ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ সময় রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে যা করবেন

close up of insomniac unable to sleep in bed

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ঋতু পরিবর্তনের এ সময় হঠাৎ করেই রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ছোট-বড় সবারই এ সমস্যাটি হতে পারে। হঠাৎ ঠান্ডা আবার গরমে গা ঘেমে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।

আবার অনেক ক্ষেত্রে রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার ঘটনা দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণও হতে পারে। যদি নিয়মিত রাতে ঘুম ভেঙে যায়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই সমস্যাটি ঠিক কোথায় ঘটছে সে বিষয়ে জানতে হবে।

jagonews24

রাতে ভালো ঘুম না হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে শোয়ারঘরের পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, বেশি ক্যাফেইন পান করার কারণে এ সমস্যা বাড়তে পারে।

আবার দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ যেমন- থাইরয়েড, হৃদরোগ, লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলে, রাতের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এ সময় শরীরে বেশ অস্বস্তিভাবও হয়। জেনে নিন রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারণ ও প্রতীকার-

সাধারণ যেসব কারণে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে

jagonews24

>> ঘুমের প্রথম স্তরটি হলো মৃদু ঘুম, যেখানে ঘুম পাতলা হয় এবং সহজেই ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এমতাবস্থায় ঘর বেশি গরম বা ঠান্ডা হলে, কোনো শব্দ হলে কিংবা অজানা উৎস থেকে আলো এলেই ঘুম ভেঙে যেতে পারে। রাতে নির্ভেজাল ঘুম পেতে ঘর হওয়া চাই আরামদায়ক মাত্রায় ঠান্ডা, নীরব এবং অন্ধকার।

>> মানসিক অস্বস্তি থাকলে দুঃস্বপ্ন, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ায় ঘুম ভাঙতে পারে। অনেকেই আবার ঘুমের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন।

>> শরীরের থাইরয়েড গ্রন্থি প্রয়োজনের বেশি সক্রিয় হলে তা তৈরি করবে অতিরিক্ত ‘থাইরক্সিন’ হরমোন। ঘুমের সমস্যাসহ হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, অস্বস্তি, আতঙ্ক ইত্যাদি সাধারণ কিছু ঘটনা, যা অতিরিক্ত ‘থাইরক্সিন’য়ের ফলাফল।

jagonews24

>> ‘রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম’ নামক সমস্যায় পায়ে টান অনুভূতি হয়। রাতে ঘুমের মাঝে এ সমস্যা আক্রমণ করতে পারে। শরীরে আয়রনের অভাবে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

>> ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা অনিদ্রা একটি অতি সাধারণ সমস্যা বর্তমান সময়ে, যাতে সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হতে পারেন।

যেসব রোগের কারণে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে-

>> রাত ১১-১টার মধ্যে যদি ঘুম ভাঙে; তাহলে গলব্লাডারের সমস্যা থাকতে পারে। সাধারণত মানসিকভাবে হতাশ হলে এভাবে ঘুম ভেঙে যায়।

>> রাত ১-৩টার মধ্যে ঘুম ভাঙা মানে লিভারের অসুখে ভোগা। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠান্ডা পানি খাবেন।

>> রাত ৩-৫টার মধ্যে আচমকা ঘুম ভেঙে যাওয়া বেশ খারাপ লক্ষণ। এটি ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর।

>> ভোর ৫-৭টায় ঘুম ভাঙার অর্থ আপনার মনে অনেক দ্বিধা রয়েছে। এসময় ঘুম ভাঙলে আর বিছানায় না থেকে বরং উঠে শরীরচর্চা করুন।

jagonews24

এবার জেনে নিন রাতে ভালো ঘুম হওয়ার জন্য করণীয়-

>> রাতে ঘুমের সমস্যা হলে ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগেই রাতের খাবার সেরে ফেলুন।

>> ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে থেকেই ক্যাফেইন আছে এমন কোনো পানীয় পান করবেন না।

>> অনেকেই খালি পেটে ঘুমাতে পারেন না। তবে একেবারে ভরপেট খেয়ে বিছানায় গেলেও ঘুমের অসুবিধা হতে পারে।

>> টেলিভিশন বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকাবেন না।

>> শরীর ও মনকে শিথিল করুন। এ জন্য গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস বা ধ্যানের অভ্যাস করতে পারেন।

>> ঘরের পরিবেশ অন্ধকার, অতিরিক্ত গরম নয়, জিনিসপত্রে ঠাসা নয়, যন্ত্রপাতি নেই এমন স্থান বেছে নিন।

>> ঘুমানোর আগে দেহ ও মনকে চাপমুক্ত করুন। এজন্য হালকা গরম পানিতে গোসল, মেডিটেশন বা ধ্যান করা, জীবনসঙ্গীর সাথে কথা বলা, ডায়েরি লেখা, বই পড়া বা আলো কমিয়ে দিয়ে গান শুনতে পারেন।

>> অ্যালকোহল বা মদ্যপানের মাধ্যমে অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েন। সে ঘুম গভীর হবে না। যাকে বলে ‘র্যাপিড আই মুভমেন্ট’ বা ‘আরইএম স্লিপ’।

>> দিনে যথেষ্ট শরীরচর্চা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিছানায় যাওয়ার আগের ৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে শরীরে এ্যাড্রিনালিন নি:সৃত হয়ে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

এ সময় রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে যা করবেন

আপডেট টাইম : ০৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ঋতু পরিবর্তনের এ সময় হঠাৎ করেই রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ছোট-বড় সবারই এ সমস্যাটি হতে পারে। হঠাৎ ঠান্ডা আবার গরমে গা ঘেমে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।

আবার অনেক ক্ষেত্রে রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার ঘটনা দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণও হতে পারে। যদি নিয়মিত রাতে ঘুম ভেঙে যায়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই সমস্যাটি ঠিক কোথায় ঘটছে সে বিষয়ে জানতে হবে।

jagonews24

রাতে ভালো ঘুম না হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে শোয়ারঘরের পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, বেশি ক্যাফেইন পান করার কারণে এ সমস্যা বাড়তে পারে।

আবার দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ যেমন- থাইরয়েড, হৃদরোগ, লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলে, রাতের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এ সময় শরীরে বেশ অস্বস্তিভাবও হয়। জেনে নিন রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারণ ও প্রতীকার-

সাধারণ যেসব কারণে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে

jagonews24

>> ঘুমের প্রথম স্তরটি হলো মৃদু ঘুম, যেখানে ঘুম পাতলা হয় এবং সহজেই ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এমতাবস্থায় ঘর বেশি গরম বা ঠান্ডা হলে, কোনো শব্দ হলে কিংবা অজানা উৎস থেকে আলো এলেই ঘুম ভেঙে যেতে পারে। রাতে নির্ভেজাল ঘুম পেতে ঘর হওয়া চাই আরামদায়ক মাত্রায় ঠান্ডা, নীরব এবং অন্ধকার।

>> মানসিক অস্বস্তি থাকলে দুঃস্বপ্ন, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ায় ঘুম ভাঙতে পারে। অনেকেই আবার ঘুমের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন।

>> শরীরের থাইরয়েড গ্রন্থি প্রয়োজনের বেশি সক্রিয় হলে তা তৈরি করবে অতিরিক্ত ‘থাইরক্সিন’ হরমোন। ঘুমের সমস্যাসহ হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, অস্বস্তি, আতঙ্ক ইত্যাদি সাধারণ কিছু ঘটনা, যা অতিরিক্ত ‘থাইরক্সিন’য়ের ফলাফল।

jagonews24

>> ‘রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম’ নামক সমস্যায় পায়ে টান অনুভূতি হয়। রাতে ঘুমের মাঝে এ সমস্যা আক্রমণ করতে পারে। শরীরে আয়রনের অভাবে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

>> ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা অনিদ্রা একটি অতি সাধারণ সমস্যা বর্তমান সময়ে, যাতে সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হতে পারেন।

যেসব রোগের কারণে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে-

>> রাত ১১-১টার মধ্যে যদি ঘুম ভাঙে; তাহলে গলব্লাডারের সমস্যা থাকতে পারে। সাধারণত মানসিকভাবে হতাশ হলে এভাবে ঘুম ভেঙে যায়।

>> রাত ১-৩টার মধ্যে ঘুম ভাঙা মানে লিভারের অসুখে ভোগা। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠান্ডা পানি খাবেন।

>> রাত ৩-৫টার মধ্যে আচমকা ঘুম ভেঙে যাওয়া বেশ খারাপ লক্ষণ। এটি ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর।

>> ভোর ৫-৭টায় ঘুম ভাঙার অর্থ আপনার মনে অনেক দ্বিধা রয়েছে। এসময় ঘুম ভাঙলে আর বিছানায় না থেকে বরং উঠে শরীরচর্চা করুন।

jagonews24

এবার জেনে নিন রাতে ভালো ঘুম হওয়ার জন্য করণীয়-

>> রাতে ঘুমের সমস্যা হলে ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগেই রাতের খাবার সেরে ফেলুন।

>> ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে থেকেই ক্যাফেইন আছে এমন কোনো পানীয় পান করবেন না।

>> অনেকেই খালি পেটে ঘুমাতে পারেন না। তবে একেবারে ভরপেট খেয়ে বিছানায় গেলেও ঘুমের অসুবিধা হতে পারে।

>> টেলিভিশন বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকাবেন না।

>> শরীর ও মনকে শিথিল করুন। এ জন্য গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস বা ধ্যানের অভ্যাস করতে পারেন।

>> ঘরের পরিবেশ অন্ধকার, অতিরিক্ত গরম নয়, জিনিসপত্রে ঠাসা নয়, যন্ত্রপাতি নেই এমন স্থান বেছে নিন।

>> ঘুমানোর আগে দেহ ও মনকে চাপমুক্ত করুন। এজন্য হালকা গরম পানিতে গোসল, মেডিটেশন বা ধ্যান করা, জীবনসঙ্গীর সাথে কথা বলা, ডায়েরি লেখা, বই পড়া বা আলো কমিয়ে দিয়ে গান শুনতে পারেন।

>> অ্যালকোহল বা মদ্যপানের মাধ্যমে অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েন। সে ঘুম গভীর হবে না। যাকে বলে ‘র্যাপিড আই মুভমেন্ট’ বা ‘আরইএম স্লিপ’।

>> দিনে যথেষ্ট শরীরচর্চা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিছানায় যাওয়ার আগের ৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে শরীরে এ্যাড্রিনালিন নি:সৃত হয়ে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে।