ বিলিয়ন কালার সাপোর্টেড ৬.৭৪ ইঞ্চির অ্যামোলেড মনিটর। ডিসপ্লের রেজুলেশন ১২৪০বাই২৭৭২ (টু কে)। ডিসপ্লে অপারেট করা যাবে ১৪৪ হার্জ রিফ্রেশ রেটে। ডিসপ্লের সুরক্ষায় স্ক্রিন হিসাবে কি গ্লাস ব্যবহার করা হবে তা জানা যায়নি। তবে এক্ষেত্রে কর্নিং গরিলা গ্লাসের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক সংস্করণ গরিলা গ্লাস ভিক্টাস ব্যবহার করার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুটো ফোনের পিছনের ক্যামেরা প্যানেলে থাকবে ৩টি ক্যামেরা এবং একই ক্যামেরা সেটাপ। প্রাইমারি ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হবে ১.৯ অ্যাপারচারের ৫০ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ২৪ মিলিমিটার ওয়াইড। প্রাইমারি ক্যামেরার সেন্সর হিসেবে ব্যবহার করা হবে সনির সর্বাধুনিক সেন্সর আইএমএক্স ৮৯০। সেকেন্ডারি ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হবে ২.৩ অ্যাপারচারের ৮ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ১৫ মিলিমিটার ও ১২০ ডিগ্রি আল্ট্রাওয়াইড। তৃতীয় ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হবে ২.৪ অ্যাপারচারের ২ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ম্যাক্রো। সেলফি ক্যামেরা হিসাবে থাকবে ২.৫ অ্যাপারচারের ১৬ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর।
বরাবরের মত দুটো ফোনেই সাউন্ড সিস্টেম হিসাবে থাকবে স্টেরিও স্পিকার তবে থাকছেনা ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক ও আলাদা মেমোরি কার্ড স্লট। ফোনের ফ্রেম ও ওজন সম্পর্কে জানা যায়নি।
দুটো স্মার্টফোনে পার্থক্য থাকছে ব্যাটারিতে। ২৪০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধার স্মার্টফোনে থাকবে ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলি ব্যাটারি আর ১৫০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধার স্মার্টফোনে থাকবে ৪৬০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলি ব্যাটারি। ফোনের সুরক্ষায় দেওয়া হবে আন্ডার ডিসপ্লে অপটিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার।
যা-ই হোক, এ বিষয়ে যা জানা গেছে তার কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। ফোনটির মূল্যসহ সকল তথ্য নিশ্চিতভাবে জানতে হলে রিয়েলমির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ততদিন অপেক্ষার পালা। ফোনটি কবে বাংলাদেশে আসবে তা জানা যাবে রিয়েলমি বাংলাদেশের ঘোষণার পর।