বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এই কিছুদিন আগেও, বাদাম খাওয়ার ব্যাপারটিকে অবহেলা করা হতো।
বাদামে থাকা উচ্চমাত্রার ফ্যাটের জন্য এই খাদ্য উপাদানকে এড়িয়ে যেতেন অনেকেই। তবে ঘটনার প্রেক্ষাপট এখন অনেকটাই ভিন্ন। সময়ের সাথে সাথে মানুষ নানান ধরণের বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারছে, সবার মাঝে তৈরি হচ্ছে সচেতনতা। হৃদযন্ত্র, ডায়বেটিস ও বাড়তি ওজন কমাতে সহায়ক প্রাকৃতিক বাদাম এখন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের প্রতিদিনে খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে খুব সহজেই।
সত্যিই কি বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?
সুখ্যাতি সম্পন্ন একটি জার্নালে প্রকাশিত হওয়া সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বিভিন্ন ধরণের বাদাম সম্পর্কে খুব চমৎকার তথ্য প্রকাশ করেছে। এই গবেষণার তথ্য সুপারিশ করে- শুধু হৃদযন্ত্রের সুস্থতা ও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেই নয়, ওজন কমাতেও বাদাম কার্যকর। বাদামে থাকে বিভিন্ন ধরণের ফাইটোকেমিক্যাল সমূহ ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই ফ্যাট হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়াও এতে থাকে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-ই, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, কপার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমূহ।
কীভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে বাদাম?
খেয়াল করে দেখেছেন কি, পেট ভরা থাকলে পছন্দের খাবার সামনে থাকলেও খেতে ইচ্ছা করে না! ঠিক এই কাজটাই করে বাদাম। স্বল্প পরিমাণ বাদাম খুব দ্রুত পেট ভরতে সাহায্য করে। কারণ এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আঁশ। ফলাফল, ক্ষিদে ভাব দেখা দেয় না লম্বা সময়। এতে করে হাবিজাবি খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যায় অনেকখানি। এতে খুব সহজেই ওজনকে নিয়ন্ত্রনের মাপকাঠিতে বেঁধে রাখা সম্ভব হয়।
দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন জানায়, যারা নিজেদের ডায়েট চার্টে বাদাম রেখেছেন, তারা তুলনামূলকভাবে অন্যান্যদের চাইতে দীর্ঘ দিন পর্যন্ত ডায়েট মেনে চলতে সক্ষম হন।
এছাড়াও বাদাম লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্য উপাদান বলে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর অর্থ হলো, বাদাম খুব ধীরে পরিপাক হয় এবং বাদামে থাকা চিনি রক্তে খুব ধীরে মেশে। যে কারণে লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাবার শরীরে লম্বা সময়ের জন্য এনার্জির যোগান দেয়।
এক্ষেত্রে আরো জেনে রাখুন- বাদাম যেখানে লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্য উপাদান, ভাত হলো সর্বোচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্য উপাদান!
অবশ্যই বাদামেও ক্যালরি আছে। তবে এই ক্যালরি স্বাস্থ্যকর। এক আউন্স পরিমাণ বাদামে থাকে ১৬০-২০০ ক্যালরি। মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যকর হলেও কোন কিছুই বেশি খাওয়া উচিৎ নয়। নইলে ওজন কমার বদলে বেড়ে যাবার সম্ভবনা থাকবে।
বাদাম খাওয়া নিয়ে কী বলেন পুষ্টিবিদ?
আগের কথার সুত্রতা ধরেই বলা যায়, বাদাম খাওয়ার ব্যাপারে কিছু সাধারণ পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। স্বাস্থ্যকর এই খাদ্য উপাদানটি খাওয়ার ব্যাপারে কী পরামর্শ দিয়েছেন জেনে নিন।
১. অন্যান্য খাবার যেমন ফল কিংবা সালাদের সাথে বাদাম খাওয়া বেশি ভালো।
২. একেবারে খুব বেশি নয়, ৬-৭টি বাদাম খেতে হবে।
৩. নানান ধরণের বাদামের ভেতর ওয়ালনাট, কাজুবাদাম, ক্যাশুনাট, পেস্তা বাদাম বেশি উপকারী।
৪. ক্যানড ও ফ্লেভার্ড বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে বাড়তি চিনি ও লবণ থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।